পড়ন্ত বেলার নায়কেরা

ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় সিংহভাগ ক্রিকেটারেরই ভাগ্য অতটা সুপ্রসন্ন হয় না। কেউ কেউ তো আবার অফফর্মের দরুনে মাঠ থেকেই বিদায় নেওয়ার সুযোগটা পর্যন্ত পান না। তবে ক্রিকেট ইতিহাসে এমন কিছু ক্রিকেটারও রয়েছে যাদের ‘শেষ’টা হয়েছে নায়কোচিত রূপে। খেলা ৭১ খুঁজে নিয়েছে এমনই ৩ জন ক্রিকেটারকে যারা নিজেদের ক্যারিয়ারের শেষ ওয়ানডে ম্যাচে হয়েছিলেন ম্যাচসেরা। চলুন দেখে নেওয়া যাক।

  • ডেসমন্ড হেইন্স (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) 

ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ওপেনিং জুটির তালিকা করলে গর্ডন গ্রিনিজ-ডেসমন্ড হেইন্স জুটির স্থানটা সবার ওপরেই থাকবে। তবে ডেসমন্ড হেইন্স কিছুটা এগিয়ে থাকবেন ওয়ানডে ক্রিকেটে। ১৯৯৪ সালে যখন ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানান, তখন এই ফরম্যাটে কারো রানই তাঁর চেয়ে বেশি ছিল না। কেউ তাঁর চেয়ে বেশি ওয়ানডেও খেলেননি। এমনকি সেঞ্চুরির সংখ্যার দিক থেকেও তিনি ছিলেন সবার আগে।

ক্যারিবিয়ান এই কিংবদন্তির শেষটাও হয়েছিল দুর্দান্ত। ১৯৯৪ সালে ত্রিনিদাদে ক্যারিয়ারের শেষ ওয়ানডে ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শতক হাঁকিয়েছিলেন তিনি। ১১৫ রানের ইনিংসের সৌজন্যে সে ম্যাচে ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠেছিল তাঁর হাতে। তবে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে এই কীর্তি বাদেও আরেকটি রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেটে হেইন্সই প্রথম ব্যাটার যিনি অভিষেক ও শেষ ম্যাচ, দুটিতেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন।

  • ডেভিড উইলি (ইংল্যান্ড)

গত ৪ বছরে ইংল্যান্ডের সাদা বলের ক্রিকেটে নিয়মিত মুখ ছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারে সেভাবে নিজেকে পূর্ণতা দিতে পারেননি। তবে ইংল্যান্ডের হয়ে একদিনের ক্রিকেটে ঠিক শত উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েই বিদায় জানিয়েছেন ডেভিড উইলি।

ইংলিশ এই বোলার আগেই জানিয়েছিলেন, ২০২৩ বিশ্বকাপের পরেই অবসরে যেতে চান তিনি। থ্রি লায়ন্সদের জার্সিতে তাই পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটাই হয়ে গিয়েছিল তাঁর শেষ শেষ ম্যাচ। আর নিজের এই বিদায়ী ম্যাচেই ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান উইলি। পাকিস্তানের তিন গুরুত্বপূর্ণ উইকেট শিকারের পাশাপাশি ব্যাট হাতে করেছিলেন ১৫ রান।

  • ইরফান পাঠান (ভারত) 

ভারতের হারানো ক্রিকেট তারকাদের মধ্যে ইরফান পাঠান অন্যতম। মাত্র ১৮ বছর বয়সে পাকিস্তানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে ভারতের ক্রিকেট পাড়ায় দারুণ এক সম্ভাবনার গল্প লিখেছিলেন তিনি। তবে পরবর্তীতে ইনজুরি ও অফ ফর্ম সেই সম্ভাবনার অপমৃত্যুর কারণ হয়ে হয়ে দাঁড়ায়। যতটা প্রতিভা নিয়ে জাতীয় দলে এসেছিলেন, তার সামান্য অংশই মেটাতে পেরেছিলেন।

তবে শেষটা রাঙিয়েছিলেন দারুণ ভাবে। ২০১২ সালে পাল্লেকেলেতে খেলেছিলেন ক্যারিয়ারে শেষ ওয়ানডে ম্যাচ। আর সে ম্যাচেই ব্যাট হাতে ২৯ রান ও বল হাতে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন ইরফান পাঠান। পাঠানের এমন অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সের ভারতও সেই ম্যাচসহ সিরিজ জিতেছিল ৪-১ ব্যবধানে।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link