আনরিচ নরকিয়ার ইনজুরিতে কপাল খুলতে পারে বাংলাদেশের। বাংলাদেশের কোনো একজন বোলারকে দলে টানতে পারে কলকাতা নাইট রাইডার্স। সেই লড়াইয়ে আছেন দুই পেসার আর এক লেগ স্পিনার।
আইপিএল দরজায় কড়া নাড়ছে। টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই দলগুলো নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে, কিন্তু তার মাঝেই দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের কপালে। ইনজুরির সাথে লড়ছেন আনরিচ নরকিয়া। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ছিটকে যাওয়া এই প্রোটিয়া পেসারের আইপিএল খেলা নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। কেকেআর তাই বিকল্প ভাবনায় ব্যস্ত।
সম্ভাব্য বিকল্পের তালিকায় আছেন তিন বাংলাদেশি – মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ ও রিশাদ হোসেন। থাকতে পারতেন নাহিদ রানাও, কিন্তু এই এক্সপ্রেস বোলার ব্যস্ত থাকবেন পিএসএলে, তাঁকে নিয়েছে পেশোয়ার জালমি।
সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন দুই কোটি ভিত্তি মূল্যের মুস্তাফিজ। বাংলাদেশের ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান আগেও আইপিএলে খেলেছেন। ভালোই পারফর্ম করেছেন। ৫৭ ম্যাচে ৬১ উইকেট নিয়ে তার অভিজ্ঞতা বেশ সমৃদ্ধ। চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে দুর্দান্ত এক মৌসুম কাটানোর পর তার প্রতি দলগুলোর আগ্রহ ছিল প্রবল।
ইডেন গার্ডেনসের উইকেটে গতির বৈচিত্র্য আনতে পারদর্শী বোলাররা সবসময় কার্যকর প্রমাণিত হন। সেই জায়গা থেকে মুস্তাফিজ হতে পারেন এক্স-ফ্যাক্টর। তার স্লোয়ার, কাটার, ইয়র্কারের মিশেল কলকাতার পেস আক্রমণে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
তবে, লেগ স্পিন অপশনের কথাও ভাবতে পারে কলকাতা। বিগ ব্যাশে হোবার্ট হারিকেন্সে নাম লেখানো রিশাদ আছেন আলোচনায়। কলকাতা বরাবরই বিশ্বমানের স্পিনারদের দলে রাখতে পছন্দ করে। মেগা নিলামে তারা আল্লাহ গজনফরকে নিতে চেয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই চায়নাম্যানকে দলে নিয়েছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
রিশাদ হতে পারেন কলকাতার জন্য পারফেক্ট উইকেট-টেকিং বিকল্প। নরকিয়া বা স্টার্কের অনুপস্থিতিতে কলকাতার বোলিং আক্রমণে সরাসরি উইকেট তুলে নেওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন একজন বোলার প্রয়োজন। রিশাদের ভিত্তি মূল্য ৭৫ লাখ রুপি।
আইপিএল অভিষেক হয়ে যেতে পারে তাসকিন আহমেদও। পারফরম্যান্সে দারুণ ধারাবাহিক তাসকিনকে ঘিরে লখনৌ সুপার জায়ান্টস দুই মৌসুম আগে আগ্রহ প্রকাশ করলেও ব্যাটে বলে হয়নি।। ১ কোটি বেস প্রাইসের এই ডানহাতি পেসার নতুন বলে দুর্দান্ত সুইং করাতে পারেন, সঙ্গে বাউন্স ও পেসেও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন।
কলকাতার স্কোয়াডে মিডল ওভারে উইকেট নেওয়ার মতো বোলার আছে, কিন্তু পাওয়ারপ্লেতে কেউ যদি দ্রুত ব্রেকথ্রু এনে না দিতে পারেন, তাহলে সেটাই হতে পারে বড় সমস্যা। সেই সমস্যার সমাধান করতে পারেন তাসকিন।
শেষে যাই সিদ্ধান্ত আসুক না কেন, বাংলাদেশিদের শেষ মুহূর্তে আইপিএলে ঢুকে যাওয়ার সুযোগ আছে। মুস্তাফিজের কাটার, রিশাদের লেগস্পিন কিংবা তাসকিনের আগ্রাসী পেস—সব মিলিয়ে কেকেআরের সামনে সুযোগ আছে বাংলাদেশের কোনো তারকাকে দলে টানার। এখন দেখার, কেকেআর শেষ পর্যন্ত কাকে বেছে নেয়! বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এনওসি ইস্যুতে বাগড়া দেয় কি না, সেটাও ভাবনার বিষয় কেকেআরের জন্য।