ইনিংসের তখন ৯২তম ওভার, রেহান আহমেদের বলে প্যাডেল শট খেলতে চেয়েছিলেন সাজিদ খান। কিন্তু ব্যাটে বলে মনমতো সংযোগ হয়নি, বলটা উড়ে এসে আঘাত হানে তাঁর চোয়ালে। সাথে সাথে তীব্র বেদনার ছাপ ছড়িয়ে পড়ে তাঁর পুরো মুখে, সেই সাথে গড়িয়ে পড়া রক্তে ভিজে যায় গায়ের সাদা শুভ্র জার্সিটাও।
দৌড়ে আসে মেডিকেল টিম, দৌড়ে আসে মাঠের খেলোয়াড়রাও। সবমিলিয়ে গা শিউরে ওঠার মত দৃশ্য, অথচ আসল মানুষটাই নির্বিকার। যাকে নিয়ে এত ছোটাছুটি তাঁর মাঝে এতটুকু নমনীয়তা নেই, রণক্ষেত্রের সবচেয়ে সাহসী যোদ্ধার মতন সহজ স্বাভাবিক ভাবভঙ্গিতে তিনি প্রস্তুত হয়ে যান পরের বল খেলার জন্য।
প্রথম ইনিংসে একাই নিয়েছেন ছয় উইকেট, ইংল্যান্ডকে নাগালে রাখার কাজটা করেছেন। তবু দলের ব্যাটাররা পেরে ওঠেনি। সেজন্য ব্যাট নিয়ে আরো একবার দলের ত্রাণকর্তা হলেন এই ডান-হাতি, আরো একবার দলকে স্বস্তি দিলেন।
সাজিদ যখন বাইশ গজে আসেন তখন দলীয় সংগ্রহ আট উইকেটে ২৬৫ রান, সেখান থেকে সৌদ শাকিলকে সঙ্গে নিয়ে ৭২ রানের জুটি গড়েছেন তিনি। মোটেই ভাববেন না, গড়পড়তা টেলএন্ডারের মত সহকারীর ভূমিকায় ছিলেন তিনি; উল্টো ৭২ রানের জুটিতে তাঁর ব্যাট থেকেই এসেছে ৪১ রান।
সবমিলিয়ে এই তারকার অপরাজিত ৪৮ রানের ইনিংসে আছে দুই চার আর চারটা ছক্কার মার। এসব নিশ্চয়ই লেখা থাকবে কাগজে-কলমে, তবে লেখা থাকবে না রক্তের কথা। সেটা শুধু থেকে যাবে দর্শকদের হৃদয়ে, সফেদ জার্সিটায় থেকে যাবে রক্তের দাগ।
ব্যাটে-বলে পারফরম্যান্স, শরীর ভর্তি অদম্য সাহস – সাজিদ খানকে আপনি পারফর্মার কিংবা ফাইটার সব বিশষণেই বিশেষায়িত করতে পারেন। যতদিন ক্রিকেট থাকবে, যতদিন ক্রিকেটের প্রতি প্যাশনের আলোচনা হবে ততবারই উঠে আসবে তাঁর গল্প, ততবারই মনের পর্দায় ভেসে উঠবে রক্তে মাখা ছবিটা।