আমি চিরদুর্দ্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস / মহা-প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস – ডায়নামো জাগ্রেবের বিপক্ষে বায়ার্ন মিউনিখের পারফরম্যান্স প্রকাশের জন্য এর চেয়ে ভাল কোন কিছুই হতে পারে। বায়ার্নের রুদ্রমূর্তির সামনে পৌরাণিক কিংবা অতিমানবীয় দানবেরাও নির্ঘাত হার মানতেন, কি এক বিধ্বংসী ম্যাচ দেখা গেলো চ্যাম্পিয়ন্স লিগে।
দুই, চার কিংবা ছয়টা নয়; ক্রোয়াট প্রতিনিধিদের জালে গুণে গুণে নয় খানা গোল দিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ খেলার তুলনায় বরং গোল উদযাপনেই বেশি সময় পার করেছে দলটির ফুটবলাররা। অনেকটাই পাড়ার বড়দের বিপক্ষে একগাদা কচিকাঁচাকে নামিয়ে দিলেন যেমন ম্যাচ হতো তেমনটাই হয়েছ এদিন।
পেনাল্টি থেকেই হ্যাটট্রিক করেছেন হ্যারি কেইন আর সবমিলিয়ে করেছেন চার গোল! ১৯ মিনিটের মাথায় গোলরক্ষককে উল্টো দিকে পাঠিয়ে স্পট কিক থেকে দলকে এগিয়ে দেন তিনি, এরপর ৫৭ মিনিটের সময় ছয় গজ দূর থেকে রিবাউন্ডে গোল করেন – কিন্তু আর ওপেন প্লে থেকে গোলের প্রয়োজন হয়নি তাঁর। পর পর দুইবার স্পট কিক থেকেই জালের ঠিকানা খুঁজে নিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
দলের গোলবন্যা আর হ্যারি কেইনের পেনাল্টিময় হ্যাটট্রিকের কারণে আড়ালেই পড়ে গিয়েছেন ফরাসি তরুণ মাইকেল অলিস। নিজে দুই গোল করেছেন, শুধু তাই নয় সর্বোচ্চ ডুয়েল জয়, শতভাগ সফল ট্যাকেলের কীর্তি নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন তিনি।
জামাল মুসিয়ালা ছিলেন বরাবরের মতই চোখের শান্তি। সর্বোচ্চ সাতটি চান্স তৈরি করেছেন তিনি, গোল না পেলেও অ্যাসিস্ট করেছেন দুইবার। ‘নাম্বার টেন’ এর কাছ থেকে যা যা দেখতে চান সবাই তাই দেখা গিয়েছে তাঁর পায়ে। এছাড়া জসুয়া কিমিচের ঝুলিতে গিয়েছে সমান দুইটি অ্যাসিস্ট আর গোরেৎজা এবং লিরয় সানের নামের পাশে আছে একটি করে গোল।
প্রথমার্ধে তিন গোল দিলেও বাভারিয়ানরা অবশ্য বেশ শান্ত ছিল, কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের প্রথমদিকে ডায়নামো দুই গোল শোধ করলে আগুন জ্বলে উঠে যেন, প্রতিপক্ষকে খুবলে খেতে শুরু করে তাঁরা। ভারের কারণে দুই গোল বাদ না হলে স্কোরবোর্ড দেখতে আরো বিভৎস লাগতো নিশ্চয়ই।