একটা বোলিং স্পেল, ধ্বংসাত্মক একটা স্পেল। ফরচুন বরিশালের অভিজ্ঞতার সকল মূর্তিকে ভেঙে চুরমার করে দিলেন কার্টিস ক্যাম্ফার। তার বোলিং সত্ত্বায় জয়ের ক্ষীণ আশাও একেবারে ধূলিসাৎ হয় বরিশালের। এর আগে ব্যাট হাতে ৯ বলে ২৯ রানের এক চোখ ধাঁধানো ক্যামিও। আর তাতেই ম্যাচ জয়ের অন্যতম নায়ক বনে যান আইরিশ এই ক্রিকেটার।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের দেওয়া ১৯৪ রানের লক্ষ্যমাত্রায় ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরুই পায় ফরচুন বরিশাল। তার প্রধান কৃতীত্ব নতুন সংযুক্ত হওয়া আহমেদ শেহজাদ। তার দূর্ধর্ষ ব্যাটিংয়ের কল্যাণে জয়ের স্বপ্ন বুনতে শুরু করে বরিশাল। শেহজাদের মারকাটারি ব্যাটিংয়ে ভর করে প্রথম পাওয়ার প্লে-তে ৬০ রান জমা হয় বরিশালের স্কোরবোর্ডে।
তবে শেহজাদ নিজের ইনিংসটি খুব একটা বড় করতে পারেননি। দ্রুতই থামতে হয়েছে তাকে। তার প্রস্থানের পরই শুরু হয় ‘দ্য ক্যাম্ফার শো’। বরিশালের টপ অর্ডার থেকে শুরু করে মিডল অর্ডার, পুরোটা জুড়েই চলে ক্যাম্ফারের আগ্রাসন। দুই ওভারের ব্যবধানে চার উইকেট শিকার করেন, ডানহাতি এই অলরাউন্ডার।
শুরুটা তিনি করেন তামিম ইকবালকে দিয়ে। স্লোয়ার বলে কাবু করেন দেশসেরা ওপেনারকে। লং অনে আটক তামিম। এর ঠিক দুই বল পরেই সৌম্য সরকারও ধরেন প্যাভিলনের পথ। ক্যাম্ফারের আরও একটি স্লোয়ার বলের শিকার সৌম্য।
সেখানেই থেমে থাকেননি ক্যাম্ফার। তিনি যেন চেয়েছেন বল হাতে চট্টগ্রামের জয়ের নায়ক হতে। এক ওভার পরেই তার হাতে আবার বল তুলে দেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক শুভাগত হোম। সেই আস্থার প্রতিদান দিতে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি আইরিশ অলরাউন্ডার। নিজের দ্বিতীয় ওভারে আরও দুইটি উইকেট শিকার করেন ক্যাম্ফার।
সেই দুইটিও এসেছে স্লোয়ার বলে। ১৩ তম ওভারের প্রথম বলেই ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। নতুন ব্যাটার হিসেবে মাঠে আসেন ইয়ানিক ক্যারিয়াহ। এসেই ক্যাম্ফারের বলে বাউন্ডারি আদায় করে নেন তিনি। সেটা সম্ভবত পছন্দ হয়নি ক্যাম্ফারের। তাইতো ইয়ানিকের দিকে ছুড়ে দেন নিজের সেই কার্য্যকর অস্ত্র।
আরও একটি স্লোয়ার বল। ইয়ানিক সম্ভবত ব্যাটে বল আসবে, সে প্রত্যাশাই করেছিলেন। তবে নিজের দিনে ক্যাম্ফার কেনই বা প্রতিপক্ষের প্রত্যাশা পূরণ করবেন। নিজের করা বলেই দূর্দান্ত এক ক্যাচ লুফে নেন ক্যাম্ফার। সেখানেই যেন শেষ হয় ফরচুন বরিশালের জয় ভাগ্য।
নিজের বলেই ক্যাচ ধরা ছাড়াও আরও তিনটি ক্যাচ নিজের হাতে জমা করেছেন ক্যাম্ফার। শেহজাদ, তামিম ও মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যাচগুলোও নিজের দখলে নিয়েছেন। এর আগে দুই ছয় ও তিন চারে ২৯ রানের ক্যামিও খেলেন ক্যাম্ফার। সে ইনিংসে ভর করেই ১৯৩ রানের সংগ্রহ পায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। নিজের দিনে ঠিক কতটুকু কার্য্যকর কার্টিস ক্যাম্ফার, সে উদাহরণই রেখেছেন তিনি, সিলেটের বুকে।