কমবেশি সবাইকে ‘মামা’ ডাকতে পারা বাঙালির ঐতিহ্য। সে বাড়ির সামনের দোকানি হোক, কিংবা হোক রেস্তোরার বেয়াড়া, কিংবা স্কুল গেটের দারোয়ান। এমনকি স্কুল-কলেজের বিজ্ঞান ল্যাবরেটরিতে কাজ করা টেকনিশিয়ানরাও এই ‘মামা’ ডাক শুনে অভ্যস্ত।
তেমনই একজন ‘ল্যাব মামা’ হলেন নশটাশ কেনজিজ। নামের উচ্চারণ এতটাই কঠিন যে, তাঁকে নাম ধরে না ডাকার চেয়ে ‘মামা’ ডাকাই শ্রেয়। তবে, তিনি বাঙালির মামা নয়। রীতিমত আমেরিকার মামা।
কিন্তু, আমেরিকা তো আর পাকিস্তানি ব্যাটারদের মামার বাড়ি নয়। তাই, সেখানে কোনো আবদার করা গেল না। কোনো মামির লাঠি আনার দরকার পড়ল না। খোদ মামাই এমন লাঠি নিয়ে আসলেন যে, ‘পালাই পালাই’ বলে দৌঁড় লাগালেন পাকিস্তানের তিন খান – উসমান, শাদাব ও আজম।
ডালাসের উইকেটে আমেরিকার সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন এই কেনজিজ মামা। তিনি চার ওভার বোলিং করে ৩০ রান দিয়ে নেন তিন উইকেট। পাওয়ার প্লে-তে আঘাত হানার পর পাওয়ার প্লে শেষে তিনি পরপর দুই বলে ফেরান শাদাব খান ও আজম খানকে। তাতে আবারও ম্যাচ ফেরে যুক্তরাষ্ট্র।
কিন্তু, প্রশ্ন হল, কেনজিজ কি করে ল্যাব মামা হলেন? কেনজিজ ভারতীয় বংশদ্ভুত হলেও জন্ম আমেরিকার অ্যালবামায়। বাবা কৃষি গবেষক। ভারতের কর্ণাটক থেকে এসেছেন পরিবার নিয়ে। যদিও, বয়স এক বছর হওয়ার আগেই কেনজিজকে ফিরতে হয় ভারতে। কর্ণাটকের চিক্কামাগালুরুতে কেনজিজদের কফির ফার্ম আছে।
তামিলনাড়ুর লরেন্স স্কুলে পড়াশোনা করেন কেনজিজ। স্কুল ক্রিকেট খেলেন ভারতে। ব্যাঙ্গালরুতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেটও খেলেন। যুক্তরাষ্ট্রে তিনি ফিরে আসেন ২০১৩ সালে। প্রথমে ভার্জিনিয়, এরপর নিউ ইয়র্ক। নিউ ইয়র্কে গিয়ে তিনি বনে যান ল্যাব মামা। দাপ্তরিক ভাষায় এই পদের নাম ‘বায়োলজিক্যাল টেকনিশিয়ান’।
আমেরিকার জাতীয় দলে ডাক পান ২০১৮ সালে। ওয়ানডে অভিষেক এর পরের বছর। টি-টোয়েন্টি অভিষেকের জন্য অপেক্ষা করতে হয় আরও পাঁচটি বছর। সর্বশেষ বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজেও দু’টি ম্যাচ খেলেছেন বাঁ-হাতি এই স্পিনার, তবে উইকেট পাননি।
যদিও, পাকিস্তানের বিপক্ষে সুযোগ পেয়েই তিন উইকেট। অথচ, গোটা টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তাঁর উইকেট সংখ্যা সবে মাত্র সাতে গিয়ে ঠেকলো। জীবন এভাবেই কখনও কখনও পাল্টে যায়।