‘ক্যাপ্টেন লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট’- ক’জন অধিনায়ক পারেন দলকে শিরোপা জেতাতে? সেই তালিকাটা খুবই সংক্ষিপ্ত। আইসিসির যেকোন বৈশ্বিক ইভেন্টে শিরোপা জিতেছে তো বহুদল। কিন্তু মেগাফাইনালে অধিনায়কদের পারফরমেন্সে চেপে শিরোপা বন্দরে পৌঁছানোর ঘটনা রয়েছে সামান্যই। আজ থাকছে সেসব পারফরমেন্সের গল্প।
- ক্লাইভ লয়েড (১৯৭৫ বিশ্বকাপ ফাইনাল)
কোন এক বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের ফাইনালে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার প্রথমবার জিতেছেন ক্যারিবিয়ান ক্লাইভ লয়েড। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিপাকে পড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাত্র ৫০ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। সেখান থেকে দলের ইনিংস টেনে তোলের লয়েড। আজকের দিনের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের একটা ঝলক তিনি বহু আগেই দিয়ে রেখেছিলেন।
সেদিন মাত্র ৮৫ বলে সেঞ্চুরির মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন লয়েড। তাতে করে অজিদের ২৯২ রানের টার্গেট ছুড়ে দিতে সক্ষম হয় তার দল। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধকতা হয়ে লয়েড আবার হাজির হয়েছিলেন বল হাতে। একটি উইকেট শিকার করেন তিনি। তবে বেশ ইকোনমিক্যাল বোলিং করেন লয়েড। তাতে করে ২৭৪ রানে থমকে যায় অজিরা, বিশ্বকাপ জিতে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
- রিকি পন্টিং (২০০৩ বিশ্বকাপ ফাইনাল)
ক্লাইভ লয়েডের পর একটা লম্বা সময়ের বিরতির পর অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক রিকি পন্টিং ফাইনালের ম্যাচ সেরা হন। ক্রিকেট ইতিহাসের অবিসংবাদিত অধিনায়কের অর্জনের মুকুটে সেটা ছিল আরও একটি পালক। ওয়ানডে বিশ্বকাপের মঞ্চে তিনি ছিলেন রীতিমত অজেয়। ২৯ ম্যাচের মধ্যে তার অধীনে ২৬টি ম্যাচই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে। হেরেছে মাত্র দুইটি।
দলগত পারফরমেন্সকে তিনি প্রভাবিত করেছেন বহুভাবে। এর মধ্যে ২০০৩ সালের ফাইনালটা অন্যতম। ১৪০ রান তিনি নিয়েছিলেন ১২১ বলে। তাতে করে ভারতের জন্যে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৬০ রানের। সেই লক্ষ্য আর টপকাতে পারেনি সৌরভ গাঙ্গুলির টিম ইন্ডিয়া।
- মহেন্দ্র সিং ধোনি (২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল)
একটা লম্বা সময়ের খরা কাটিয়ে ২০১১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল ভারত। ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার শোভা পেয়েছিল ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির হাতে। ছক্কা হাঁকিয়ে দলের শিরোপা নিশ্চিত করার জন্যে স্রেফ তিনি সেই পুরষ্কার পাননি।
২৭৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে, টপ অর্ডারের দ্রুত বিদায়ে বিপাকে পড়ে টিম ইন্ডিয়া। ইনফর্ম যুবরাজ সিংয়ের আগে ধোনি বাইশ গজে নামেন, বিরাট কোহলি আউট হলে। সেই সিদ্ধান্তটা ভীষণ ঝুকিপূর্ণ ছিল বটে। ম্যাচ হারলেই দায় গিয়ে পড়ত ধোনির কাঁধে। কিন্তু ৭৯ বলে ৯১ রানের অপরাজিত ইনিংসের কল্যাণে নিজের উপর সমালোচনার ঝড় বয়ে যেতে দেননি মহেন্দ্র সিং ধোনি।
- রোহিত শর্মা (২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি)
মহেন্দ্র সিং ধোনির পর, ভারতের জার্সি গায়ে ফাইনালে ম্যাচ সেরা হতে পেরেছেন স্রেফ রোহিত শর্মা। ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তার দল হয়েছে অপরাজতি চ্যাম্পিয়ন। একটি ম্যাচেও হারেনি। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে ইম্প্যাক্টফুল ইনিংস খেলে গেছেন রোহিত।
ফাইনালের দিনেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৫২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামে ভারত। ওপেনিংয়ে ১০৫ রানের জুটি গড়েন রোহিত, শুভমান গিলকে সাথে নিয়ে। ব্যক্তিগতভাবে ৮৩ বলে ৭৬ রানের ইনিংস খেলে আউট হন তিনি। তবে তার ওই ইনিংসটিই ভারতের জয়ের পথ মসৃণ করে। ভারত নিজেদের দ্বিতীয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতে নেয়।