তোমার স্ত্রী আর আমার বাচ্চাদের কী খবর?

এই জাভেদ মিয়াঁদাদও কম না। একবার ভারতের বিপক্ষে খেলা। বাঁ-হাতি স্পিনার দিলীপ দোশি বোলিংয়ে। বারবার মিয়াঁদাদ জিজ্ঞেস করছেন, ‘এই, তোমার রুম নম্বর কত!’ দোশি নির্বীকার ছিলেন শুরুতে, এক পর্যায়ে ক্ষেপে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমার রুম নম্বর দিয়ে কি হবে শুনি!’ জাভেদ মিয়াঁদাদ এক গাল হেসে জবাব দিলেন, ‘মানে বলটা ছক্কা মেরে ওই রুমে পাঠাতে চাচ্ছিলাম আর কি!

–  গ্যাবায় চলো, তোমাকে দেখিয়ে দেবো

– আরে, তুমি ভারতে চলো, তখন মজাটা টের পাবে। ওটাই তোমার শেষ ট্যুর হবে!

– যাই হোক, আমার টিম মেটরা আমাকে বন্ধু ভাবে!

রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে ‘খোঁচা’টা দিয়েছিলেন টিম পেইন, অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক। বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি কিংবা অ্যাশেজে এমন স্লেজিং নতুন কিছু নয়। ক্রিকেটের ইতিহাস ঘাটলে এমন স্লেজিংয়ের অনেক নজীরই পাওয়া যায়।

এই যেমন, অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যকগ্রা ও জিম্বাবুয়ের এডো ব্র্যান্ডেসের মধ্যে সহজ সম্পর্ক ছিল না। একটা কথোপকথন শুনলেই বিষয়টা পরিস্কার হবে।

ম্যাকগ্রা: হাই, ব্র্যান্ডেস… তুমি এতো মোটা কেন?

ব্র্যান্ডেস: কারণ প্রতিবার তোমার স্ত্রীর সাথে শারীরিক মিলনের পর ও আমাকে বিস্কুট খেতে দেয়।

দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ড্যারিল কালিনানের প্রসঙ্গ এখানে না টানালেই নয়। বরাবরই লেগ স্পিনে একটু দুর্বল ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ, মাঠে নেমে ক্রিজের দিকে যাচ্ছেন ড্যারিল কালিনান।

এমন সময় পাশ থেকে অজি লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন তাকে দেখে বললেন যে, গত দুই বছর ধরে তিনি নাকি অপেক্ষা করছেন কালিনানকে আরেকবার আউট করার জন্য। ওয়ার্নের শরীরের দিকে একবার তাকিয়ে কালিনানের জবাব, ‘মনে হচ্ছে এই সময়টা তুমি কেবল খেয়েই পার করেছ।’

তবে, মুখে জবাব দিলেও ব্যাটিংয়ে ওয়ার্নকে মোটেও জবাব দিতে পারতেন না কালিনান। কালিনান ছিলেন ওয়ার্নের ‘বানি’।

অ্যন্ড্রু ফ্লিনটফকে কয়েকবার স্লগ সুইপ করতে ব্যর্থ হওয়ার পর তার সাথে টিনো বেস্টের কথোপকথন:

ফ্লিনটফ: কি টিনো? কি খবর?

টিনো বেস্ট: তোমার স্ত্রী আর আমার বাচ্চাদের কী খবর?

ইঙ্গিতটা কোথায় সেটা নিশ্চয়ই আর বলে দিতে হয় না, ফ্লিনটফের রক্তবর্ণের চাহনী দেখেও অনুমান করা যায় কতটা ক্ষেপে গিয়েছিলেন তিনি।

তবে, স্লেজিংকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন অস্ট্রেলিয়ান দানবীয় পেসার মার্ভ হিউজ।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে নেমেছেন পাকিস্তানের জাভেদ মিয়াঁদাদ৷ বোলার মার্ভ হিউজকে দেখে তিনি বললেন ‘মোটা বাস কন্ডাক্টর।’ কিন্তু কোন কিছু বললেন না হিউজ। একটু পর হিউজের বলে আউট হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন মিয়াঁদাদ। পাশ থেকে হিউজের টিপ্পনি, ‘টিকিট প্লিজ।’

এই জাভেদ মিয়াঁদাদও কম না। একবার ভারতের বিপক্ষে খেলা। বাঁ-হাতি স্পিনার দিলীপ দোশি বোলিংয়ে। বারবার মিয়াঁদাদ জিজ্ঞেস করছেন, ‘এই, তোমার রুম নম্বর কত!’

দোশি নির্বিকার ছিলেন শুরুতে, এক পর্যায়ে ক্ষেপে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমার রুম নম্বর দিয়ে কি হবে শুনি!’

জাভেদ মিয়াঁদাদ এক গাল হেসে জবাব দিলেন, ‘মানে বলটা ছক্কা মেরে ওই রুমে পাঠাতে চাচ্ছিলাম আর কি!

‘বড়ে মিয়া’ খ্যাত এই মিয়াঁদাদই আবার ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে ভারতীয় উইকেটরক্ষক কিরণ মোরেকে অনুকরণ করে লাফ দিয়ে আলোচিত-সমালোচিত হন। তবে, স্লেজিং করতে গিয়ে হিতে বিপরীত হওয়ার নজিরও আছে।

২০০৩ সালে অষ্ট্রেলিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে চার টেস্ট সিরিজের চতুর্থ টেস্টের ঘটনা ( ভেন্যু- সেন্ট জোন্স)। এই সিরিজটির নাম দ্য ফ্রাঙ্ক ওরেল ট্রফি রাখা হয়। প্রথম ইনিংসে অষ্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ উভয়েরই সংগ্রহ ছিল ২৪০।

দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া করে ৪১৭ রান। জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের করতে হবে ৪১৮। হাতে সময় দেড় দিনের মতো। চতুর্থ ইনিংসে এত রান তাড়া করে ম্যাচ জেতার রেকর্ড ছিল না।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যান রামনরেশ সারওয়ান তখন একেবারেই টগবগে তরুণ। বয়স মাত্র ১৭। বল করছিলেন গ্লেন ম্যাকগ্রা। কথায় কথায় ম্যাকগ্রা-সারওয়ানের একচোট হয়ে গেল। এরপর প্রতি বলেই সারওয়ানকে এটা সেটা বলতে লাগল ম্যাকগ্রা।

সারওয়ান জবাব দিয়েছিলেন ব্যাটে। সারওয়ানের ১০৫ ও শিবনারায়ন চন্দরপলের ১০৪ রানে ভর করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সে ম্যাচটি জিতে এক রেকর্ড সৃষ্টি করে। এখনো এটিই চতুর্থ ইনিংসে সবেচেয়ে বেশি রান তাড়া করে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড।

সেই ম্যাচটা টেস্টের ইতিহাসেই অনন্য এক ম্যাচ হিসেবে স্বীকৃত। টানা হারের পর নিজেদের মাটিতে অজি দানবকে মাটিতে নামিয়েছিল ক্যারিবিয়ানরা। ম্যাচে ম্যাথু হেইডেনের সাথেও লেগে গিয়েছিল ব্রায়ান লারার। সেই স্মৃতি কি আর ভোলা যায়!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...