শেষ ওভারের প্রথম বলটা যখন মাঠের বাইরে মেরেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি, তখন ইয়াশ দয়ালের স্মৃতিতে নিশ্চয়ই ফিরে এসেছিল রিংকু সিংয়ের পাঁচ ছক্কা। কিন্তু সময়ের সাথে মানুষ বদলায়, বদলেছেন এই পেসারও। তাই তো পরের পাঁচ বল থেকে স্রেফ এক রান আদায় করতে পেরেছিল ব্যাটাররা। সেই সাথে গত আসরে বিভীষিকাময় সময় কাটানো ইয়াশ গর্জে উঠলেন অসম কোন যুদ্ধে জিতে আসা সেনাপতির মতই।
১৮ই মে, চেন্নাইয়ের মুখোমুখি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। প্লে-অফে জেতে হলে ব্যাঙ্গালুরুকে মেলাতে হতো ১৮ এর সমীকরণ, অর্থাৎ আগে ব্যাট করলে জিততে হতো ১৮ রানে আর রান তাড়া করলে ১৮তম ওভারেই শেষ করতে হতো। এমন চাপ মাথায় নিয়ে অবশ্য সাফল্যের হাসি হেসেছে তাঁরা, চেন্নাইকে হারিয়েছে ২৭ রানে।
মহেন্দ্র সিং ধোনি বনাম বিরাট কোহলি, একটা ম্যাচের জনপ্রিয়তা আকাশসম হতে এতটুকুই যথেষ্ট। তার সাথে যোগ হয়েছিল প্লে-অফের জটিল সমীকরণ – তাই তো সমর্থক থেকে নিরপেক্ষ দর্শক সবার চোখ আটকে ছিল চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে। যদিও বহু রোমাঞ্চ আর নাটকীয়তা শেষে ধোনি বাহিনীকে কাঁদিয়ে সেরা চারে উঠে এসেছে স্বাগতিকরা।
ম্যাচের প্রথম থেকেই অবশ্য ফাফ ডু প্লেসিস আর কোহলির চোখেমুখে ছিল দৃঢ়তা। তাই তো আগ্রাসী মেজাজেই ব্যাটিং করেছিলেন তাঁরা, দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেয়ার কাজটা করেছিলেন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। মি.এইটিনের ব্যাট থেকে এসেছিল ২৯ বলে ৪৭ রান আর অধিনায়ক নিজে করেছেন ৩৯ বলে ৫৪ রান। বলাই যায়, জয়ের ভিত গড়ে উঠেছিল তাঁদের হাত ধরেই।
অথচ আট ম্যাচে এক জয়, সাত হার – টুর্নামেন্ট থেকে সিরাজ, ম্যাক্সওয়েলদের বিদায় তখন সময়ের অপেক্ষা কেবল। কিন্তু ক্রিকেট বরাবরই অনিশ্চিয়তার খেলা, বিধাতা সেটাই আরেকবার প্রমাণ করে দিতে চাইলেন। তাঁর আশীর্বাদেই বদলে গিয়েছে দলটি।
আসলে এর কৃতিত্ব একাদশের প্রত্যেককেই দিতে হয়। একটা দল হয়ে খেলতে পেরেছিল তাঁরা, সবাই সবার জায়গা থেকে অবদান রেখেছিল। চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ম্যাচের কথাই ধরা যাক – ব্যাটিংয়ে ক্যামেরন গ্রিন, রজত পতিদারের পর ম্যাক্সওয়েল, কার্তিকরাও গুরুত্বপূর্ণ ক্যামিও খেলেছেন; আবার ইয়াশ দয়ালের বুক কাঁপিয়ে দেয়া বিশতম ওভারের কথা ভোলা যাবে না অনেকদিন।