একটা শক্ত ভীতের উপর দাঁড়িয়ে জিমি নিশাম খেলে গেলেন ঝড়ো এক ইনিংস। ঠিক বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন কেন বিদেশী মানসম্মত খেলোয়াড়দের প্রয়োজন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের মঞ্চে। তার দ্রুতগতির অর্ধশতকের কল্যাণেই যে এবারের বিপিএলে প্রথমবারের মত দলীয় সংগ্রহ পেরিয়েছে ২০০ রানের গণ্ডি।
চট্টগ্রামে যাওয়ার আগে রংপুর রাইডার্সের শেষ ম্যাচ। একাদশে যুক্ত হলেন চার নতুন বিদেশি। তাদেরই একজন নিউজিল্যান্ডের অলরাউন্ডার জিমি নিশাম। রিজা হেনড্রিকস এদিন দারুণ একটা শুরু এনে দিয়েছেন রংপুর রাইডার্সকে। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাটিং করবার সিদ্ধান্তের যথার্থতাই প্রমাণ করেছেন প্রোটিয়া ব্যাটার।
তিনি একটা বড় রানের স্বপ্ন দেখিয়ে গেছেন রংপুরকে। তিনিও ফিফটি করেছেন প্রায় ১৪১ স্ট্রাইকরেটে। তার সেই সাবলীল ব্যাটিংয়ের ধারা ছড়িয়ে পরে রংপুরের গোটা ব্যাটিং অর্ডারে। রনি তালুকদার, সাকিব আল হাসানরাও ব্যাট চালিয়েছেন দ্রুততার সাথে। তবে রিজা ও সাকিবের ৬০ রানের জুটির পতনের পর খানিকটা ধাক্কা খায় রাইডার্স শিবির। সাকিবের বিদায়ের পর রিজাও ফিরে যান অল্প সময়ের ব্যবধানে।
এরপর খানিকটা রানের গতি স্লথ হয়েছিল বটে। তবে জিমি নিশাম স্লথ হওয়া সময়ে নিজেকে থিতু করেছেন হোম অব ক্রিকেটের বাইশ গজে। খানিক বাদেই তিনি ব্যাট চালিয়েছেন দারুণ গতিতে। কার্টিস ক্যাম্ফারকে থার্ড ম্যান অঞ্চল দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরু। এরপর গুণে গুণে আটবার বলকে সীমানার বাইরে পাঠিয়েছেন। তিনবার তো বল পেয়েছে হাওয়ার দেখা।
ইনিংসের শেষ বলে লং অফ দিয়ে ফ্ল্যাট ছক্কা হাঁকিয়ে নিজের অর্ধশতক পূর্ণ করেন নিশাম। মাত্র ২৬ বলে নিজের ব্যক্তিগত অর্ধশতকের দেখা পেয়ে যান নিশাম। ব্যাট করেছেন প্রায় ১৯৬ এর বেশি স্ট্রাইকরেটে। তবে তার এই ধ্বংসাত্মক ইনিংস বহু আগেই শেষ হয়ে যেতে পারত। যদি জশ ব্রাউন তার ক্যাচটা না ফেলে দিতেন।
ইনিংসের ১৭ তম ওভারের তৃতীয় বলে ডিপ মিডউইকেটে নিশামের ক্যাচ লুফে নিতে ব্যর্থ হন ব্রাউন। ঠিক এরপরই যেন জ্বলে ওঠেন নিশাম। দ্বিতীয় জীবন প্রাপ্তির পরিপূর্ণ ফায়দাই তুলেছেন নিশাম। ততক্ষণ অবধি নিশামের ব্যক্তিগত রান ছিল ১০ বলে ৯। ঠিক এর পরবর্তী ১৬ বলে নিশাম তুলেছেন ৪২ রান। এই সময়ে তার স্ট্রাইকরেট ছিল প্রায় ২৬২।
শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেই মাঠ ছেড়েছেন ব্ল্যাকক্যাপস এই তারকা। দারুণ এই ইনিংসের বদৌলতে রংপুর রাইডার্সের স্কোরবোর্ডে জমা হয় ২১১ রান। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের জন্যে লক্ষ্যমাত্রা গিয়ে দাঁড়ায় ২১২। তা নিশ্চয়ই পাহাড়ের থেকে কম কিছু নয়।