ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) এর কল্যাণে ভারতীয় টি-টোয়েন্টি দলে ব্যাকআপ খেলোয়াড়ের অভাব নেই। প্রতি বছর নতুন আসরে কোন না কোন নতুন খেলোয়াড় নজর কাড়ছেই। কিন্তু এবার সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
বিশ্বকাপের এই আসরে নিজ দেশে নিশ্চয়ই যথেষ্ট ব্যাকআপ খেলোয়াড় আগে থেকেই রেখে দিতে চাইবে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। কারা হতে পারে সেই ব্যাকআপ খেলোয়াড়?
- সূর্য্যকুমার যাদব
সূর্য্যকুমার যাদব বহুদিন ধরেই ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের এক পরিচিত নাম। বিশেষত আইপিএলে তো তিনি পুরোদস্তুর টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান হিসেবেই নিজেকে চিনিয়েছেন।
মূলত কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলে পরিচিত পেলেও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়েই নিজেকে টপ অর্ডারের এক কার্যকরী খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত করিয়েছেন তিনি। আইপিএলের ২০২০ আসরেও তিনি মুম্বাইয়ের হয়ে ৪০ গড়ে করেছিলেন ৪৮০ রান। এই রানের চাইতেও বেশি কথা বলতে হবে তাঁর স্ট্রাইক রেট নিয়ে। গোটা আসরে তিনি এই রান করেছেন ১৪৫ স্ট্রাইক রেটে। টি-টিয়োন্টিতে ভারতের টপ অর্ডার এমনিতেই শক্ত হলেও, সেখানে শক্তিশালী একটা ব্যাকআপ হতে পারেন সূর্য্যকুমার যাদব।
- ঈশান কিষাণ
যাদবের মতই ঈশানও খেলেছেন মুম্বাইতেই, সেখানে খেলেই নিজের জাত উপরে তুলেছেন তিনি। তবে ঈশান ভারতীয় ক্রিকেট কর্তাদের সুনজরে ছিলেন আগে থেকেই। বিশেষত ২০১৬ এর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ঈশাণ- পান্তের জুটি তো রীতিমত অনন্য ছিল। সেই ঈশাণ প্রতি বছরই মুম্বাইয়ের হয়ে নিজেকে একটু একটু করে উপরে নিয়ে গেছেন।
এমনকি আইপিএলের গত আসরে মুম্বাইয়ের হয়ে রীতিমত ধ্বংসাত্মক ভূমিকাতে ছিলেন্ম তিনি। ৫৭.৩৩ গড়ে ১৪৫ স্ট্রাইক রেটে এক আসরে ৫১৬ রান করা প্রমাণ করে ঈশাণের টি-টোয়েন্টি সামর্থ্য ঠিক কতটা উঁচুতে। কিন্তু, ঈশানও এদিকে টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যান। শক্ত ভারতীয় টপ অর্ডারে তাই তাকে থাকতে হবে বিকল্প হিসেবেই।
- সঞ্জু স্যামসন
সঞ্জু স্যামসন অবশ্য আগের দুজনের মত নবাগত নন। আইপিএলে তিনি দীর্ঘদিনের পারফর্মার। আবার তিনি এর আগে জাতীয় দলে সুযোগও পেয়েছিলেন। স্বল্প সুযোগে অবশ্য নিজেকে খুব বেশি প্রমাণও করতে পারেননি।
সাত আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তাঁর ব্যাটিং গড় মাত্র ১১.৮৫। তবে এর বাইরে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তিনি দারুণ পারফর্মার। যেকোন ধরণের টি-টোয়েন্টিতে ১৭১ ম্যাচ খেলে করেছেন ৪০৩২ রান। সঞ্জু ভারতীয় দলের জন্যে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে বেশ শক্ত বিকল্পই বলতে হবে।
- রাহুল তেওয়াতিয়া
রাহুল তিওয়াতিয়া মূলত একজন মাল্টি-ডাইমেনশনাল ক্রিকেটার। লোয়ার অর্ডারে নেমে তিনি দলের রান যেমন বাড়াতে পারেন, বিপদে মাথাও ঠান্ডা রাখতে পারেন। এর পাশাপাশি তিওয়াতিয়ার লেগ স্পিনটাও কম কার্যকরী নয়।
গত আসরেও তিনি রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এই গত আসরের কথাই ধরা যাক। ১৪০ স্ট্রাইক রেট আর ৪০ গড়ে রান তো করেছেনই, সাথে লেগ স্পিনের ইকোনমিটাও তাঁর ছিল ৭.০৮। ভারতীয় দলে অবশ্য লোয়ার অর্ডারে পান্ডিয়াই দারুণ কার্যকরী, কিন্তু তা সত্ত্বেও তিওয়াতিয়া দারুণ একটা বিকল্পই বলতে হবে।
- মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন
সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফির কল্যাণে ভারতের নতুন আজহারউদ্দিনকে এখন সবাই চেনে। কেরালার হয়ে মুম্বাইয়ের বিপক্ষে রেকর্ড গড়া শতকেই তিনি পাদপ্রদীপের আলোয় আসেন। তবে আজহারউদ্দিন মূলত একজন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।
ওপেনিং উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি দারুণ আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করেন। যে ম্যাচ দিয়ে তাঁর আলোয় আসা সেখানেও ৫৪ বলে শুধু ১৩৭ রানই তিনি করেননি, একা হাতে ম্যাচ শেষও করে এসেছিলেন। টপ অর্ডারে পরিপূর্ণ ভারতের আরেকটা শক্ত ব্যাকআপ তাই তিনি হতেই পারেন!