গত এক যুগে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ক্রিকেটের রূপরেখাই বদলে দিয়েছে। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলো ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়ালেও অনেকেই আতঙ্কিত ক্রিকেটের সৌন্দর্য নিয়ে। তবে, এর শুরুটা হয় একটা বিদ্রোহ থেকে।
তবে, ২০০৮ সালে আইপিএল হওয়ার আগে মাঠে গড়িয়েছিল ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ (আইসিএল)। সেই লিগে অংশ নিয়েছিল গোটা ক্রিকেট বিশ্বের অসংখ্য গ্রেট ক্রিকেটার। যদিও আইসিসি ও ক্রিকেট বোর্ডগুলো এই লিগটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। তবুও, এটা ঠিক যে ক্রিকেটের বদলে যাওয়ার শুরুটা সেই বিদ্রোহী লিগ দিয়েই।
- ব্রায়ান লারা (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন ব্রায়ান লারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ব্যাটিং গ্রেট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে না খেললেও খেলেছিলেন ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগে (আইসিএল)। আইসিএলে মুম্বাই চ্যাম্পসের হয়ে নাম লিখিয়েছিলেন এই ক্রিকেটার।
যদিও এই লিগে মুম্বাইয়ের দলটির হয়ে নিজের নামের সুবিচার করতে পারেননি লারা। সব মিলিয়ে দলটির হয়ে খেলেছিলেন ছয়টি ম্যাচ। সেখানে সর্বসাকুল্যে তাঁর ঝুলিতে আছে ৩১ রানে। এই লিগে তাঁর সর্বোচ্চ ১৫ রানের একটি ইনিংস রয়েছে।
- ইয়ান হার্ভে (অস্ট্রেলিয়া)
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই অলরাউন্ডারও নাম লিখিয়েছিলেন ভারতের এই লিগে। এই লিগে তিনি দুইটি দলের হয়ে খেলেছেন। চেন্নাই সুপারস্টার্স ও আইসিএল বিশ্ব একাদশের হয়েও খেলেছেন তিনি। সব মিলিয়ে এই আসরে তিনি খেলেছিলেন মোট ২৮ টি ম্যাচ। সবমিলিয়ে আইসিএলে তাঁর ঝুলিতে আছে ৭৫৩ রান। সর্বোচ্চ ৬৩ রানের একটি ইনিংসও এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে।
- মারভান আতাপাত্তু (শ্রীলঙ্কা)
শ্রীলঙ্কার সাবেক টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান মারভান আতাপাত্তুও খেলেছিলেন ভারতের এই লিগে। এই আসরে তিনি খেলেছিলেন দিল্লীর দু’টি দল দিল্লী জায়ান্টস ও দিল্লী জেন্টসের হয়ে। এছাড়া আতাপাত্তু আইসিএল বিশ্ব একাদশের হয়েও মাঠে নেমেছিলেন। সবমিলিয়ে এই ব্যাটসম্যান খেলেছিলেন ২৬ টি ম্যাচ। সর্বোচ্চ ৭৫ রানের অপরাজিত এক ইনিংস সহ তাঁর ঝুলিতে আছে মোট ৪৫৯ রান।
- ল্যান্স ক্লুজনার (দক্ষিণ আফ্রিকা)
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার ল্যান্স ক্লুজনার। দেশটির হয়ে ব্যাট , বল দুই ডিপার্টমেন্টেই সমান সফল এই ক্রিকেটার। আইসিএলেও তিনি তিনটি ভিন্ন দলের হয়ে মাঠে নেমেছেন। আইসিএল বিশ্ব একাদশ বাদেও তিনি খেলেছেন রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার্স ও কলকাতা টাইগার্সের হয়ে। এই আসরে ২৬ ম্যাচ খেলে তাঁর ঝুলিতে আছে মোট ৬৮৮ রান ও ২১ টি উইকেট।
- মোহাম্মদ রফিক (বাংলাদেশ)
বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা স্পিনার কে? – এই প্রশ্নের জবাবে আজো সবার আগেই আসে মোহাম্মদ রফিকের নাম।টেস্টের ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে শত উইকেটের মালিক মোহাম্মদ রফিকও নাম লিখিয়েছিলেন আইসিএলে। খেলেছেন ঢাকা ওয়ারিয়র্সের হয়ে। সেই দলে শাহরিয়ার নাফিস, আফতাব আহমেদ কিংবা অলোক কাপালির মত তারকারাও খেলতেন।
- নাথান অ্যাস্টল (নিউজিল্যান্ড)
নিউজিল্যান্ডের সাবেক এই ক্রিকেটারও খেলেছিলেন আইসিএলে। এই লিগে তিনি নাম লিখিয়েছিলেন মুউম্বাই চ্যাম্পসের হয়ে। ব্রায়ান লারার সাথে একই দলে খেলেছিলেন এই ক্রিকেটার। তবে এই আসরে তিনি ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ৫ টি। সেখানে ১৬.২০ গড়ে তাঁর ঝুলিতে আছে ৮১ রান।
- ড্যামিয়েন মার্টিন (অস্ট্রেলিয়া)
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ব্যাটসম্যান ড্যামিয়েন মার্টিনও আছেন আমাদের এই তালিকায়। এই লিগে তিনি আহামাবাদ রকেটস ও বিশ্ব একাদশের হয়ে। আইসিএলে খেলার পর আইপিএলেও রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে খেলেছিলেন এই ব্যাটসম্যান।
আইসিএলে ২২ ম্যাচ খেলে মার্টিনের ঝুলিতে আছে ৪৪৩ রান। এই লিগে তাঁর ৬৭ রানের সর্বোচ্চ একটি ইনিংস আছে। মার্টিন ছিলেন আহমেদাবাদ রকেটস দলের অধিনায়ক। সেখানে তাঁর সতীর্থ ছিলেন জাতীয় দলেও সতীর্থ হিসেবে থাকা জেসন গিলেস্পি। একই দলে ছিলেন জিম্বাবুয়ের হিথ স্ট্রিকও।
- হাবিবুল বাশার সুমন (বাংলাদেশ)
বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হাবিবুল বাশার সুমন। বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক টেস্ট ক্রিকেটে তিন হাজারেরও বেশি রানের মালিক। তিনিও আইসিএলে খেলার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। তাঁকে ঢাকা ওয়ারিয়োর্সের অধিনায়কও করা হয়।
- শেন বন্ড (নিউজিল্যান্ড)
নিউজিল্যান্ডের এই পেসারও নাম লিখিয়েছিলেন নিষিদ্ধ এই লিগে। আইসিএলে তিনি খেলেছিলেন দিল্লি জায়ান্টসের হয়ে। ওদিকে নিউজিল্যান্ডের হয়ে ১৮ টেস্ট, ৮২ ওয়ানডে ও ২০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। সেখানে তাঁর ঝুলিতে ছিল যথাক্রমে ৮৭, ১৪৭ ও ২৫ উইকেট।
- ইনজামাম উল হক (পাকিস্তান)
লাহোর বাদশাস নামে একটা দল ছিল আইসিএলে, যারা মূলত পাকিস্তানি ক্রিকেটার। অধিনায়ক ছিলেন সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক ইনজামাম উল হক। তারকাবহুল দলটির সবচেয়ে বড় তারকাও ছিলেন তিনিই। লাহোর ছাড়াও তিনি আইসিএলের পাকিস্তানি একাদশেও খেলেন।