বিশ্বকাপে নাকি রান নেই। সেই রানটা কিভাবে তুলতে হয় দেখিয়ে দিলেন রোহিত শর্মা। সেঞ্চুরির স্বপ্ন দেখিয়েও পারেননি অবশ্য। তবে, এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাত্র ৪১ বল খেলে করেছেন ৯২ রান।
দুই ওভারে ছয় রান, প্যাভিলিয়নে ফিরে গিয়েছেন বিরাট কোহলি। ভারতের ওপর কতটা আধিপত্য বিস্তার করেছিল অস্ট্রেলিয়া, সেটা স্পষ্ট বোঝাই যায়। কিন্তু সব চাপ নিমিষেই উড়ে গিয়েছে রোহিত শর্মার ব্যাটে, মিশেল স্টার্কের এক ওভারে চার ছক্কা আর এক ছয় হাঁকিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি অবশ্য এভাবেই খেলছেন, বড় রান নয় বরং দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেয়ার দিকেই এখন মনোযোগ তাঁর।
বয়স বেড়েছে, এর সাথে পাল্লা দিয়েছে বেড়েছে শরীরের ওজন; সব মিলিয়ে এই ওপেনারের আগের মত ফিটনেস নেই, তাই চাইলেই আগের মত অতিমানবীয় ইনিংস খেলা সম্ভব নয়। কিন্তু শ্রেষ্ঠত্ব মাহাত্ম্য আলাদা করেছে তাঁকে, তিনি জানেন কিভাবে নিজেকে বদলে সেরা পারফরম করতে হয়।
চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত বলার মত ইনিংস এই ব্যাটারের কাছ থেকে আসেনি ঠিকই কিন্তু প্রতি ম্যাচেই চেষ্টা করেছেন শুরু থেকে আগ্রাসী মেজাজে খেলতে। অস্ট্রেলিয়াকে তো রীতিমতো ছিড়েখুঁড়ে খেয়েছেন তিনি। স্টার্কের পর প্যাট কামিন্সের উপর দিয়েও ঝড় বইয়ে দিয়েছেন।
পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন এই ডানহাতি, স্রেফ ১৯ বল লেগেছিল তাঁর। সবমিলিয়ে শুরুর ছয় ওভারে তিনি খেলেছেন ২১ বল, তাতেই এসেছে ৫১ রান। অন্যদিকে কোহলি আর পান্ত মিলে করেছেন ১৫ বলে ৭! সংখ্যাতত্ত্বেই অজি বোলারদের দাপুটে বোলিংয়ের বিপক্ষে হিটম্যানের দু:সাহসিক ব্যাটিং ফুটে উঠেছে।
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও একইভাবে খেলেছিলেন রোহিত, প্রতি ম্যাচেই বোলারদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন। প্রতিপক্ষ, ভেন্যু কিংবা লক্ষ্য কোনকিছুই তাঁর ইন্টেন্ট আর অ্যাপ্রোচকে বদলাতে পারেনি। সেবার সব মিলিয়ে তিনি ব্যাট করেছিলেন ১২৬ স্ট্রাইক রেটে; চারশর বেশি রান করেছেন এমন কেউ এর কাছাকাছি স্ট্রাইক রেটেও খেলতে পারেননি।
ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে এই তারকা আগের মত রয়ে সয়ে খেললে হয়তো ব্যক্তিগত অর্জনের খাতা ভারি হতো, আরো অনেক সেঞ্চুরি যোগ হতো নামের পাশে। কিন্তু তিনি বেছে নিয়েছেন স্বার্থ, সবচেয়ে সেরা উপায়ে অবদান রাখতে চেয়েছেন; এমন উৎসর্গ ক’জন করতে পারে?