নারী ক্রিকেটে বিজয়ের ঐতিহাসিক শুভেচ্ছা

বিজয় দিবস উদযাপনে সারাদিন ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে বাংলাদেশের মানুষেরা। কিন্তু ক্লান্ত শরীরে বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ মিললো না, মাঝরাতে আরো একবার আনন্দে ভাসতে হলো সবাইকে। কেননা বিজয়ের দিন দক্ষিণ আফ্রিকা জয় করেছে বাংলার বাঘিনীরা। মুর্শিদা খাতুনের ব্যাটে চড়ে বিশ্বের আরেকপ্রান্তে ইতিহাস গড়েছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।

আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার। তাঁদের দারুণ ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লে-তে কোন উইকেট না হারিয়ে ৫৬ রান জমা হয় স্কোরবোর্ডে। পনেরোতম ওভারে শামীমা সুলতানাকে আউট করে দলকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন এলিজ মারি ম্যাক্স, এরপরই ক্রিজে আসেন মুর্শিদা। শুরুতে ফারজানা হককে নিয়ে ৪৪ রানের জুটি গড়েন তিনি।

দলীয় ১১০ রানে ফারজানা ফিরলে অধিনায়ক নিগার সুলতানাকে সঙ্গী করে ছুটতে থাকেন এই ইনফর্ম ব্যাটার। দুজনের ৮০ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পায় সফরকারীররা, ৩৮ রান করে জ্যোতি আউট হলে ভাঙে সেই জুটি। ততক্ষণে অবশ্য হাফ সেঞ্চুরি পেয়ে গিয়েছেন মুর্শিদা, তবে এতটুকুতেই সন্তুষ্ট না হয়ে বড় রানের দিকে এগিয়ে যান তিনি।

শেষপর্যন্ত তাঁর অপরাজিত ৯১ রানের ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভারে ২৫০ রানের পুঁজি পায় টিম বাংলাদেশ। শেষ দিকে ভাগ্য সহায়তা করলে হয়তো সেঞ্চুরিও পেয়ে যেতেন এই বাঁ-হাতি, তাতে দলের রানও বাড়তো খানিকটা।

যদিও বোলারদের নৈপুণ্যে ২৫১ রানের টার্গেট পাহাড়সম হয়ে দাঁড়ায় প্রোটিয়াদের জন্য। মাত্র দ্বিতীয় ওভারে স্বাগতিক অধিনায়ক লরা উলভারডটকে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন সুলতানা খাতুন, পরের ওভারে ওপেনার তাজমিন ব্রিটসকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন পেসার মারুফা আক্তার। বিপর্যয় সামলে সেখান থেকে প্রতিরোধ গড়েন অ্যানেকা আর লুস।

তবে সেটাও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি নাহিদা আক্তারের ঘূর্নিতে, পরপর দুই উইকেট তুলে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের আশা শূণ্যের ঘরে নিয়ে আসেন তিনি। তাঁর সাথে যোগ দেন তরুণ রাবেয়া খান, এই লেগ স্পিনারও তুলে নেন দুই উইকেট; ফাহিমা খাতুনও বিরত রাখতে পারেননি নিজেকে, আক্রমণে এসেই জোড়া আঘাত হেনেছেন প্রতিপক্ষ শিবিরে।

কার্যত ম্যাচ তখনই শেষ হয়ে গিয়েছিল, তবু ম্যাক্স লড়েছেন শেষ পর্যন্ত। দশম ব্যাটার হিসেবে আউট করার আগে করেছেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৫ রান, তবে সেটা কেবল পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link