একটা মৃদু ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। মূলত ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়েও যে ধুম্রজালের সূত্রপাত। তবে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি অবশ্য ধোঁয়াশার আলো জ্বালিয়ে রেখেছিলেন অনেক আগেই। তবুও খানিকটা দ্বিধাগ্রস্ত হওয়া যেন অবধারিত। তাতে বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি মূলত আয়োজিত হয়ে থাকে সেরা আট দল নিয়ে। পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে র্যাংকিংয়ে শীর্ষ আট দলকে নিয়ে আয়োজিত হয়েছে বহুজাতিক এই টুর্নামেন্ট। আট দল দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে অংশ নিয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-তে। দুই গ্রুপের সেরা দুই দল মুখোমুখি হতো সেমিফাইনালে। এরপর যথারীতি ফাইনাল।
এই নিয়মে অবশ্য নড়চড় হয়নি। তবে ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাছাইয়ের জন্যে বেছে নেওয়া হয়েছে ২০২৩ বিশ্বকাপ। এই বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলের সেরা সাত দল সেই সাথে আয়োজক হিসেবে পাকিস্তানকে নিয়ে হবে ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।
অর্থাৎ চলমান বিশ্বকাপের শীর্ষ সাতের মধ্যে থাকতেই হচ্ছে দলগুলোকে ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিতব্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার যোগ্যতা অর্জনে। তাতে করে অবশ্য খানিকটা অবিচারই করা হয় এবারের বাকি থাকা পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর সাথে।
কেননা ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ডের মত দলগুলো এবারের বিশ্বকাপের অংশগ্রহণ করতে পারেনি। স্রেফ সে কারণেই তারা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাছাইয়ে অংশগ্রহণই করতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে বিনা প্রতিযোগিতায় আরও একটি বহুজাতিক টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাচ্ছে পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়া ওই তিন দল। সেটা খানিকটা ক্রিকেটের সৌন্দর্যই বরং খর্ব করছে।
যদিও আইসিসি বলছে ২০২১ সালে হওয়া বোর্ড সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২৪-২০৩১ চক্রের জন্যে নির্ধারিত কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এমন সিদ্ধান্ত সম্মতি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন আইসিসির বেশকিছু দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ।
তাছাড়া ২০২৭ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে ১৪ দল নিয়ে। সেখানে আয়োজক দেশ হিসেবে জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও র্যাংকিংয়ের সেরা আট দল সুযোগ পাবে। মোট দশ দল সরাসরি অংশ নেবে ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে। বাকি থাকা চার দল বাছাই করা হবে বাছাইপর্বের মধ্য দিয়ে। ৩১ মার্চ ২০২৭ পর্যন্ত র্যাংকিংয়ে সেরা দশের মধ্যে থাকলেই মিলে যাবে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ।
তখন হয়ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্যে বাছাই পর্ব হিসেবে বিশ্বকাপকে ব্যবহার করাটা যথার্থই হবে। তবে এদফা বেশ বিপাকেই পড়তে হচ্ছে বিশ্বকাপের বাইরে থাকা পূর্ণ সদস্যদের। তাছাড়া সম্ভাবনাও বেশ প্রবল ইংল্যান্ড ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি মিস করবার।
কেননা এবারের বিশ্বকাপে এখন অবধি দশ নম্বরেই অবস্থান করছে ইংল্যান্ড। নয় নম্বর পজিশনটা দখলে রেখেছে বাংলাদেশ। সুতরাং এই দুই পূর্ণ সদস্যকে ছাড়াও আয়োজিত হতে পারে ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তবে তেমনটি হোক তা চান না বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
এবারের বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার আগে তিনি ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে নিজের ক্যারিয়ারের শেষ টুর্নামেন্ট হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন। এবারের বিশ্বকাপটা মোটেও ভাল যায়নি বাংলাদেশের। সাকিব আল হাসানও রয়েছেন নিজের ছায়া হয়ে। সেখান থেকে বেড়িয়ে বাংলাদেশের এখন মূল লক্ষ্য ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা অর্জন।
সেজন্য বাংলাদেশকে বিশ্বকাপ শেষ করতে হবে অন্তত অষ্টম অবস্থানে থেকে। সেদিকটায় নজর রাখছেন সাকিব। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে এ বিষয়ে বলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে হলে আপনাকে সেরা আটে থাকতে হবে। সে দিকটা মাথায় রেখে এখনও আমাদের হাতে তিনটি ম্যাচ রয়েছে।’