গতি ছিল, ক্ষিপ্রতা ছিল, ভিশন ছিল – এককথায় প্রতিপক্ষকে নাড়িয়ে দেয়ার সবটুকু সামর্থ্য ছিল জোয়াও ক্যান্সেলোর। আদতে রাইটব্যাক হলেও, খেলতে পারেন পুরোদস্তুর লেফটব্যাক হিসেবেও। আবার আপনি চাইলে সক্ষমতা বিবেচনায় উইঙ্গার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। অর্থাৎ ফুটবল মাঠের পারফেক্ট অলরাউন্ডার বলা চলে তাঁকে।
অথচ এই মানুষটারই কি না স্থান হলো না ইউরোপের ফুটবলে; ফর্মের চূড়ায় থাকা অবস্থাতেই তিনি পাড়ি জমিয়েছেন সুদূর মরুভূমির দেশে, খেলবেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সৌদি প্রো লিগে। তবে জাতীয় দলের সতীর্থর সঙ্গে একই দলে খেলা হবে না, তাঁকে স্কোয়াডে ভিড়িয়েছে আল নাসেরের প্রতিদ্বন্দ্বী আল হিলাল।
সেখানেও তারকার কমতি নেই, নেইমার জুনিয়র তো আছেনই, সঙ্গে আছেন ইয়াসিন বনু, মিত্রোভিচরা। এবার যোগ হলেন ক্যান্সেলো, ২০২৭ সাল পর্যন্ত দলটার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলেন তিনি। আর সেজন্য প্রতিবছর বেতন হিসেবে পাবেন ১৫ মিলিয়ন ইউরো। টাকার অঙ্কে বড় কিছুই, কিন্তু ফুটবলীয় বিচারে এটা আত্মহত্যা বৈকি।
অথচ গত কয়েক বছরের ব্যবধানে ম্যানচেস্টার সিটি, বায়ার্ন মিউনিখ, বার্সেলোনার মত বড় বড় দলের হয়ে মাঠে নামার অভিজ্ঞতা হয়েছিল এই ফুটবলারের। তাহলে হঠাৎ কেন এমন অধঃপতন, মূল কারণটা আসলে তাঁর ইগো! অবিশ্বাস্য হলেও অবিশ্বাসের উপায় নেই, ইগোর কারণেই মূলত তিনি স্থায়ী হতে পারেননি তারকা সমৃদ্ধ ড্রেসিংরুম গুলোতে।
শুরুটা হয়েছিল ম্যানসিটিতে, পেপ গার্দিওলার সঙ্গে বনিবনা হয়নি এই পর্তুগিজের। হুট করেই তাই লোনে পাড়ি জমিয়েছিলেন মিউনিখে; সূচনা মন্দ হয়নি কিন্তু সময় গড়াতেই আবারও টমাস টুখেলের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। বাধ্য হয়ে ফিরে আসেন সিটিতে, তবে পুনরায় লোনে চলে আসেন বার্সেলোনায়। যদিও শেষমেশ ইউরোপ ত্যাগ করেই আত্মকেন্দ্রিকতার মাশুল দিতে হলো তাঁকে।
আধুনিক ফুটবলে যেকোনো কোচের জন্য এই তারকা আকাঙ্ক্ষিত অস্ত্র বটে; নিজের পজিশনে নি:সন্দেহে বিশ্বসেরা তিনি, সময়ের ব্যবধানে হয়তো ইতিহাসের পাতাতেও জায়গা করে নিতে পারতেন। কিন্তু এখন ইতি ঘটেছে সব সম্ভাবনার, প্রতিভার অকাল মৃত্যু ঘটলো একগুঁয়েমি আর মানিয়ে নিতে না পারার আক্ষেপময় অজুহাতে।