প্রস্তুত হচ্ছে ৪০ টি ‘বাংলাদেশি’ উইকেট!

বিসিবির সিদ্ধান্ত স্পষ্ট—এদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হলে, এখানকার মাটিই সবচেয়ে উপযোগী। বিদেশি মাটি ব্যবহার করলে সংস্কারের সময় সমস্যা হবে, কারণ একই ধরণের মাটি তখন পাওয়া যাবে না। তাই পুরোপুরি ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ উইকেটের দিকেই ঝুঁকছে বিসিবি।

বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে পূর্বাচলে। এই দুই মাঠে শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক ম্যাচের উইকেট নয়, প্রস্তুত করা হচ্ছে অনুশীলনের জন্যও বিশ্বমানের ৪০ টি পিচ! বিসিবির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দুটি মাঠে ১০ টি করে মোট ২০ টি সেন্টার উইকেট তৈরি করা হবে। এর বাইরেও থাকবে আরও ২০ টি অনুশীলন উইকেট।

এতদিন দেশের ক্রিকেট উইকেট তৈরির ক্ষেত্রে বিদেশি কিউরেটরের উপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু এবার আর তা নয়—পুরো প্রকল্পই থাকছে বাংলাদেশি কিউরেটরদের হাতে! বহু বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে, দেশীয় মাটির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করেই তৈরি করা হবে পূর্বাচলের নতুন উইকেট। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বিশ্বাস, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের ক্রিকেট পরিকাঠামোকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

বিসিবির অভিজ্ঞ কিউরেটর বদিউল আলম খোকনের উপর দায়িত্ব পড়েছে পুরো প্রকল্পের। যিনি ইতোমধ্যেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের উইকেট প্রস্তুতিতে কাজ করেছেন। টমি হেমিং চলে যাওয়ার পর বরিশাল স্টেডিয়ামের উইকেট তৈরির দায়িত্বও ছিল তার কাঁধে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে—বিদেশি পরামর্শক ছাড়া কি আদৌ মানসম্মত উইকেট তৈরি করা সম্ভব? বিসিবির বিশ্বাস, এত বছরের অভিজ্ঞতা এখন পরীক্ষার পালা। সিলেট, খুলনা, ফতুল্লা থেকে শুরু করে মিরপুর একাডেমির অনুশীলন পিচ—এসবই দেশীয় কিউরেটরদের হাতের কাজ। তাই পূর্বাচলের নতুন উইকেট নিয়েও শঙ্কার কোনো জায়গা নেই।

উইকেট তৈরিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সঠিক মাটি নির্বাচন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মাটি এনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে, যেন যথাযথ মান বজায় রাখা যায়। কালো এবং বাদামি দুই ধরনের মাটির উইকেট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে বিসিবির।

বহুবার আলোচনা হয়েছে, বাংলাদেশে উইকেট তৈরিতে বিদেশি মাটি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না। কিন্তু বিসিবির সিদ্ধান্ত স্পষ্ট—এদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হলে, এখানকার মাটিই সবচেয়ে উপযোগী। বিদেশি মাটি ব্যবহার করলে সংস্কারের সময় সমস্যা হবে, কারণ একই ধরণের মাটি তখন পাওয়া যাবে না। তাই পুরোপুরি ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ উইকেটের দিকেই ঝুঁকছে বিসিবি।

Share via
Copy link