আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে অন্যতম শক্তিধর দেশ পাকিস্তান। বিগত কয়েক বছরে তাঁরা গাঁ ভাসিয়েছে অবনতির স্রোতে। আর তাঁদের ব্যর্থতার সর্বশেষ সংযোজন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয় গতবারের রানার্স আপদের।
স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে অপ্রত্যাশিত পরাজয় দিয়ে অঘটনের শুরু পাকিস্তানের। তারপর ভারতের বিপক্ষেও ঘুরে দাড়াতে ব্যর্থ বাবর আজমের বাহিনী। বিধ্বংসী ব্যাটিং, শৈল্পিক বোলিং আর দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে প্রতিপক্ষের শিবিরে কাপুনি ধরানো সেই পাকিস্তানের এই ব্যর্থ রূপ সমর্থকের মনে জাগিয়েছে হতাশা।
চেয়ারম্যান, অধিনায়ক থেকে কোচ পর্যন্ত নেতৃত্বের ঘন ঘন পরিবর্তন, দলকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে নাকি অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং দোষারোপের খেলা সাফল্যের জন্য প্রয়োজনীয় ঐক্য নষ্ট করছে? শত প্রশ্নেরা ডানা ঝাপ্টায় পাকিস্তানের আকাশে।
পাকিস্তান নেতৃত্বের সমস্যায় ভুগছিল বেশ অনেকদিন ধরেই। বাবর আজম থেকে শাহীন শাহ আফ্রিদি, তারপর আবার বাবর আজমের কাঁধে ওঠে পাকিস্তানের নেতৃত্ব। অবশ্য সাম্প্রতিক ব্যর্থতাগুলি তাঁর অধিনায়কত্ব নিয়ে বিতর্ককে আবারো জাগিয়ে তুলেছে। কেউ কেউ অন্য নেতৃত্ব পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে। যদিও অনেকেই বাবর আজমের অতীতের সাফল্যগুলো নিয়েও ভাবতে বলেন। সমর্থকরা যুক্তি দেখান যে বর্তমান সমস্যাগুলি একা আজমের নয়।
তাছাড়া এবারের পাকিস্তান দলে ছিলেন পাঁচ ওপেনার- উসমান খান, সায়িম আইয়ুব, ফখর জামান, বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান। বড় সমস্যা ছিল একটি শক্তিশালী মিডল অর্ডারের অভাব, যা দলের মোট ওপেনাররা শক্ত ভিত্তি প্রদান করতে ব্যর্থ হলে রান তাড়া করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ক্রমাগত রদবদল দলের সংহতি এবং কৌশলগত দিকগুলোকে ব্যাহত করেছে। গণমাধ্যমের রিপোর্টগুলো জানায় যে দলে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ছড়িয়ে পড়েছে সেই সাথে দলের সদস্যরা এখন দোষারোপের খেলায় জড়িত। এই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বগুলি ইতিমধ্যে অনিশ্চয়তা এবং বিরোধের পরিবেশ তৈরি করছে।
এই মতবিরোধ দলের জন্য ধারাবাহিক পারফরম্যান্স বজায় রাখা কঠিন, কারণ ঐক্যের অভাব মাঠের সকল প্রচেষ্টাকে দুর্বল করে দেয়। তাইতো চলমান অস্থিরতা শুধু একটি বিভ্রান্তিই নয়, দলের সেরা পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রেও একটি বড় বাধা।
তাছাড়া কিছু টেকনিক্যাল সমস্যাও ছিল পাকিস্তান দলে। সঠিক জায়গায় ফিল্ডিং সাজানো থেকে শুরু করে পরিস্থিতি অনু্যায়ী উপযুক্ত বোলারদের বোলিংয়ে না নিয়ে আসাও রয়েছে।
সব মিলিয়ে এ যেন পাকিস্তান ক্রিকেটের ঠিক উলটো চিত্র দেখলো বিশ্ব। যদিও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) বিশেষ কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আভাস দিয়েছে। পাকিস্তানের আগের সেই উজ্জ্বল রূপে ফিরে যেতে কঠিন তবে বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা নেয়া এখন সময়ের দাবী।