‘আমার স্বপ্ন আবার টেস্ট খেলা’

আমার লক্ষ্য তো লঙ্গার ভার্সনে। টি-টোয়েন্টিও বলি নাই, ওয়ানডেও বলি নাই। আমি ঢুকতে চাই বাংলাদেশ দলের টেস্ট টিমে। এখানে আমরা এখনো স্ট্রাগল করতেছি। ঠিক না? আমার স্বপ্ন টেস্টে ঢোকার। টেস্টের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। ফাস্ট ক্লাসটা যদি চালু হতো তবে আমার জন্য খুব সহজ হতো।

অনেকেই তার শেষ দেখে ফেলেছেন। কিন্তু হাল ছাড়ছেন না মোহাম্মদ আশরাফুল। বাংলাদেশের একসময়ের এই সুপারস্টার এখনও স্বপ্ন দেখেন জাতীয় দলে খেলার। খেলা ৭১-কে পরিষ্কার বললেন, তার স্বপ্ন টেস্ট দলে ঢোকা। সেই স্বপ্ন এবং বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে কথা বললেন তিনি।

আপাতত সামনে কোন ঘরোয়া টুর্নামেন্ট নেই। নতুন বছরে আপনার লক্ষ্য কি?

আশরাফুল: ফিটনেস নিয়ে কাজ করতেছি। যখনই খেলা শুরু হবে তখনই যেনো খেলতে পারি। প্রস্তুত থাকাটাই এখন আমার একমাত্র লক্ষ্য।

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে পাঁচ ম্যাচ খেলার পর বাদ পড়েছিলেন, নিশ্চয় হতাশ ছিলেন?

আশরাফুল: ভালো খেলতে পারিনি। দুইটা ম্যাচ ভালো হয়নি। হতাশ না। তবে বঙ্গবন্ধু কাপে ভালো খেলতে পারলে ভালো লাগতো।

পাঁচ ম্যাচের ভিতর একটাতে রান আউট, একটাতে দুর্দান্ত ক্যাচে আউট, একটাতে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন; আপনার কি মনে হয় আরো সুযোগ পাওয়া উচিত ছিলো?

আশরাফুল: এটা নিয়ে আর কিছু বলতে চাইনা। এটা টি-টোয়েন্টি ছিলো। এখানে বেশী সুযোগ পাওয়া যায়না। এই টুর্নামেন্ট নিয়ে হতাশা নেই।

বঙ্গবন্ধু টি-টুয়েন্টি কাপে তরুণরা দারুন পারফর্ম করেছে, আলাদা ভাবে নজর কেড়েছে কেউ?

আশরাফুল: সবার খেলাই ভালো লেগেছে। বিশেষ করে আমাদের টিমের ক্যাপটেন শান্ত ওর খেলা খুব ভালো লেগেছে। তারপর আনিসুল ইমন ও ভালো খেলেছে। অনূর্ধ্ব-১৯ এর সবাইকে খুব ভালো লেগেছে। শরিফুলের বোলিং; আকবরের ছোট ছোট ইনিংস গুলোও খুব কার্যকরী ছিলো।

টুর্নামেন্ট জুড়েই পেসাররা দারুণ ছন্দে ছিলেন, এই যে পাইপলাইনে এতো তরুণ পেসার, প্রত্যাশা কি?

আশরাফুল: শেষ দুই অনুর্ধ্ব-১৯ দলের প্লেয়ারগুলা খুব ভালো মাশআল্লাহ। ওদের ভালো ভাবে গাইড করলে দারুন কিছু হবে আশা করি। সব কিছু মিলিয়ে ভালো হয়েছে। টুর্নামেন্টটা নিয়মিত হলে প্লেয়ারদের একটা প্লাটফর্ম তৈরি হবে।

বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রথম তারকা আপনি, আর বর্তমান সাকিব, তামিম, মুশফিক নিজেদের অন্যন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। আপনারও সামনে সুযোগ ছিলো, কখনো কি নিজের অবস্থান নিয়ে আফসোস হয়?

আশরাফুল: না, না, এটাই তো নিয়ম। আবার দশ বছর পরে তামিম সাকিবের থেকে বেটার প্লেয়ার আসবে। এটাই তো নিয়ম। তখন ওদের থেকে তারা এগিয়ে যাবে। এটা আফসোসের কিছু না।

আর কতদিন ক্রিকেট খেলতে চান?

