তবুও, এবারই সবচেয়ে ভাল সুযোগ!

প্রাভিন জয়াবিক্রমা – বয়স ২২, প্রথম শ্রেণির ম্যাচ ১০টি। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজে শ্রীলঙ্কার একমাত্র স্পেশালিস্ট স্পিনার তিনি। লঙ্কান স্পিন আক্রমণের অবস্থা নিশ্চয়ই ফুটে উঠছে এতে!

রঙ্গনা হেরাথের যুগ শেষ, দিলরুয়ান পেরেরা ধার হারিয়ে দলের বাইরে। শ্রীলঙ্কার মূল টেস্ট স্পিনার এখন লাসিথ এম্বুলদেনিয়া। এই সিরিজে তিনিও নেই চোটের কারণে।

এরপর বিবেচনায় ছিলেন ঘরোয়া ক্রিকেটের দুই পারফরমার দুভিন্দু তিলকরত্নে ও প্রভাথ জয়াসুরিয়া। কিন্তু দুভিন্দুও চোটে পড়েছেন, প্রভাথ পাশ করতে পারেননি ফিটনেস টেস্টে। তাই আনকোরা জয়াবিক্রমা সুযোগ পেয়েছেন, বলা যায় চতুর্থ পছন্দের স্পিনার।

জয়াবিক্রমার সঙ্গে লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার ভানিন্দু হাসারাঙ্গা আর অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার রমেশ মেন্ডিস আছেন। পাশাপাশি কাজ চালানোর অফ স্পিন নিয়ে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা।

হাসারাঙ্গাকে আমি মনে করি, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এই সময়ে বিশ্ব ক্রিকেটেই সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল ও রোমাঞ্চকর অলরাউন্ডারদের একজন। সাদা বলে তার লেগ স্পিন, গুগলি, বৈচিত্র, তার ভয়ডরহীন ব্যাটিং, সবই দারুণ। তবে টেস্টে মোটেও পরীক্ষিত নন। রমেশ আর ধনাঞ্জয়ার মূল কাজ ব্যাটিং।

সম্ভবত স্মরণকালে শ্রীলঙ্কার দুর্বলতম স্পিন আক্রমণের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

শ্রীলঙ্কা অবশ্য এই সিরিজে স্পিন নিয়ে ভাবছেই না। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে যা দেখলাম গত কয়েকদিনে, তাদের পরিকল্পনা পেসকে ঘিরে। ১৫ জনের স্কোয়াডে তাই পেসার ৫ জন।

সেই পেসারদের মধ্যে সুরাঙ্গা লাকমল সত্যিকারের ক্লাস বোলার। নতুন-পুরনো, সব বলেই দারুণ স্কিলফুল। লম্বা স্পেলও করতে পারেন। বিশ্ব ফার্নান্দো ও লাহিরু কুমারা ভালো, তবে দুর্দান্ত কিছু নয়। আশিথা ফার্নান্দো মোটামুটি। দিলশান মাদুশঙ্কা নতুন।

উইকেটে পেসারদের জন্য সহায়তা যদি থাকেও, তার পরও স্রেফ লাকমলকে দেখে খেলতে পারলে, এই পেস আক্রমণ সামলানো খুব কঠিন চ্যালেঞ্জ হওয়ার কথা নয়।

এটুকুও যদি আমাদের ব্যাটসম্যানরা না পারেন, আর কিছু করার-বলার নেই। অতীতে অবশ্য নানা সময়ে হাবিজাবি বোলারদের এত এত উইকেট আমরা দিয়েছি, দেখা গেল এবার ধনাঞ্জয়া বা এদের কেউ ৫ উইকেট নিয়ে নিল!

যাহোক, জিম্বাবুয়েকে বাদ দিলে এরকম বোলিং আক্রমণ আর পাওয়া যাবে না। দায়িত্ব বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের।

ব্যাটিংটা অবশ্য ওদের বেশ শক্তিশালী। করুনারত্নে-থিরিমান্নে-চান্দিমাল-ম্যাথিউস-ধনাঞ্জয়া-ডিকভেলা। ওশাদা ফার্নান্দো প্রতিভাবান, নবীন পাথুম নিসানকা তো টেস্টের জন্য রত্ন একটা। বাংলাদেশের বোলারদের চ্যালেঞ্জটা তুলনামূলক কঠিন।

ফিল্ডিং নিয়ে কিছু বলছি না। ওপরওয়ালার হাতে। নেতৃত্ব নিয়ে বাড়তি আশা নেই। ঠিকঠাক করতে পারলেও খুশি।

সবশেষ নয় টেস্টে আমাদের হার আটটি, ইনিংস ব্যবধানে হার এর মধ্যে পাঁচটি। গত সিরিজে দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশড। দলের ছন্নছাড়া অবস্থা। আশার জায়গা সব মিলিয়ে খুব বেশি নাই। তার পরও আমি মনে করি, দেশের বাইরে ভালো কিছু করতে হলে, এই সিরিজই সুযোগ। জুনে জিম্বাবুয়ে সফর আছে, কিন্তু সেখানে কন্ডিশন সহজ নয়।

দেশের বাইরে আমাদের সবশেষ টেস্ট জয় শ্রীলঙ্কাতেই। তবে ‘চার বছর আগের জয়ের প্রেরণায় উজ্জীবিত’ – এসব বলতে-লিখতে খুব ভালো দেখায়, বাস্তবে এসবের ভিত্তি খুব একটা নেই। বর্তমানে থাকাই ভালো এবং ক্রিকেটীয় নিক্তিতে মেপেই বললাম, ভালো করার সুযোগ এই সিরিজ।

ভালো করতে পারলে ভালো। না পারলে, না পারলে কিছুই না ভাইয়েরা আমার। আমি তোমাদের কাছ থেকেই হতাশ হওয়া শিখেছি। আমাকে আর হতাশার ভয় দেখি লাভ নেই।

– ফেসবুক থেকে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link