ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে এসে পুরো একটা বিশ্বকাপ সাইড বেঞ্চে বসে কাটিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। তার খোশগল্পের সঙ্গী ছিলেন তানভির ইসলাম। কিন্তু এবারই কি প্রথম এমন ঘটেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট?
মোটেও নয়। এখন অবধি সবগুলো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে বেঞ্চে বসে থাকা খেলোয়াড়দের নিয়ে রীতিমত একাদশ সাজিয়ে ফেলা সম্ভব। সে একাদশই থাকছে খেলা ৭১ এর আজকের আয়োজনে।
- শামসুর রহমান শুভ (২০০৯)
এই একাদশের ওপেনিংয়ে থাকবেন শামসুর রহমান শুভ। তিনি ২০০৯ সালের বিশ্বকাপটা কাটিয়েছিলেন বেঞ্চে বসে। একটি ম্যাচেও তাকে দেখা যায়নি শুরুর একাদশে। ক্ষণগুণে কাটিয়েছেন নিজের দিন। সে বিশ্বকাপে তামিম ইকবালের সঙ্গী হয়েছিলেন জুনায়েদ সিদ্দিকি।
- জুনায়েদ সিদ্দিকি (২০১২)
২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলা জুনায়েদ সিদ্দিকি পুরো একটা বিশ্বকাপ কাটিয়েছেন ডাগআউটে বসে। ২০১২ আসরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই আসরে বাংলাদেশের ওপেনিংয়ে তামিমের সঙ্গী ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। আজকের একাদশে শুভর সাথে তিনি থাকছেন ওপেনিং পজিশনে।
- জহুরুল ইসলাম অমি (২০১২)
জুনায়েদের মতই ভাগ্য হয়েছিল জহুরুল ইসলাম অমির। তিনিও কোন ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। অপেক্ষার প্রহর তার আর শেষ হয়নি। বাউন্ডারির বাইরে বসে দেখেছেন বাংলাদেশের একের পর এক পরাজয়। বেঞ্চে বসে বিশ্বকাপ কাটানো একাদশে নম্বর তিন ব্যাটার অমি।
- মোহাম্মদ মিথুন (২০০৯)
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াডে ছিলেন মোহাম্মদ মিথুন। কিন্তু সেবারের বিশ্বকাপ তিনি পার করেছেন দর্শক হিসেবে। ম্যাচ চলাকালীন সময়ে মাঠে নেমেছিলেন বটে। কিন্তু খেলোয়াড়দের প্রয়োজনীয় সামগ্রী হাতে। এই একাদশে চার নম্বর ব্যাটার হিসেবে থাকছেন মোহাম্মদ মিথুন।
- নুরুল হাসান সোহান (২০১৬)
২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ১৫ সদস্যের দলে ছিলেন নুরুল হাসান সোহান। কিন্তু একমাত্র তিনিই ছিলেন অভাগা। তাকেই কোন ম্যাচ খেলার সুযোগ দেওয়া হয়নি সেবারের আসরে। ঠিক এ কারণেই এই একাদশে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন তিনি। উইকেটরক্ষকের দায়িত্বটাও তার হাতেই থাকছে ন্যাস্ত।
- ফরহাদ রেজা (২০১২)
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ২০১২ সালের আসরে বাংলাদেশের তিনজন ক্রিকেটার সাইডবেঞ্চে বসে কাটিয়েছেন সমস্ত সময়। নিজেকে প্রমাণের কোনরকম সুযোগই পাননি ফরহাদ রেজা। তবে পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে তিনি অনায়াসে আজকের একাদশে জায়গা পেয়ে যাচ্ছেন।
- জিয়াউর রহমান (২০০৯)
২০০৭ আসরে একমাত্র জিয়াউর রহমান ছিলেন দুর্ভাগা। সুপার এইটে উঠেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু একটি ম্যাচও খেলার সুযোগ হয়ে ওঠেনি জিয়ার। কিন্তু পেস বোলিং অলরাউন্ডার ও পিঞ্চ হিটার হিসেবে তিনি বেশ কার্যকর ছিলেন বটে। ব্যাটিং পজিশনের যেকোন স্থানেই ব্যবহার করবার মত একজন ক্রিকেটার তিনি।
- শরিফুল ইসলাম (২০২৪)
একটা ইনজুরি তার ক্যারিয়রকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে। ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচ খেলতে পারেননি শরিফুল। সুপার এইটে ওঠার পরও শরিফুলকে কোন ম্যাচ খেলায়নি বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। তার মত একজন বা-হাতি পেসার থেকে গেছেন ড্রেসিংরুমে।
- সৈয়দ রাসেল (২০১০)
বা-হাতি পেসার হিসেবে শরিফুলের আগে সৈয়দ রাসেল পুরো একটি বিশ্বকাপ কাটিয়েছেন সাইডবেঞ্চে বসে। তাকেও সুযোগ দেওয়া হয়নি নিজের সামর্থ্য প্রমাণের। সেবার গ্রুপ পর্বের বাঁধা পেরুতে ব্যর্থ হয়েছিল বাংলাদেশ দল। পুরো যাত্রাটা স্রেফ অবলোকন করে গেছেন রাসেল।
- রুবেল হোসেন (২০১০)
২০১০ বিশ্বকাপে ডাগআউটে সৈয়দ রাসেলের সঙ্গী ছিলেন তখনকার তরুণ বোলার রুবেল হোসেন। আগ্রাসনের জন্যে সুপরিচিত রুবেল সাইডবেঞ্চে বসে দীক্ষা নিয়েছেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশের বেশকিছু ম্যাচ জয়ের কাণ্ডারি হয়েছেন। পাশাপাশি ডুবিয়েছেন বহু ম্যাচ।
- তানভির ইসলাম (২০২৪)
সাইডবেঞ্চ একাদশের সর্বশেষ সংযোজন তানভির ইসলাম। একমাত্র স্পিনারও তিনি। বা-হাতি স্পিনার হয়েও ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে পারেননি তানভির। দলে থাকা ১৫ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে তানভির বেঞ্চ গরম করবার কাজটাই করে গেছেন।