ইউনাইটেডে বিবর্ণ আর্জেন্টাইনরা

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলেছেন অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া, হুয়ান সেবাস্তিয়ান ভেরনদের মতো বিশ্বখ্যাত ফুটবলার। এখন খেলছেন মার্কো রোহো এবং সার্জিও রোমেরো। যারা কিনা আর্জেন্টাইন দলের নিয়মিত মুখ।  কিন্তু ম্যান ইউয়ের হয়ে তাঁরা কি নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পেরেছেন?

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলেছেন অনেক বড় তারকা। অনেক খেলোয়াড় ইউনাইটেডে এসে তারকা বনে গিয়েছেন। কিন্তু আর্জেন্টাইনরা কখনোই সফল হতে পারেননি ইউনাইটেডে।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলেছেন অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া, হুয়ান সেবাস্তিয়ান ভেরনদের মতো বিশ্বখ্যাত ফুটবলার। এখন খেলছেন মার্কো রোহো এবং সার্জিও রোমেরো। যারা কিনা আর্জেন্টাইন দলের নিয়মিত মুখ।  কিন্তু ম্যান ইউয়ের হয়ে তাঁরা কি নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পেরেছেন?

শুরু করা যাক হুয়ান সেবাস্তিয়ান ভেরনকে নিয়ে। ইতালি সিরি ‘এ’-তে সাফল্য পাওয়ার পর ২০০০-০১ মৌসুমে তাকে নিয়ে আসেন স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন।  তখনকার সময়ে রেকর্ড ইংলিশ ফুটবল ট্রান্সফার ফি ২৮.১ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে আসেন ভেরন। কিন্তু ৫১ ম্যাচে মাত্র ৭ গোল করলেন তিনি ক্লাবের হয়ে। স্বাচ্ছন্দ্য পেলেন না ভেরন। কারণ  ততদিনে ইউনাইটেডের আছে বেকহাম, স্কোলস, গিগস এবং রয় কিনের মত মতো মিডফিল্ডাররা।

সবচেয়ে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো রয় কিন। তার খেলার ধরণ আর ভেরনের খেলার ধরণটা ছিল প্রায় একই রকম। ইংলিশ রয় কিন রয়ে গেলেন, বাদ পরলেন রেকর্ড ফিতে আসা আর্জেন্টাইন ভেরন।

তেভেজের বিষয়টা একটু আলাদা। তাকে কিনতে  ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড খরচ করেনি কাড়িকাড়ি টাকা। তাকে ওয়েস্ট হাম ইউনাইটেড  থেকে দুই বছরের জন্য লোনে নিয়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। স্যার  ফার্গুসন বলেছিলেন, ‘সে আমাকে ১৫ টি গোল দিতে পারবে অথবা তার থেকেও বেশি। আর সেগুলো হবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

যেমন কথা তেমন কাজ। ২ মৌসুমে ৬৩ ম্যাচ খেলে গোল করলেন ১৯টি।

কিন্তু হঠাৎই হাওয়া বদল। তেভেজকে লোন শেষে সাইন করাতে চাইল  ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। কিন্তু ততদিনে তার স্বপ্ন অন্য কোথাও।  গুজব রটালো তিনি নাকি যোগ দেবেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রতিদ্বন্দ্বী লিভারপুলে। কিন্তু পরে যোগ দিলেন ম্যানচেস্টার সিটিতে।

এবার আসা যাক, গ্যাব্রিয়েল হেইঞ্জ-এর  কথায়। ২০০৪ সালে পিএসজি থেকে ৭ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময় ইউনাইটেডে যোগ দেন হেইঞ্জ। এসেই মূল একাদশে লেফট ব্যাক হিসেবে জায়গা পান। এমনকি ২০০৪-০৫ মৌসুমে ক্লাব সেরা নির্বাচিত হন। ৫২ ম্যাচ খেলে গোল করেন একটি।

১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৫ ভিলারিয়াল বিপক্ষে ইনজুরিতে পড়েন হেইঞ্জ।  এরপরই অনাস্থায় চলে যান স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের। ২০০৬ সালে ক্লাবে যোগ দেন প্যাট্রিক ইব্রা। এরপরই হেইঞ্জ পড়ে যান আড়ালে। অধিকাংশ বড় ম্যাচে খেলতে পারতেন না। রাখা হতো রিজার্ভ বেঞ্চে।তাই কোচের ওপর রাগ করে পাড়ি জমান রিয়াল মাদ্রিদে।

আসা যাক, ডি মারিয়ার কথায়। পুড়ো ইউরোপ জুড়ে ততদিনে তিনি বিখ্যাত রিয়াল মাদ্রিদ উইঙ্গার । ২০১৪ সালে ইউনাইটেড  তাকে কিনতে খরচ করে ৬০ মিলিয়ন ইউরো। তাকে পরিয়ে দেওয়া হয় ৭ নাম্বার জার্সি। যা আগে পড়েছিল জর্জ বেস্ট, ব্যায়ান রবসন, এরিক ক্যান্টোনা, ডেভিড বেকহ্যাম এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো নামীদামী কিংবদন্তিরা।

লুই ভ্যান হাল তাঁকে দিয়েছিলেন ফরোয়ার্ড রোল, যাতে ঠিক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেননি উইঙ্গার ডি মারিয়া।  ক্লাব রেকর্ড করে কেনার পরেও রেড কার্ড এবং অফ ফর্মে জর্জরিত হয়ে ২৭ ম্যাচে মাত্র করলেন ৩ গোল। ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকা তাকে মৌসুমের সবচেয়ে খারাপ চুক্তি হিসেবে ঘোষণা করে।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ২০১৫ সালের নিয়ে আসা হল রোমেরো এবং রোহোকে। এখনো তারা খেলছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। ২০১৫ সালে টটেনহামের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয়ের ম্যাচে অভিষিক্ত হন।  দুটি দুর্দান্ত সেভ আর ক্লিনশিট রাখার পরও ইংলিশ গণমাধ্যম তার পারফরম্যান্সকে মানসিকভাবে দুর্বল বলে দাবি করে। এরপরেই আড়ালে পড়ে যান রোমেরো।

লুই ভান গাল চলে যান, আসেন হোসে মরিনহো। তিনিও ক্লাবকে বিদায় জানান। কিন্তু রোমেরো থেকে যেন দ্বিতীয় কিপার হিসেবেই।  বর্তমান কোচ ওলে শোলসারের কাছে তৃতীয় গোলরক্ষক হয়ে পড়েন রোমেরো। কারণ এখন এসে পড়েছে ইয়ং ট্যালেন্ডেড অ্যান্ডারসন।

আর রোহোর কথা? তিনি ছিলেন ২০১৪ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সেরা ডিফেন্ডার।  সেরাদের সেরা হতে যোগ দিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। শুরু করেছিলেন ভালো, কিন্তু একটি ইনজুরি আর স্বপ্নভঙ্গ রোহোর। ২০১৪ থেকে ২০২০ পর্যন্ত খেলেছেন মাত্র ৭৬ ম্যাচ। এখন লোনে আছেন আর্জেন্টাইন প্রিমিয়ার  ডিভিশন এর ক্লাব ইসতুডিয়ানতেজে।

এভাবেই অনেক আর্জেন্টাইন এলেন আবার চলে গেলেন। কিন্তু ইউনাইটেডে আর্জেন্টাইনরা সর্বদাই বর্ণহীন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...