বৃথাই গেল সাঞ্জুর বীরত্ব

অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচ। টসের কয়েনটা নিজের পকেটেই রেখেছিলেন সাঞ্জু স্যামসন। ম্যাচটাও প্রায় তাঁর পকেটে চলেই এসেছিল। ৬৩ বলে ১১৯ রান করেছিলেন। অধিনায়ক হিসেবে আইপিএলের অভিষেকে সেঞ্চুরি করার অভিজ্ঞতা এর আগে আর কারোরই হয়নি।

কিন্তু, তাতেও শেষ রক্ষা হল না। আকাশচুম্বি রান তাড়া করতে নেমে চার রান বাকি থাকতেই থামলো সাঞ্জু স্যামসনের রাজস্থান রয়্যালসের দৌড়। চার রানের শ্বাসরুদ্ধকর জয় নিয়ে আসর শুরু করলো পাঞ্জাব কিংস। ম্যাচের ফল নিশ্চিত হল একদম শেষ বলে গিয়ে।

দুই আসর বিরতির পর রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে আজকের ম্যাচ দিয়ে আইপিএলে প্রত্যাবর্তন হয়েছে মুস্তাফিজুর রহমানের। তবে রাজস্থান রয়্যালসের জার্সিতে প্রথম ম্যাচে ভালো করতে পারেননি এই পেসার। ভাগ্যের সহায়তা না পেয়ে ২ উইকেট হাত ছাড়া করা মুস্তাফিজ ৪ ওভারে দিয়েছেন ৪৫ রান।

বোলারদের ব্যর্থতায় ২২২ রানের বড় লক্ষ্য পায় রাজস্থান রয়্যালস। লক্ষ্যটা চ্যালেঞ্জিং ছিলো রাজস্থানের জন্য। কিন্তু অধিনায়ক স্যামসনের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে শেষ ওভার পর্যন্ত লড়াই চালিয়েও হারতে হয়েছে রাজস্থানকে।

বড় রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি রাজস্থান রয়্যালসের। রানের খাতা খোলার আগেই বেন স্টোকস বিদায় নেওয়ার পর ১২ রান করে আউট হয়ে যান আরেক ওপেনার বোহরা। দলীয় ২৫ রানে দুই ওপেনারকে হারানোর পর অধিনায়ক স্যামসন ও জস বাটলারের ব্যাটে বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেস্টা করে রাজস্থান।

কিন্তু বেশী দূর যেতে পারেনি এই জুটিও। ২৫ রান করে বাটলার আউট হয়ে গেলে ভাঙ্গে ৪৫ রানের জুটি। এরপর তৃতীয় উইকেটে দুবেকে নিয়ে ৫৩ ও চতুর্থ উইকেটে পরাগকে নিয়ে ৫২ রানের জুটি গড়ে দলকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন স্যামসন। ২৩ রান করে দুবে ও ২৫ রান করে পরাগ আউট হয়ে গেলে শেষ ৪ ওভারে জয়ের জন্য ৪৮ রান প্রয়োজন হয় রাজস্থানের।

কিন্তু শেষ ওভারে ১৩ রানের সমীকরণ মেলাতে না পেরে ৪ রানে হেরে যায় রাজস্থান। ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে ৬৩ বলে ১১৯ রানের দারুন এক ইনিংস খেলেন স্যামসন। পাঞ্জাব কিংসের বোলারদের পক্ষে মোহাম্মদ শামি দু’টি ও আর্শদ্বীপ সিং তিনটি এবং মেরেডিথ ১ টি উইকেট শিকার করেন।

এর আগে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা পাঞ্জাব কিংসের শুরুটা খুব একটা ভালোই হয়নি। ইনিংসের প্রথম দুই ওভারে পাঞ্জাবের দুই ওপেনারকে বার বার পরাস্ত করেও উইকেট পাননি মুস্তাফিজুর রহমান ও চেতন সাকারিয়া। মুস্তাফিজের বলে এলবিডব্লিউ হয়েও রিভিউ না নেওয়ার কারণে বেঁচে যান মায়াঙ্ক আগারওয়াল।

তবে উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গতে বেশী অপেক্ষা করতে হয়নি রাজস্থান রয়্যালসকে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ৯ বলে ১৪ রান করে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়াল। দলীয় ২২ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে ৬৭ রান যোগ করেন লোকেশ রাহুল ও ক্রিস গেইল।

কিন্তু যখন ঝড়ের আভাস দিচ্ছিলেন তখনই দারুণ এক ক্যাচ নিয়ে গেইলকে ফিরিয়ে দেন বেন স্টোকস। গেইলের ব্যাট থেকে আসে ২৮ বলে ৪০ রান। তবে গেইল আউট হয়ে গেলেও রানের গতি কমেনি পাঞ্জাব কিংসের। উইকেটে এসেই রাজস্থান রয়্যালসের বোলারদের উপর তাণ্ডব চালিয়ে মাত্র ২০ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন দিপক হুডা।

অপর প্রান্তে অধিনায়ক লোকেশ রাহুলও তুলে নেন আইপিএলে নিজের ২২ তম হাফসেঞ্চুরি। ২৮ বলে ৬৪ রান করে দীপক হুদা আউট হয়ে গেলেও ইনিংসের শেষ ওভার পর্যন্ত উইকেটে থেকে ৫০ বলে ৯১ রান করেন লোকেশ রাহুল। রাহুল আউট হয়ে গেলেও নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২২১ রান সংগ্রহ করে পাঞ্জাব কিংস।

রাজস্থান রয়্যালসের বোলারদের ভিতর চেতন সাকারিয়া তিনটি, ক্রিস মরিস দু’টি ও রিয়ান পরাগ ১ টি করে উইকেট শিকার করেন। ৪ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থাকেন মুস্তাফিজুর রহমান।

  • সংক্ষিপ্ত স্কোর

পাঞ্জাব কিংস: ২২১/৬ (ওভার: ২০; রাহুল- ৯১, আগারওয়াল- ১৪, গেইল- ৪০, হুদা- ৬৪; সাকারিয়া- ৪-০-৩১-৩, মরিস- ৪-০-৪১-২, পরাগ- ১-০-৭-১)

রাজস্থান রয়্যালস: ২১৭/৭ (ওভার: ২০; স্টোকস- ০, বোহরা- ১২, স্যামসন- , বাটলার- ২৫ দুবে- ২৩, পরাগ- ২৫, রাহুল- ২; শামি- ৪-০-৩৩-২, আর্শদ্বীপ- ৪-০-৩৫-৩)

ফলাফল: পাঞ্জাব কিংস ৪ রানে জয়ী।

ম্যাচ সেরা: সাঞ্জু স্যামসন (রাজস্থান রয়্যালস)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link