অপেক্ষার পালা শেষ। ওয়ানডের পর আজ দীর্ঘ এক বছর বিরতি দিয়ে টেস্ট খেলতে নামছে বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম টেস্টে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহম্মেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ৯.৩০ মিনিটে।
গত কয়েক দিন ধরে আলোচনা ছিলো, টেস্টে বাংলাদেশ ঠিক কী কৌশল নেবে ওয়েস্টেইন্ডিজের বিপক্ষে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ দল অলআউট স্পিন আক্রমনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চার স্পিনার খেলছেন দলে। এর পাশে একমাত্র পেসার হিসেবে খেলছেন মুস্তাফিজুর রহমান। আর চার স্পিনার হলেন সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
বাংলাদেশ সর্বশেষ টেস্ট খেলেছিলো গত বছর ফেব্রুয়ারিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। শেষ টেস্টের একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন সাইফ হাসান, মোহাম্মাদ মিথুন ও এবাদত হোসেন। দীর্ঘ দিন পর টেস্ট একাদশে জায়গা পেয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। আইসিসির নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আজ টেস্টেও প্রত্যাবর্তন হচ্ছে সাকিব আল হাসানের।
অন্য দিকে প্রথম সারির ক্রিকেটাররা না আসাতে অনভিজ্ঞ দল নিয়েই মাঠে নামছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আজকের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একাদশের ৩ জন ক্রিকেটারের অভিষেক হচ্ছে।
২০১৮ সালে দুই টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চার ইনিংসের ৪০ উইকেটের প্রতিটাই শিকার করেছিলেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। সিরিজে সাকিব আল হাসান ৯ উইকেট, মেহেদী হাসান মিরাজ ১৫ উইকেট, নাইম হাসান ৬ উইকেট ও তাইজুল ইসলাম শিকার করেছিলেন ১০ উইকেট। এই ম্যাচেও একাদশে রয়েছেন চার স্পিনারই। বোলিংয়ে চার স্পিনারের সাথে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে মুস্তাফিজুর রহমানও।
বাংলাদেশের হয়ে ব্যাট হাতে ওপেনার তামিম ইকবালের সাথে যথারীত ফ্রন্ট লাইটে থাকবেন মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। মন্থর উইকেটেও এই তিন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলার নজির রয়েছে। এছাড়া সাদমান ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাসের উপরও চোখ থাকবে সবার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই দলটা অনভিজ্ঞ হলেও কেমার রোচ, ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও গ্যাব্রিয়েলের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও রয়েছে তাদের একাদশে। ক্যারিবিয়ানরা তাকিয়ে থাকবে এদের দিকেই। এছাড়া তরুণ ক্রিকেটাররাও মুখিয়ে আছেন নিজেদের প্রমাণ করার জন্য।
বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন পর্যন্ত ৯ টি টেস্ট সিরিজ খেলেছে। এর ভিতর ৭ টি সিরিজ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ২ টি সিরিজ বাংলাদেশ জিতেছে। দুই দল এর আগে ১৬ টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১০ টি জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় ৪ টি। বাকি দুটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। তবে সর্বশেষ ২ টেস্টে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট লড়াইয়ে সর্বোচ্চ রান ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া শিবনারায়ণ চন্দ্ররপালের। ১০ ম্যাচে ৮৯৭ রান করেছেন এই ব্যাটসম্যান। ৭৫০ ও ৭৪৫ রান নিয়ে যথাক্রমে পরের অবস্থানে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। ৬৬৮ রান নিয়ে এরপরের অবস্থানেই রয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। দুই দলের লড়াইয়ে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকেও এসেছে ৬৫৮ রান।
দুই দলের লড়াইয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ উইকেট শিকার করেছেন সাকিব আল হাসান। ৩৩ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন ক্যারিবিয়ান পেসার কেমার রোচ। একাদশে থাকা মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম শিকার করেছেন যথাক্রমে ২৫ ও ২১ উইকেট।
বাংলাদেশ একাদশ : তামিম ইকবাল, সাদমান ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), মেহেদী হাসান মিরাজ, নাঈম হাসান, তাইজুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ: ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (অধিনায়ক), জন ক্যাম্পবেল, এনক্রুমাহ বোনার, জার্মেইন ব্ল্যাকউড, জসুয়া ডি সিলভা (উইকেটরক্ষক), শেন মসলেই, কাইল মায়ার্স, রাকিম কর্নওয়াল, জোমেল ওয়ারিকেন, কেমার রোচ এবং শ্যানন গ্যাব্রিয়েল।