তেরোতম ওভারের প্রথম বল, লেগ সাইডে ফ্লিক করতে গিয়ে পরাস্ত হন ঋষাভ পান্ত; বল এসে লাগে হাতে। অনুমেয় ছিল পরের বলটাও একই জায়গায় ফেলে পরীক্ষা নিতে চাইবেন বোলার, অন্যদিকে ব্যাটার নিশ্চয় দেখে শুনে খেলবেন এমনটাই স্বাভাবিক। কিন্তু নামটা পান্ত বলেই স্বাভাবিক ঘটনা ঘটলো না, বরং একই লাইনে আসা পরের বলটা রিভার্স সুইপে ছক্কা – তিনি আসলে এমনই, আউট হবেন কিংবা পরাস্ত হবেন এসবের ধার ধারেন না।
২২ ডিসেম্বর, ২০২২ বাংলাদেশের বিপক্ষে সেদিন সবশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন ঋষাভ পান্ত। এরপর তাঁর জীবনের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে মরুঝড়, তবে সব প্রতিকূলতা জয় করে তিনি ফিরেছেন জাতীয় দলে, ফিরেছেন ভারতের নতুন ’নাম্বার থ্রি’ হয়ে। এতদিন পরেও নিজের দর্শনেই অটল ছিলেন, নিজের মত করে খেলেই দলকে জিতিয়েছেন।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে গুরুতর সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন এই ব্যাটার। প্রায় দেড় বছর মাঠের বাইরে কাটিয়ে ২০২৪ আইপিএল দিয়ে খেলায় ফিরেছিলেন তিনি। ভারতীয় টিম ম্যানেজম্যান্ট তখন থেকেই স্বপ্ন বুনেছিল তাঁকে নিয়ে, সেই স্বপ্ন আরো ডালপালা মেলেছে আইপিএলে তাঁর পারফরম্যান্সের সুবাদে।
তাই তো বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ঢুকতে কোন সমস্যাই হয়নি এই উইকেটকিপারের, আর কেন তাঁকে নিয়ে এত আগ্রহ সবার সেটার প্রমাণ দিতেও দেরি করেননি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফেরার দিন ২৬ বলে অপরাজিত ৩৬ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি, বোলিং স্বর্গ হয়ে উঠা একটা পিচে দলকে শুরু থেকে শেষ সময় পর্যন্ত পথ দেখিয়েছে তাঁর স্বভাবজাত ব্যাটিং।
মাত্র ১ রানে ওপেনার বিরাট কোহলি প্যাভিলিয়নে ফিরলে উইকেটে আসেন পান্ত, প্রথম দিকে একটু বুঝে শুনেই খেলেছেন। অসম বাউন্সি পিচে একটু নড়বড়ে হলেই আউট হতে হবে সেটা ভালোই জানা ছিল তাঁর, তাই তো মুহূর্তের জন্যও আইরিশ বোলারদের কোন সুযোগ দেননি তিনি।
ভারতের জন্য এক্স ফ্যাক্টর ভাবা হয় এই তারকাকে, দলটির ব্যাটিং লাইনআপে বৈচিত্র্য আনার কাজটাও করতে পারেন তিনি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সেটিই আরেকবার স্পষ্ট হয়েছে, এখন কেবল ধারাবাহিকতা দেখানো বাকি।