আপনার তালে নেচে যাওয়া ব্যাটিং দানব

২০১৬ সালের একটা ম্যাচের কথা তুলে ধরেছেন কোহলি। কলকাতার বিপক্ষে ম্যাচে সুনীল নারাইনকে বুঝে উঠতে পারছিলেন না মি.৩৬০°, টাইম আউটের বিরতিতে সেই অস্বস্তির কথা জানিয়েছেন কোহলিকে। কোহলি পরামর্শ দেন নারাইনের ওভারে তাঁকে স্ট্রাইক দিয়ে দেয়ার জন্য। তিনি ধরেই নিয়েছিলেন সেই পরামর্শ বাস্তবে রূপ নিবে।

এবি ডি ভিলিয়ার্স ৩১ বলে শতক হাঁকাতে জানেন, এবি ডি ভিলিয়ার্স ২৯৭ বল খেলে ৪৩ রান করতে পারেন – তিনি যা চান তাই করেন, তিনি যখন যেভাবে চান সেভাবেই করেন। কবি নজরুলের মতই তাঁর মনে বাজে, ‘আমি আপনার তালে নেচে যাই, মুক্ত জীবনানন্দ’।

রানের পাহাড় কিংবা একগাদা ট্রফি – প্রোটিয়া তারকার অর্জনের খাতায় পাবেন না এমন কিছু। তাঁর খাতা ভর্তি দেখবেন কেবল ইম্প্যাক্টের অংক। এতটা ইম্প্যাক্টফুল ক্যারিয়ার অনেক বাঘা বাঘা কিংবদন্তিরও ঈর্ষার কারণ হয়েছে, আর এই ইম্প্যাক্টের বদৌলতে এবার তিনি পৌঁছে গেলেন আইসিসির হল অব ফেমে।

বন্ধুর কীর্তি উদযাপন করতে ভোলেনি বিরাট কোহলি; খোলা চিঠি লিখে জানিয়েছেন অভিনন্দন, জানিয়েছেন নিঃস্বার্থ মুগ্ধতার কথা। নিজের সামর্থ্যের ওপর তীব্র বিশ্বাস ছিল ডি ভিলিয়ার্সের, সেটাই ফুটে উঠেছে তাঁর চিঠিতে। ভারতীয় ব্যাটারের চোখে এজন্যই ডি ভিলিয়ার্স ‘নাম্বার ওয়ান’।

২০১৬ সালের একটা ম্যাচের কথা তুলে ধরেছেন কোহলি। কলকাতার বিপক্ষে ম্যাচে সুনীল নারাইনকে বুঝে উঠতে পারছিলেন না মি.৩৬০°, টাইম আউটের বিরতিতে সেই অস্বস্তির কথা জানিয়েছেন কোহলিকে। কোহলি পরামর্শ দেন নারাইনের ওভারে তাঁকে স্ট্রাইক দিয়ে দেয়ার জন্য। তিনি ধরেই নিয়েছিলেন সেই পরামর্শ বাস্তবে রূপ নিবে।

কিন্তু তাঁর চোখে অপার বিস্ময় এঁকে দিয়ে ডি ভিলিয়ার্স ক্যারিবিয়ানকে উড়িয়ে মারলেন ৯৪ মিটার দূরে! বিরাটের মুখ দিয়ে তখন কেবল বের হয়েছিল ‘ইউ আর অ্যা ফ্রিক!’ – তিনি আরো লিখেছেন নিজেদের বোঝাপড়ার কথা, কোন শব্দ না করেই তাঁদের প্রান্ত বদলের কথা। কখনো একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়নি, কখনো দুই রানের সুযোগ হাতছাড়া হয়নি।

প্রোটিয়া ব্যাটিং দানব ক্যারিয়ার জুড়ে এমন সব জিনিস করেছেন যা করার কথা আমরা ভাবতেই পারতাম না – এমন সহজ স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন ভারতীয় তারকা। এরপর ২০১৫ সালের দিল্লি টেস্টের প্রসঙ্গ তুলে তিনি লিখেন, ‘এই ইনিংস খেলার পথে কখনো কখনো নিশ্চয়ই এমন ভাবনা উঁকি দিয়েছে যে, এত বল খেলে ফেলেছি, একটা দু’টো বাউন্ডারি মারি এবার। কিন্তু না, তুমি তাই করেছো যা তোমার দলের প্রয়োজন ছিল। দলকে সাফল্যের পথে নিয়ে যাওয়ার যে উন্মাদনা, সেটা তোমার থেকেই শিখেছি।’

সবশেষে অভিনন্দন জানিয়ে ব্যাঙ্গালুরু তারকা লিখেছেন, ‘ক্রিকেটের জগতে যে ইম্প্যাক্ট তুমি রেখেছো সেজন্যই আজ হল অব ফেমে জায়গা পেলে। আমার মনে হয় না কোন ক্রিকেটারের জন্য এর চেয়ে বেশি সম্মানের কিছু হতে পারে। অভিনন্দন বিস্কট্টি, তুমি এই খেলার সর্বকালের সেরাদের একজন!’

Share via
Copy link