ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর লক্ষ্য এখন ১০০০ গোল। তবে তিনি বাস্তববাদী। তিনি জানেন, ক্যারিয়ারের বাকি সময়ে হয়তো সেই মাইলফলকে পৌঁছানো তার পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ৪০ বছর পূর্ণ করবেন রোনালদো। এই মুহূর্তে ফুটবল ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে ৯০৮ গোল নিয়ে আছেন। সম্প্রতি তিনি পর্তুগালের সর্বোচ্চ সম্মান, ‘কুইনাস দে প্লাটিনা’ পুরস্কারও পেয়েছেন।
রোনালদো বলেছেন যে তিনি এখন বর্তমানটা উপভোগ করতে চান। তিনি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার দিকে তেমন মনোযোগ দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘আমি আর সেই ১০০০ গোলের লক্ষ্য নিয়ে ভাবতে চাই না। কিন্তু কিছুদিন আগেই ৯০০ গোল পার করলাম, আর সেটা সহজেই হয়েছে। এখন শুধু উপভোগ করছি এবং দেখি আমার পা আরও কতটা সাড়া দেয়। ১০০০ এ পৌঁছালে ভালো, না হলেও আমি ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবেই থাকব।’
আল নাসরের সাথে তার বর্তমান চুক্তি ২০২৫ সালের জুনে শেষ হবে। তবে তিনি এখনও ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলবেন কিনা তা নিশ্চিত করেননি। পর্তুগাল দলের হয়ে খেলার প্রতি তার যে ভালোবাসা, সেটা এখনও অটুট। ২০০৩ সালে অভিষেকের পর থেকে ২১৬ ম্যাচে ১৩৩টি গোল করেছেন। ২০১৬ সালে ইউরো জিতেছেন। আর গত গ্রীষ্মে ষষ্ঠ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছেন।
নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে রোনালদো বললেন কিভাবে তাঁর লক্ষ্যের পরিধি সময়ের সাথে বড় হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জাতীয় দলে ১৮ বছর বয়সে যখন যোগ দিলাম, তখন আমার স্বপ্ন ছিল প্রথমবারের মতো জার্সি পরার। তারপর ২৫ ম্যাচ, ৫০ ম্যাচ—প্রত্যেকটি ধাপ ছিল নতুন এক অর্জন। তারপর ভাবলাম, কেন ১০০ হবে না? ১৫০, ২০০ কেন নয়? এটা দারুণ একটা অনুভূতি।’
সবকিছুর পরেও, পর্তুগাল দলে খেলার অনুভূতির জন্য তার ভালোবাসা একদম আলাদা। তাঁর ভাষায়, ‘এত ট্রফি জেতার পরেও জাতীয় দলে খেলার মতো কিছু নেই। সময়টা খুব দ্রুত চলে যায়। তাই যখন দেখি কিছু খেলোয়াড় দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চায় না, সেটা আমার খুব খারাপ লাগে।’
রোনালদোর কথাগুলো ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এক বড় অনুপ্রেরণা। তার ক্যারিয়ার শুধু গোল বা ট্রফির সংখ্যা দিয়ে সীমাবদ্ধ নয়। তিনি তার অধ্যবসায়, আবেগ এবং দেশপ্রেম দিয়ে সবার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি ভবিষ্যতে ১০০০ গোলের মাইলফলকে পৌঁছাতে পারুন বা না পারুন। তার প্রভাব ও কীর্তি চিরকাল ফুটবল ইতিহাসে অম্লান থাকবে।
রোনালদো এখনও মাঠে দাপট দেখিয়ে যাচ্ছেন। তিনি পর্তুগাল দলকে নেতৃত্ব দিয়ে নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। তিনি যা অর্জন করেছেন তা শুধু তার নয়, পুরো ফুটবল জগতের জন্য গর্বের বিষয়। তার মতো একজন খেলোয়াড়ের জন্য প্রত্যেকটি দিনই যেন নতুন এক ইতিহাস সৃষ্টি করার সুযোগ।