জমজ জুটির তিন দশক

দুজনের বয়সের ব্যবধান মাত্র চার মিনিট। একসাথে পৃথিবীতে আসার পর থেকে মোটামুটি একসাথেই জীবনের বড় একটা সময় কাটিয়েছেন। একসাথে বেড়ে ওঠা, একই স্কুলে যাওয়া, এক রুমে ১৬ বছর একসাথে থাকা কিংবা একসাথে খেলতে যাওয়া থেকে একসাথে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ক্রিকেটের কিংবদন্তি হয়ে ওঠা। দুইজন যেনো এক অন্তহীন যাত্রার সঙ্গী।

৫ এপ্রিল, ১৯৯১।

ঠিক তিন দশক আগে ক্রিকেট ইতিহাসে যুক্ত হয়েছিল এক নতুন পালক। দুই ভাই দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন এমন উদাহরণ ক্রিকেটে তো অনেকই আছে। তবে সেবার দুই জমজ ভাই প্রথম বারের টেস্ট খেলতে নামলেন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে। ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল দুই ভাইয়ের জুটি। দজনই অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলেছেন এক লম্বা সময়। প্রায় এক যুগ দুজন মিলে সামলেছেন অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডার। তাঁরা স্টিভ ও মার্ক ওয়াহ।

দুজনের বয়সের ব্যবধান মাত্র চার মিনিট। একসাথে পৃথিবীতে আসার পর থেকে মোটামুটি একসাথেই জীবনের বড় একটা সময় কাটিয়েছেন। একসাথে বেড়ে ওঠা, একই স্কুলে যাওয়া, এক রুমে ১৬ বছর একসাথে থাকা কিংবা একসাথে খেলতে যাওয়া থেকে একসাথে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ক্রিকেটের কিংবদন্তি হয়ে ওঠা। দুইজন যেনো এক অন্তহীন যাত্রার সঙ্গী।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অবধি পৌছানোর যাত্রা টা শুরু হয়েছিল ঠিক সাত বছর বয়স থেকে। বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলে তখন থেকেই নিয়মিত মুখ দুই ভাই। তারপর মাত্র ১৩ বছর বয়সে সিডনিতে ৭ দিন ব্যাপী একটি ট্রেনিং সেশনের জন্য সিলেক্ট হন দুই ভাই। সেখানে এসেছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অনেক তারকারাও। তারপর থেকেই পেশাদার ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হয় দুজনের।

১৯৮৫ সালে চার মিনিটের বড় ভাই স্টিভ ওয়াহ অভিষিক্ত হন টেস্ট ক্রিকেটে। তবে মার্ককে পাড়ি দিতে হয়েছে আরো লম্বা পথ। ছয় বছর পর মার্ক যখন অভিষিক্ত হুলেন তখন স্টিভ ইতিমধ্যেই খেলে ফেলেছেন ৪২টি টেস্ট ম্যাচ। তবে সারাজীবন একসাথে বেড়ে ওঠা দুই ভাইয়ের একসাথে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলাটা কেনো যেনো হয়েই উঠছিল না। এবার মার্ককে দলে জায়গা দিতে গিয়ে নিজের জায়গা হারালেন স্টিভ। তাই নিজের অভিষেকের আনন্দটাও কেমন স্লান হয়ে গিয়েছিল সেদিন মার্কের জন্য।

তবে এরপর আর খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয় নি এই দুজনকে। মাস দুয়েক পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেই দলে ফেরেন স্টিভ। ১৯৯১ সালের ৫ এপ্রিল দুই ভাই প্রথম একসাথে জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট খেলতে নামেন। এটাই ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম কোনো জমজ ভাইয়ের একসাথে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা। এরপর অবশ্য দুজনের কেউই পিছনে ফিরে তাকাননি। দুজনে একসাথে খেলেছেন ১০৮টি টেস্ট।  প্রায় এক দশক দুজনে মিলে সামলেছেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং অর্ডার। বল হাতেও দুজনের ভূমিকা কম নয়।

১৬৮ টি টেস্ট খেলা স্টিভের ঝুলিত আছে ১০ হাজারেরও বেশি রান। বল হাতেও নিয়েছেন ৯২টি উইকেট। এদিকে মার্ক ওয়াহ টেস্ট খেলেছেন মোট ১২৮টি। সেখানে ব্যাট হাতে করেছেন ৮০২৯ রান। বল হাতেও মার্কের আছে ৫৯টি টেস্ট উইকেট।

ওয়ানডে ক্রিকেটেও দুজনের কীর্তি কম নয়। ১৯৯৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক ছিলেন স্টিভ ওয়াহ। সেই দলের আরেক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন তাঁর ভাই মার্ক ওয়াহ।

১৯৯১ সালে যেই যাত্রাটা শুরু করেছিলেন দুই ভাই সেটা গিয়ে থামে ২০০২ সালে। সেবছর অস্ট্রেলিয়ায় অ্যাশেজ সিরিজ থেকে বাদ পড়ে মার্ক । স্টিভ সেদিন যখন প্রায় ১২ বছর পর নিজের ভাইকে ছাড়া গ্যাবায় টেস্ট খেলতে নামছিলেন তখন বোধহয় নিজের একটা অংশকে রেখেই নামছিলেন এই কিংবদন্তি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...