‘আমার বেলা যে যায় অনুশীলনে’- সম্ভবত এই লাইনই গুনগুন করেন মুশফিকুর রহিম। সবার আগে অনুশীলনে আসেন তিনি। আবার সবার শেষে অনুশীলন শেষ করেন তিনি। কিন্তু এত অনুশীলনের ফায়দা কি? অনুশীলনে তো নিশ্চয়ই নিজের ত্রুটির সমাধান খোঁজার লক্ষ্যে সময় ব্যয় করেন খেলোয়াড়রা। কিন্তু সে ত্রুটি সমাধান হচ্ছে কই?
উইকেটরক্ষক হিসেবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন তিনি বহুবার। তিনি বড্ড বেশি ট্র্যাডিশনাল। আধুনিক ক্রিকেটের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেননি তিনি। এই যেমন আফগানিস্তানের বিপক্ষেও একটা রান আউট মিস করেছেন মুশফিক।
বল ধরে স্ট্যাম্পের কাছে বল নিয়ে আসতে আসতেই যেন সময় চলে যায়। হাসমতউল্লাহ ধীর গতির হতে পারেন, কিন্তু ততটাও ধীর গতির অবশ্য তিনি নন। মুশফিক স্ট্যাম্পের বেলস ফেলতে ফেলতে ক্রিজে প্রবেশ করে ফেলেন হাসমতউল্লাহ শাহীদি। সেই শাহীদি শেষ অবধি ৫২ রান করেছেন।
মুশফিক তো কিপিং অনুশীলন করেন না। যাদের প্রতিদিন মাঠে যাতায়াত, তাদের জানা আছে সারাটা দিন মুশফিকের কেটে যায় ব্যাটিং অনুশীলনে। কিন্তু সেটারও কি উন্নতি হচ্ছে তার? শেষ দশ ওয়ানডে ইনিংসে মুশফিকুর রহিমের গড় ২৭.৭৫। এর মধ্যে দুইটি ইনিংসে আবার তিনি থেকেছেন অপরাজিত। ফিফটি মাত্র একটি।
অপরাজিত সেই দুই ইনিংস বাদে মুশফিকের এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪৫ রান। এছাড়া ২০ রানের গণ্ডি পেরিয়েছেন দুই ইনিংসে। সারাদিন রোদে পুড়ে ব্যাটিংয়ের এই দশা নিশ্চয়ই মুশফিককেও পীড়া দেয়। এত অনুশীলন করেও যখন ফলাফল এসে ধরা দিচ্ছে না, বিবর্তীত হতে পারছেন না মুশফিক- তখন আর বলার বাকি থাকে না, সময় যে ফুরিয়ে এসেছে।
প্রায় ৩৮ এর কাছাকাছি চলে গেছে মুশফিকুর রহিমের বয়স। অনেকটা পথ তিনি পাড়ি দিয়েছেন ক্রিকেটাঙ্গনে। বাংলাদেশের জার্সির ভার সামলেছেন বহুকাল। সময় হয়েছে দু’দণ্ড দাঁড়িয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস নেওয়ার। পেছনে ফেলে রাখা দিনগুলোর স্মৃতি তিক্ত হওয়ার আগেই নিজেকে গুটিয়ে ফেলার সময় এসেছে। মুশফিকুর রহিম সেটা কবে উপলব্ধি করবেন ?