মাঠের বাইরের গুঞ্জন তিনি খুব একটা পাত্তা দেন না। তবে, তাঁর জবাব দেন ঠিকই। সাকিব আল হাসানের ক্যারিয়ারে যারা ‘ফুলস্টপ’ বসিয়ে দিয়েছিলেন – তাঁদের জন্য দু:সংবাদ – সাকিব ফিরেছেন।
২০২২ সালের অক্টোবরের পর পেলেন টি-টোয়েন্টি হাফ সেঞ্চুরির দেখা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১৩ তম আর সব রকমের টি-টোয়েন্টিতে ৩২ তম বার ফিফটি করে সাকিবের ব্যাট বলে দিল – দ্য কিং ইজ ব্যাক।
যদিও, এই বার্তাটা যে আসবে – ম্যাচ শুরু হওয়ার আগেও সেটা বোঝার কোনো উপায় ছিল না। ম্যাচের আগে হালকা গা গরম। সাকিব আল হাসানের গলায় একটা নেক ব্রেস। নতুন কিছু নয়, গেল ওয়ানডে বিশ্বকাপেও সাকিবকে এই বস্তু গলায় দিয়ে রাখতে দেখা গেছে।
তাহলে কি নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মাঠে নামা হবে না সাকিবের? অন্য যেকোনো সময়, পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে এমন একটা সময় বাংলাদেশের ভক্তদের মনে শঙ্কা জাগাতো, টিম ম্যানেজমেন্টের কপালে এনে দিত দুশ্চিন্তার ভাঁজ।
তবে, এবারের চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বিষয়টা আলাদা। টুর্নামেন্টের শুরুর আগের থেকেই সাকিব ঘুরছেন নিজের ছায়া হয়ে।
নেদারল্যান্ডসের আগে, সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে মাত্র একবার একবার তিনি ব্যাট হাতে ছুঁতে পেরেছেন দুই অংক। উইকেট পেয়েছেন মাত্র একটা। বিশ্বকাপের মাঝপথেই আইসিসির সেরা টি-টোয়েন্টি অলরাউন্ডারের র্যাংকিংয়ে নেমে গেছেন পাঁচ নম্বরে।
সাকিবের জন্য বিশ্বকাপটা অনেকটা ২০১৯ সালে মাশরাফি বিন মুর্তজার ওয়ানডে বিশ্বকাপের মত হচ্ছে – এমনও বলছিলেন অনেকেই। সাবেক ক্রিকেটার থেকে বিশ্লেষক বনে যাওয়া বীরেন্দ্র শেবাগ সাফ বলে দিয়েছেন, সাকিবের অবসর নেওয়ার সময় চলে এসেছে।
সাকিব এর আগে নিষিদ্ধ হয়েছেন, বোর্ডের রোষাণলে পড়েছেন, আম্পায়ারের সাথে ঝামেলায় জড়িয়েছেন, তামিম ইকবালের সাথে তাঁর গণ্ডগোল খবরের শিরোনাম হয়েছে। কিন্তু, পারফরম্যান্সের দিক থেকে এত বাজে সময় ক্যারিয়ারে সম্ভবত আর আসেনি।
সাকিব সব দেখেছেন, সব শুনেছেন। আর সব কিছুর জবাব দেওয়ার জন্য ২২ গজকেই বরাবরের মত আদর্শ জায়গা হিসেবে বেছে নিলেন তিনি। কিংসটাউনের আর্নস ভ্যালে ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ১১ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরার দিনটা লেখা হয়ে গেল সাকিবের নামে।
শেষ অবধি ৪৬ বলে ৬৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন সাকিব। প্রায় ১৪০ স্ট্রাইক রেটের এই ইনিংসে ছিল নয়টি চার। এবার হয়তো সাকিবকে নিয়ে মাঠের বাইরের সমালোচনা কিছুটা হলেও কমবে!