২০২৩ সালে যখন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএলে) ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নিয়ম চালু করা হয় তখন রোমাঞ্চের সৃষ্টি হয়েছিল। এই নিয়ম অনুযায়ী দলগুলো মূল একাদশের বাইরে পাঁচজনকে বদলি হিসেবে রাখতে পারবে এবং এই পাঁচজনের মধ্যে একজনকে একাদশের যে কারো পরিবর্তে মাঠে প্রবেশ করানো যাবে।
বদলি খেলোয়াড় হওয়া সত্ত্বেও সে একাদশের বাকিদের মতই ব্যাটিং বা বোলিং করার অধিকার রাখে। অনন্য এই নিয়ম প্রতিষ্ঠার পর আইপিএলের একটি আসর শেষ হয়েছে, চলতি বছরও কয়েকটি ম্যাচ ইতোমধ্যে শেষ।
কিন্তু, শুরুতে এটিকে যত কার্যকর মনে হয়েছিল এখন তত কার্যকর মনে হচ্ছে না। কেননা আইপিএলের মত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বা অন্য কোন ফ্রাঞ্চাইজি লিগে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ সুবিধা নেই।
অর্থাৎ জাতীয় দলে ঠিকই অলরাউন্ডারের প্রয়োজন পড়ে ভারতের, কিন্তু সুপার সাবের ব্যবস্থা থাকায় আইপিএলে এখন অলরাউন্ডারের গুরুত্ব ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। বিশেষ করে পার্ট টাইম বোলাররা এখন আর হাত ঘুরানোর সুযোগ পাচ্ছেন না, কেননা ব্যাটিং করার পরেই তাঁদের পরিবর্তে বিশেষজ্ঞ কোন বোলারকে নামানো হচ্ছে।
গত আইপিএলের মাঝপথেই অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার, কোচ এবং দেশি-বিদেশি ক্রিকেটবোদ্ধারা এই নিয়মের সমালোচনা করেছিলেন। ধীরে ধীরে সাধারণ ভক্ত-সমর্থকদেরাও বুঝতে পারছে সুপার সাব নিয়মের অসুবিধাগুলো।
এই যেমন অমিত মিশ্রার মত বুড়িয়ে যাওয়া বোলার কেবল চার ওভার হাত ঘুরিয়ে ডাগ আউটে বসে থাকতে পারছেন; তাঁকে ফিল্ডিং বা ব্যাটিং করতে হচ্ছে না। আবার পৃথ্বী শ এর মত আনফিট ব্যাটার শুধু ব্যাটিং করেই বিশ্রামে চলে যাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কিন্তু কোন দলকে এমন সুযোগ দিবে না, তাই তো ফিটনেস বা বয়স লুকিয়ে রাখার কোন সুযোগ নেই।
অর্থাৎ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভাল করতে মানসম্পন্ন অলরাউন্ডার প্রয়োজন টিম ইন্ডিয়ার। একটা সময় শচীন টেন্ডুলকার, সুরেশ রায়নার মত ব্যাটাররা ব্রেক থ্রু এনে দিতেন দলকে; কিন্তু সেই তুলনায় পার্ট টাইম বোলার নেই বললেই চলে।
সত্যি বলতে, আইপিএল ভারতীয় ক্রিকেটের উন্নতি করবে এমন ধারণা সত্য নয়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কেবল ২০০৭ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত, ২০১৪ সালে সর্বশেষ ফাইনাল খেলেছে।
আইপিএল যত বিস্তৃত হয়েছে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে রোহিত, বিরাটরা তত পিছিয়ে পড়তে শুরু করেছেন; ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের মত রঙিন নিয়ম এই পিছিয়ে পড়াকে হয়তো আরো ত্বরান্বিত করবে।