আশরাফুল: আরো তিন চার বছর

কিছুদিন আগে বলেছিলেন একদিনের জন্য হলেও জাতীয় দলে ফিরতে চান, এখনো কি লক্ষ্য এটাই?

আশরাফুল: এটা তো শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত আমার লক্ষ্য থাকবে। আপনি যত দিন খেলবেন জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন তো থাকতেই হবে। লক্ষ্য না থাকলে হবে না। আমি এখনো বিশ্বাস করি জাতীয় দলে খেলতে পারবো।

এখন মুমিনুল হকের মতো ব্যাটসম্যান সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সুযোগ পাচ্ছে না। আপনার কি পছন্দের কোন ফরম্যাট আছে; থাকলেও পছন্দের ব্যাটিং অর্ডারে খেলার নিশ্চয়তা নেই। তাহলে জাতীয় দলে নিজেকে কোথায় দেখে লক্ষ্য স্থির করছেন?

আশরাফুল: আমার লক্ষ্য তো লঙ্গার ভার্সনে। টি-টোয়েন্টিও বলি নাই, ওয়ানডেও বলি নাই। আমি ঢুকতে চাই বাংলাদেশ দলের টেস্ট টিমে। এখানে আমরা এখনো স্ট্রাগল করতেছি। ঠিক না? আমার স্বপ্ন টেস্টে ঢোকার। টেস্টের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। ফাস্ট ক্লাসটা যদি চালু হতো তবে আমার জন্য খুব সহজ হতো। কারণ ওখানে কোন চাপ নাই। ওখানে আপনি আপনার মন মত ইনিংস বানাতে পারবেন। বড় বড় ইনিংস খেলতে পারবেন। আমার স্বপ্নটা হলো টেস্টে ঢোকা। এরপরে যদি একটা রিমারে খেলতে পারি, তখন ওয়ানডে টি-টোয়েন্টি।

যে টেস্ট দলটি দেখে গিয়েছেন বা যে দলটিতে খেলেছেন, সেটির সঙ্গে বর্তমান দলের নিশ্চয় পার্থক্য আছে। আপনি কি মনে করেন, এই দলে জায়গা পাওয়ার সামর্থ্য এখনো আপনার আছে?

আশরাফুল: আমার মনে হয় টেস্টে কোন পার্থক্য হয় না। টেস্ট ক্রিকেটে আমরা শুরুতে যা ছিলাম এখনো তাই আছি। ডিফারেন্ট কিছু তো খেলতেছি না আমরা। আপনি চিন্তা করেন শেষ ৫-৬ টেস্টেই ইনিংস ব্যাবধানে হারছি, জিম্বাবুয়ের ম্যাচ বাদ দিলে। (জিম্বাবুয়ে বাদে শেষ ৬ ম্যাচে ৫ টাতে ইনিংস হার। একটা আফগানিস্তানের সাথে ২২৪ রানে হার)  আমরা বলার সময় বলতেছি অনেক। আমরা ফরম্যাটটা চিন্তা না করে শুধু কথা বলতেছি।

টি-টোয়েন্টি কাপে মাশরাফি ভালো করেছে, এর আগে আমরা দেখেছি লঙ্গার ভার্সনে তুষার ইমরানকে নিয়মিত ভালো করতে। এরপরেও তরুণদের সুযোগ দিতে তাদের উপেক্ষা করেছে নির্বাচকরা, আপনি কি মনে করেন পারফর্ম করলেই জাতীয় দলে জায়গা হবে, বয়স কোন বাঁধা নয়?

আশরাফুল: অবশ্যই , পারফরমেন্স ফিটনেসই সব কিছুই। বয়স কোনো বাধা তে পারে না। তবে শুধু পারফরমেন্স করলেই তো হবে না। আপনাকে বুঝতে হবে আপনি ইন্টারন্যাশনাল মানের ফিট আছেন। যেমন আপনাকে ফিটনেস লেভেল যেটা দেয় সেটা ঠিক রাখতে হবে। সব কিছুই ঠিক থাকতে হবে। আপনি প্রস্তুত কিনা সেটাই বড় কথা।

দীর্ঘ দিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছে বাংলাদেশ। এই দীর্ঘ বিরতী কি ক্রিকেটারদের পারফর্মে বা মানসিকতায় প্রভাব ফেলবে?

আশরাফুল: প্রভাব তো পড়বে ডেফিন্টেলি। আমরা তো প্রায় দশ মাস পরে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট খেলতে নামবো। তবে এগিয়ে থাকবো এই জন্য যে আমরা হোম কন্ডিশনে খেলবো।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...