সফরকারী দলের কোন ব্যাটার সর্বোচ্চ ভারতের বিপক্ষে তাঁদের মাটিতে টেস্ট সিরিজের রান সংগ্রাহক হবেন, এমন দৃশ্য দেখাটা বিরল। চলতি শতাব্দীতে হাতেগোনা কয়েকবার এমনটা ঘটেছে; ২০০০/০১ সালে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার আর ম্যাথিউ হেইডেন, ২০০৯/১০ সালে হাশিম আমলা এরপর অ্যালিস্টার কুক এবং স্টিভ স্মিথ পেরেছেন সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হতে।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও একই কাণ্ড ঘটেছে, রাচিন রবীন্দ্র সেরা ব্যাটারের তালিকায় সবার উপরে উঠে এসেছেন। কেবল তাই নয়, দ্বিতীয় স্থানে আছেন আরেক কিউই ডেভন কনওয়ে! ভারতের সিরিজ হারের সবচেয়ে বড় কারণ এটাই।
স্মিথ, ফ্লাওয়ার কিংবা হেইডেন গল্পে ভারতের ত্রাতা হয়ে কেউ না কেউ ছিলেন। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হতে না পারলেও চেতেশ্বর পুজারা পাল্লা দিয়েছেন স্মিথের সাথে; এর আগে ভিভিএস লক্ষ্মণ, রাহুল দ্রাবিড়রা একই কাজ করেছিলেন। কিন্তু এবার সেটা দেখা যায়নি, স্বাগতিকদের কেউই পারেনি রবীন্দ্র, কনওয়ের মত রান করতে।
দায়িত্বটা ছিল টপ ফোরের ওপর, অভিজ্ঞতা, প্রতিভা আর সামর্থ্য বিবেচনায় তাঁদের ওপর প্রত্যাশা ছিল আকাশসম। অথচ প্রত্যেকেই মোটা দাগে ব্যর্থ হয়েছেন; চলতি সিরিজে ভারতের সেরা ব্যাটার সরফরাজ খান, যিনি সিরিজ শুরু করেছিলেন তিন ম্যাচের অভিজ্ঞতা নিয়ে। চার ইনিংসে সবমিলিয়ে ১৭০ রান করেছেন তিনি, অবশ্য এর মধ্যে এক ইনিংসেই করেছেন ১৫০ রান!
প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩১ রানে চার উইকেট হারিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া, দ্বিতীয় ইনিংসে পান্ত-সরফরাজের অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ের সুবাদে চার উইকেট হারানোর আগ পর্যন্ত ৪০৮ রান পর্যন্ত করতে পেরেছিল। কিন্তু পরের ম্যাচের দুই ইনিংসে যথাক্রমে ৭০ ও ১২৭ রান করতেই টপ ফোর ফিরে গিয়েছিলেন প্যাভিলিয়নে।
অথচ একই সময়ে ব্ল্যাকক্যাপসরা প্রথম চার উইকেট হারানোর আগে করেছে ১৯৩, ১৯৭ এবং ১২৩ রান। ব্যবধানটা এখানেই স্পষ্ট, রাচিনকে হিসেবের বাইরে রাখলেও কনওয়ে, লাথাম প্রত্যেকেই রান পেয়েছেন। তৃতীয় টেস্টে তাই ভারতের টপ অর্ডারের ঘুরে দাঁড়ানোর কোন বিকল্প নেই, বিশেষ করে রোহিত এবং কোহলিকে রানে ফিরতেই হবে।
মুম্বাইয়ের উইকেট তাঁদের দু’জনেরই চেনা, মুম্বাইয়ে তাই তাঁদের রাজসিক প্রত্যাবর্তন দেখতে চাইবে সমর্থকরা। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলতে আগামী ছয় ম্যাচের চারটিতেই জিততে হবে ভারতকে, আর সেজন্য রোহিত-বিরাটের সোনালী দিন ফিরিয়ে আনতেই হবে।