বাইরে বাঘ, ভারতে কুপোকাত!

বলা হয় একজন ক্রিকেটারের যাবতীয় ক্রিকেটিং স্কিল পরীক্ষা করার জন্য টেস্ট ক্রিকেটই সবচেয়ে উপযোগী। এজন্যই এর নাম ‘টেস্ট’। লাল বলের এই ক্রিকেট একজন ক্রিকেটারকে নিয়ে যায় ওই দূর পাহাড়ের শিখড়ে। যাদের ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না। শুধু নিচ থেকে মাথা নত করে সম্মান জানাতে হয়। ক্রিকেটের কিংবদন্তি এই ক্রিকেটারদেরও বিভিন্ন কন্ডিশনে মাথা নত করতে হয়েছে।

টেস্ট ক্রিকেটকে বলা হয় অভিজাত্যের খেলা। আপনি হয়তো হাজার বার এই কথাটা শুনেছেন তবে টেস্ট ক্রিকেটে লিখতে হলে অভিজাত্য, ঐতিহ্য, পরীক্ষা এই শব্দগুলো আসবেই। ক্রিকেটারদের সত্যিকারের পরীক্ষা হয় ক্রিকেটের প্রাচীনতম এই ফরম্যাটেই।

বলা হয় একজন ক্রিকেটারের যাবতীয় ক্রিকেটিং স্কিল পরীক্ষা করার জন্য টেস্ট ক্রিকেটই সবচেয়ে উপযোগী। এজন্যই এর নাম ‘টেস্ট’। লাল বলের এই ক্রিকেট একজন ক্রিকেটারকে নিয়ে যায় ওই দূর পাহাড়ের শিখড়ে। যাদের ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না। শুধু নিচ থেকে মাথা নত করে সম্মান জানাতে হয়। ক্রিকেটের কিংবদন্তি এই ক্রিকেটারদেরও বিভিন্ন কন্ডিশনে মাথা নত করতে হয়েছে। আজ আমরা এমন পাঁচজন কিংবদন্তি ক্রিকেটারের গল্প বলবো যারা ভারতে এসে পড়েছিলেন সত্যিকারের পরীক্ষায়।

  • ডেসমন্ড হেইন্স (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

ওয়েস্ট ইন্ডিজের এর এই কিংবদন্তি ওপেনার অসাধারণ ব্যাটিং করতেন পেস বোলিং এর বিপক্ষে। তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে মোট ১১৬ টি টেস্ট খেলেছেন। সেখানে প্রায় ৪২ গড়ে তার সংগ্রহ ৭৪৮৭ রান। তবে ভারতে ধীরগতির স্পিনিং ট্র‍্যাক ভালো পরীক্ষা নিয়েছেল এই কিংবদন্তি ওপেনারের।

ভারতে তিনি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন ১০ টি। সেখানে ১৮ ইনিংস ব্যাট করে তার সংগ্রহ সর্বসাকুল্যে ৩৭৭ রান। ভারতের মাটিতে তার ব্যাটিং গড় মাত্র ২২.১৭। ভারতের মাটিতে এক ইনিংসে তার সর্বোচ্চ স্কোর ৫৮ রান। যা ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ব্যাটসম্যানের নামের পাশে মোটেই মানানসই না।

  • অরবিন্দ ডি সিলভা (শ্রীলঙ্কা)

এই নামটা শুনে হয়তো আপনারা অনেকেই ভ্রু কুচকাতে পারেন। কেননা শ্রীলংকার ব্যাটসম্যানদের সাধারণত ভারতেই স্লো পিচে খুব বেশি পরীক্ষা দিতে হয় না। তাছাড়া ভারতের বিপক্ষে বেশ বিখ্যাত কিছু ইনিংস ও আছে এই ব্যাটসম্যানের।

কিন্তু, আলোচনা যখন টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে তখন ডি সিলভাকেও দিতে হয়েছিল কঠিন পরীক্ষা। ভারতের মাটিতে তিনি টেস্ট খেলেছিলেন মোট ১০ টি। ১৭ ইনিংসে মাত্র ২৫ গড়ে করেছিলেন মোট ৪০৩ রান। অথচ শ্রীলংকার হয়ে খেলা ৯৩ টেস্টে তার ব্যাটিং গড় প্রায় ৪৩। সবমিলিয়ে তার ঝুলিতে আছে ৬৩৬১ রান।

  • মুত্তিয়া মুরালিধরণ (শ্রীলঙ্কা)

শুরুতে বলছিলাম পাহাড়ের চুড়ার কথা। মুলরিধরণ টেস্ট ক্রিকেটে সেই সর্বোচ্চ পাহাড়ের চূড়া। লাল বলের ক্রিকেটে তার ঝুলিতে পুড়েছেন ৮০০ উইকেট। পুরো ক্রিকেট দুনিয়ায় একমাত্র, সে এক বিস্ময়! তবে আকাশছোঁয়া স্পিনারকেও টেনে ধরেছিল ভারতের মাটি। পরীক্ষা নিয়েছে কঠিনতম।

ভারতের মাটিতে মোট ১১ টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন মুলারিধরণ। সেখানে ৪৫ বোলিং গড়ে নিয়েছেন সবে ৪০ উইকেট। স্পিনিং উইকেটেও ভারতের মাটিতে এই পারফরমেন্স আর যাইহোক মুলরির নামের সাথে বড্ড বেমানান।

  • শেন ওয়ার্ন (অস্ট্রেলিয়া)

ক্রিকেট দুনিয়ায় এক বিস্ময় তিনি। ক্রিকেট না বুঝলেও আপনি রায় দিয়ে দিতে পারবেন। বিশ্বক্রিকেটের সর্বকালের সেরা লেগ স্পিনার তিনি। বিশ্বের যেকোনো উইকেটে,যেকোনো ব্যাটসম্যান তার ঘূর্নিতে টালমাটাল হয়ে পড়তো। তবে ভারতের ব্যাটসম্যানরা সর্বোচ্চ পরীক্ষা নিয়েছেন এই অজি লেগির।

আজহারউদ্দীন, শচীন, রাহুল দ্রাবিড়রাই বোধহয় শেন ওয়ার্নকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছেন। অন্তত পরিসংখ্যান তো তাই বলে। ভারতে মোট ৯ টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন শেন ওয়ার্ন। সেখানে তার বোলিং গড় ৪৩.১১। অথচ তার ক্যারিয়ার গড় মাত্র ২৫.৪১। ভারতে ৯ ম্যাচে নিয়েছিলেন মোট ৩৪ টি উইকেট।

  • রিকি পন্টিং (অস্ট্রেলিয়া)

অজি এই ব্যাটসম্যানকে ভারতের পিচ যতটা না পরীক্ষা নিয়েছে তারচেয়ে বেশি পরীক্ষা নিয়েছিলেন হরভজন সিং। ভারতের মাটিতে তারা দুইজন মুখোমুখি হয়েছিলেন মোট ১৪ বার। তারমধ্যে ১০ বারই হরভজন সিং এর বলে আউট হয়েছিলেন রিকি পন্টিং।

২০১৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি এখনো হরভজনকে নিয়ে দু:স্বপ্ন দেখি।’ অথচ তিনিই ১৬৮ টি টেস্টে ৫১ গড়ে করেছেন ১৩ হাজারেরও অধিক রান। ভারতে তিনি টেস্ট খেলেছেন ১৪ টি। সেখানে তিনি মাত্র ২৬ গড়ে করেছেন ৬৬২ রান।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...