আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে সফলতম দলের নাম মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। বিশ্বসেরা সব ব্যাটসম্যানরা বিভিন্ন মৌসুমে খেলেছেন পাঁচবারের শিরোপাজয়ী দলটির হয়ে। আসুন দেখে নেয়া যাক মুম্বাইয়ের হয়ে সেঞ্চুরি হাঁকানো পাঁচ ব্যাটসম্যানকে।
- সনাৎ জয়াসুরিয়া
আইপিএলের প্রথম আসরেই চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন সনাৎ জয়াসুরিয়া। সেদিন চেন্নাইয়ের দেয়া ১৫৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ব্যাট হাতে রীতিমতো ঝড় তুলেছিলেন মাতারা হারিকেন।
প্রতিপক্ষ দলে লক্ষীপতি বালাজি, আলবি মরকেল, মুত্তিয়া মুরালিধরনের মতো বোলার থাকলেও কেউই বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি এই ব্যাটারের সামনে।
ইনিংসের শুরু থেকেই মারকুটে ব্যাটিং করে নয় চার এবং এগারো ছক্কায় তুলে নেন সেঞ্চুরি। শেষপর্যন্ত তাঁর ৪৮ বলে অপরাজিত ১১৪ রানের সুবাদে নয় উইকেট এবং ৩৭ বল হাতে রেখেই বড় জয় পেয়েছিল মুম্বাই।
- শচীন টেন্ডুলকার
২০১১ আইপিএল মৌসুমে সেবার কেরালার বিপক্ষে ওয়াংখেড়েতে টসে হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমেছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী ব্যাটিং এ দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন শচীন টেন্ডুলকার। একপ্রান্তে উইকেটের পতন হলেও শচীন ছিলেন অবিচল।
পুরো ইনিংস জুড়ে ব্যাট করে একদম শেষ বলে তুলে নেন নিজের আইপিএল ক্যারিয়ারের প্রথম এবং একমাত্র সেঞ্চুরি। ৬৬ বলে শতক পূর্ণ করার পথে সেদিন ১২টি চারের পাশাপাশি তিনটি ছক্কা হাঁকান এই তারকা। যদিও ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম এবং মাহেলা জয়াবর্ধনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ম্যাচ হারতে হয়েছিল মুম্বাইকে।
- রোহিত শর্মা
ইডেন গার্ডেন্স বরাবরই রোহিত শর্মার পছন্দের মাঠ। এই মাঠে যখনই খেলতে নেমেছেন, রীতিমতো রানবন্যা বইয়ে দিয়েছেন এই তারকা। আইপিএলে রোহিতের একমাত্র সেঞ্চুরিও কলকাতার মাঠেই। ২০১২ আইপিএল মৌসুমে কলকাতার বিপক্ষে সেদিন রীতিমতো রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছিলেন এই তারকা।
কখনো ব্রেট লির বাউন্সার সোজা মাঠের বাইরে ফেলেছেন, আবার কখনো সুনীল নারাইনকে পাঠিয়েছেন ডিপ স্কয়ার লেগের উপর দিয়ে গ্যালারীতে। সাত চার এবং দুই ছক্কায় ৬০ বলে অপরাজিত ১০৯ রানের ইনিংস খেলে দলকে লড়াকু এক সংগ্রহ এনে দেন রোহিত। সেদিন ২৭ রানে ম্যাচ জিতেছিল মুম্বাই।
- লেন্ডল সিমন্স
২০১৪ মৌসুমে ঘরের মাঠে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে পাঞ্জাব সেদিন দাঁড় করিয়েছিল ১৫৭ রানের মাঝারি লক্ষ্য। সবাই ভেবেছিল খানিকটা ধীরগতির পচে মুম্বাইকে জিততে হলে ঘাম ঝরিয়েই জিততে হবে। কিন্তু ব্যাট করতে নেমে সেদিন লেন্ডল সিমন্স একাই দেখিয়েছিলেন টি টোয়েন্টিতে ব্যাটিংটা কিভাবে করতে হয়!
ইনিংসের শুরু থেকেই আক্রমণাত্নক ব্যাটিংয়ে পাঞ্জাবের বোলারদের ব্যতিব্যস্ত করে তোলেন এই তারকা। শেষপর্যন্ত ১৪ চার এবং দুই ছক্কায় ৬১ বলে ১০০ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন সিমন্স। তাঁর ইনিংসের সুবাদেই কিনা এক ওভার বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নেয় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
- সুরিয়াকুমার যাদব
লেন্ডল সিমন্সের পর টানা আট মৌসুম মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে সেঞ্চুরির দেখা পাননি কোনো ব্যাটসম্যান। ইশান কিষাণ একবার কাছাকাছি গেলেও আউট হয়েছিলেন এক রান দূরে থাকতেই। অবশেষে গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে এবারের আসরে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে মুম্বাইয়ের ব্যাটারদের সেঞ্চুরি খরা কাটালেন সুরিয়াকুমার যাদব।
ওয়াংখেড়েতে এদিন যেন নিজের সেরা ছন্দে ছিলেন এই তারকা। প্রতিপক্ষ দলে রশিদ খান, নূর আহমেদ কিংবা মোহাম্মদ শামিরা থাকলেও কেউই বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি। বরং উইকেটের চারপাশে অনবদ্য সব শট খেলে সবাইকে মুগ্ধ করেছেন সুরিয়াকুমার যাদব।
ইনিংসের শেষ বলে দুর্দান্ত এক ছক্কা হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেয়া সুরিয়া অপরাজিত ছিলেন ৪৯ বলে ১০৩ রানে। দুর্দান্ত এই ইনিংস খেলার পথে ১১ চার এবং ছয়টি ছক্কা হাঁকান এই তারকা।