চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনেও চলল ক্যাচ মিসের মহড়া। আগের দিনের তিন ক্যাচ এদিনের সংখ্যাটাও একই। দ্বিতীয় দিনেও তিন খানা ক্যাচ ছেড়ে বাংলাদেশ। আর তাইতো চট্টগ্রামের ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে রান-পাহাড়ের চূড়ায় উঠেছে শ্রীলঙ্কা। তাছাড়া ব্যক্তিগত কোন সেঞ্চুরি ছাড়া দলগত সর্বোচ্চ সংগ্রহের রেকর্ডটিও করেছে লংকান ব্যাটাররা।
দ্বিতীয় দিনের সকালের শুরু করেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার দীনেশ চান্ডিমাল ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। সকালের মেঘাচ্ছন্ন চট্টগ্রামের আকাশের ফায়দা তুলতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। যদিও চান্ডিমালকে ফেরানো গিয়েছিল প্যাভিলিয়নে। তাকে ফিরিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান।
চান্ডিমালের উইকেট ছাড়াও প্রথম ইনিংসে সাকিবের শিকার আরও দুই উইকেট। দ্বিতীয় দিনে মোট দুইটি। প্রায় বছর খানেক বাদে টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন সাকিব। টেস্টের শুরুর দিকে যদিও তিনি বেশ ছন্নছাড়া ছিলেন বল হাতে। তবে সময় যত গড়িয়েছে চেনা রুপেই ফিরেছেন নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার।
তবে বাকি বোলারদের ব্যর্থতার গল্পের ব্যত্যয় ঘটেনি। তবে তাতে ফিল্ডারদেরও দায় এড়ানো যায়না। মোদ্দাকথা দলগত বাজে পারফরমেন্সেরই খেসারত দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তাদের বিপক্ষে দিনশেষে রান সংগ্রহ হয়েছে ৫৩১। এই রান তোলার পথে শ্রীলঙ্কার কোন ব্যাটারকেই সেঞ্চুরি অবধি পৌঁছাতে দেননি বাংলাদেশের বোলাররা।
তবে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন চাইলেই তোলা যায়। চট্টগ্রামের উইকেট রান প্রসবা- সে কথা নতুন নয়। তবে একেবারেই যে ফ্ল্যাট উইকেট নয়- সেটাও নিশ্চয়ই অজানা নয়। এখানে বাংলাদেশের বোলারা সামান্য পরীক্ষাই নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের। তাদের ইনিংসের ছয়টি অর্ধশতক অন্তত সে কথাই বলে।
৩১৪ রানের প্রথম দিন শেষ করা শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় দিনে খেলেছে প্রায় তিন সেশন ব্যাট করেছে। তাতে করে তারা আরও ২১৭ রান তুলতে সক্ষম হয়। এর মধ্যে ছয়টি উইকেট হারায় তারা। যার দুইটি আবার রানআউট। দ্বিতীয় দিনটিতে হয়ত বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখতে চাইবে অনেকেই। তবে সামগ্রিক চিত্রে বেশ ধুকতেই হয়েছে বাংলাদেশকে।
প্রথম টেস্টের দুই সেঞ্চুরিয়ান ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস আবার হাঁটছিলেন শতকের পথে। তবে ধনঞ্জয়াকে খালেদ থামালেও কামিন্দু শেষ অবধি থেকেছেন অপরাজিত। অন্যপ্রান্তের ব্যাটারদের ক্রমাগত প্রস্থানের ফলে হাতখুলে খেলতে শুরু করেছিলেন কামিন্দু। তবুও সেঞ্চুরি তার পাওয়া হয়নি শেষ অবধি।
অপরপ্রান্তে থাকা শেষ ব্যাটার আসিথা ফার্নান্দো রানআউট হয়ে যান। তাতে করে ৯২ রানেই শেষ হয় কামিন্দুর ইনিংস। সেই পাহাড় টপকাতে ওপেনিংয়ে নামে বাংলাদেশের দুই ব্যাটার, মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। দুই জনে বেশ দেখে-শুনেই খেলতে থাকেন। অন্তত সিলেট টেস্টের মত বেহাল দশার মুখে শুরুতেই পড়তে হয়নি বাংলাদেশকে।
যদিও নিজেদের ব্যাটিং দূর্গ শেষ অবধি অক্ষত রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। দিনের খেলার শেষ হওয়ার দুই ওভার বাকি থাকতেই সাজঘরে ফেরেন জয়। লাহিরু কুমারার ভেতরের লাইন ধরে আসতে থাকা বলটায় বোল্ড হয়ে ফিরে যান জয়। শেষ অবধি নাইট ওয়াচম্যান তাইজুল ইসলামের ব্যাটিং দৃঢ়তায় আর কোন উইকেট হারাতে হয়নি বাংলাদেশকে। এক উইকেটের বিনিময়ে ৫৫ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।