পান্তের ফেরা এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র

উইকেটের পেছন থেকে প্রতিপক্ষকে ক্রমাগত স্লেজিং, আনঅর্থোডক্স ব্যাটিং, গ্যাবায় ঐতিহাসিক টেস্ট জয়। এসব কিছু মিলিয়ে ঋষাভ পান্ত হয়ে উঠেছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটে এক নতুন আগ্রহ।

তাকে, ঘিরে ভক্ত-সমর্থকদের থেকে শুরু করে টিম ম্যানেজমেন্ট, এমনকি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ছিল বেশ আশাবাদী। তবে হঠাৎ করেই ঘটে যায় অনাকাঙ্ক্ষিত এক দুর্ঘটনা। তবে সে সময়টাকে পেছনে ফেলে আবারও ময়দানে ফিরছেন ঋষাভ পান্ত।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন ভারতীয় এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ভষ্ম হয়ে গিয়েছিল তার সখের গাড়ি। তার করুণ অবস্থা দেখে সবাই ধরেই নিয়েছিল তিনি আর ফিরবেন না ক্রিকেটে। ইনজুরি যে তার ছিল বেশ কয়েকটি।

ডান হাঁটুর লিগামেন্ট, হাতের কবজি, পায়ের গোড়ালি- সেই দুর্ঘটনা একেবারে দুমড়ে-মুচড়ে দেয় পান্তকে। তার লিগামেন্ট পুনর্গঠনের জন্য করা হয়েছিল অস্ত্রাপচার। সেই অস্ত্রপচার শেষে তিনি ফিরবেন ফিট হয়ে তেমন সম্ভাবনা থাকলেও, ভরসা ছিল না। অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ যেন এসেই গেছে।

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব জয় শাহর বক্তব্যের একদিন পরেই ঋষাভকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে ফিটনেস ছাড়পত্র। আসন্ন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) শুরু থেকেই থাকছেন ঋষাভ পান্ত। এমনকি ভারতের ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন থেকে উইকেটকিপিং করবার অনুমতিও মিলেছে ঋষাভের।

ঋষাভের এই ছাড়পত্র আসার পূর্বে জয় শাহ বলেছিলেন, ‘সে ব্যাটিং ও কিপিং ভালভাবেই করছে।’ শুধু তাই নয়, জয় শাহ আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ঋষাভের জন্য জাতীয় দলের দরজা খোলাই রেখেছেন।

তিনি বলেন, ‘যদি সে আমাদের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে পারে তাহলে সেটা বিশাল এক ব্যাপার আমাদের জন্য। সে আমাদের এক বড় সম্পদ। যদিও সে কিপিং করতে পারে তাহলে সে বিশ্বকাপে খেলবে, দেখা যাক আইপিএলে সে কি করে।’

সুতরাং জাতীয় দলে ফেরার রাস্তাটা খুব একটা সংকীর্ণ নয় ঋষাভের জন্য। তবে তাকে প্রমাণ করতে হবে। আইপিএলের মঞ্চে ব্যাট হাতে নয় স্রেফ, দস্তানা হাতেও দেখাতে হবে মুন্সিয়ানা। তার অবশ্য বিশেষ সমস্যার হওয়ার কথা নয়। কেননা তিনি যে লড়াই করতে জানেন।

সেই ভয়াবহ ইনজুরি কাটিয়ে মাঝের সময়টুকুতে তিনি পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেছেন। বিগত কয়েকদিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে ২০ ওভারের ম্যাচও খেলেছেন তিনি। সেখানে ব্যাট হাতে পারফর্ম করেছেন। তাছাড়া এনসিএ ফিজিও প্রতিটা মুহূর্ত তাকে মনিটরিং করেছেন। ব্যাটিং করবার সময় কোন ব্যথা অনুভূত হয়নি বলেই তিনি অবশেষে পেয়েছেন ছাড়পত্র।

তবে উইকেটকিপিং তিনি এখনই করতে পারবেন কি-না সেটা নিয়ে মৃদু সংশয় আছে। যদিও ঋষাভ নাছোড়বান্দা। তিনি হয়ত আইপিএলের প্রথম ম্যাচেই দস্তানা হাতে নেমে যাবেন। জেদ না থাকলে তো আর সেই দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এত দ্রুতই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হতো না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link