মাতৃত্ব অর্জনের গল্প বলে, সংগ্রামের গল্প বলে। আর সেই সংগ্রামের গল্পের সাথে যোগ হল অলিম্পিকের নাম। প্যারিস অলিম্পিকে নতুন বিস্ময় রচনা করলেন মিশরের নাদা হাফেজ। গর্ভে সাত মাসের সন্তান নিয়ে তিনি ফেন্সিং ইভেন্টে অংশ নিয়েছেন, প্রথম রাউন্ডের ম্যাচও জিতেছেন। এই গল্পটা অনেক সোনা-রুপা জয়ের কাব্য থেকেও বিরাট এক মহাকাব্য।
মিশরের নাদা পেশায় প্যাথলজিস্ট। র্যাংকিংয়ে ৪১ নম্বরে থাকা নাদা প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে জিতলেও, শেষ ষোলোতে হারতে হয়েছে তাঁকে। এর আগে ২০১৬ ও ২০২০ অলিম্পিকেও অংশ নিয়েছিলেন নাদা। এবার প্যারিস অলিম্পিকে খেলতে নেমে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।
প্যারিসের গ্রাঁ পালাইয়ে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের এলিজাবেথ তার্তাকোভস্কিকে ১৫-১৩ পয়েন্টে হারিয়ে দারুনভাবে শুরু করেছিলেন নাদা। কিন্তু শেষ ষোলোতে দক্ষিণ কোরিয়ান হা-ইয়াং জিওনের কাছে ১৫-৭ পয়েন্টে হেরে যান তিনি।
টুর্নামেন্টের শেষ ষোলোর ম্যাচ শেষে বিদায় বেলায় দর্শকদের করতালিতে সিক্ত হন নাদা। তাঁর বিদায় নয়, বরং অসামান্য সাহস প্রদর্শনের সুবাদে অলিম্পিক দর্শদের উদ্বেলিত করতে পেরেছেন তিন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাদা লিখেন, ‘পোডিয়ামে আপনারা দু’জন খেলোয়াড়কে দেখেছেন, আসলে আমরা তিনজন ছিলাম। আমি, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী এবং আমার ছোট্ট সন্তান। যে এখনো পৃথিবীতে আসেনি। এবারের অলিম্পিক আমার জন্য আলাদা। আমি তিন বারের অলিম্পিয়ান, কিন্তু এবার ছোট্ট এক অলিম্পিয়ানকেও সাথে নিয়েছি।’
নিজ দেশের নারীদের উজ্জীবিত করতেই, নিজের শারীরিক অবস্থান নিয়ে ভাবেননি নাদা। তিনি লিখেছেন, ‘আমার বাচ্চাও আমার নিজের বেশ চ্যালেঞ্জ পার হতে হয়েছে, শারীরিক ও মানসিক, দুটোই। মিশরের নারী হিসেবে আমাদের শক্তি ও অধ্যাবসায় তুলে ধরতে চেয়েছি আমি। গর্ভাবস্থার এই ভ্রমণ নারীদের জন্য এমনিতেই অনেক কঠিন। তবে, জীবনের সাথে লড়াইয়ের সমন্বয় করতে পারলে সবটুকুই উপভোগ্য ও উপযুক্ত।’