মার্কো ইয়ানসেন, মনুষ্যরূপী প্রোটিয়া ঘাতক

স্বাগতিকদের ১৯১ রানে অলআউট করার পর শ্রীলঙ্কা হয়তো বড় লিডের স্বপ্ন নিয়ে ব্যাটিং শুরু করেছিল। কিন্তু তৃতীয় ও চতুর্থ ওভারে দুই ওপেনার ফিরে গেলে সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে রূপ নিতে শুরু করে - বিশেষ করে ইয়ানসেনের লাইন লেন্থের বিপরীতে জবাব হারিয়ে ফেলেছিল ব্যাটাররা।

দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম শ্রীলঙ্কা প্রথম টেস্টকে আপনি চাইলে মার্কো ইয়ানসেন বনাম শ্রীলঙ্কার লড়াই বলতে পারেন। তিনি একাই তো সব করলেন, এক প্রান্ত থেকে টানা বল করে ধসিয়ে দিলেন ইনফর্ম একটা ব্যাটিং লাইনআপকে। এতটাই বিধ্বংসী ছিলেন যা কেউই ভাবেনি, যা কেউ কল্পনা করতে পারেনি – আর তাতই ইতিহাস রচিত হয়েছে ডারবানে, নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে সর্বনিন্ম রানে অলআউট হয়েছে শ্রীলঙ্কা।

শ্রীলঙ্কার ইনিংসের স্থায়ীত্ব ছিল মাত্র ১৩.৫ ওভার, এর মধ্যে এই বাঁ-হাতি টানা করেছেন ৬.৫ ওভার। তাতেই পেয়েছেন সাত উইকেট। অর্থাৎ গড়ে প্রতি ওভারেই একবার করে উদযাপনের উপলক্ষ তৈরি করেছিলেন – এমন তান্ডবের কারণেই স্রেফ ৪২ রানে গুটিয়ে গিয়েছে লঙ্কানরা।

স্বাগতিকদের ১৯১ রানে অলআউট করার পর শ্রীলঙ্কা হয়তো বড় লিডের স্বপ্ন নিয়ে ব্যাটিং শুরু করেছিল। কিন্তু তৃতীয় ও চতুর্থ ওভারে দুই ওপেনার ফিরে গেলে সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে রূপ নিতে শুরু করে – বিশেষ করে ইয়ানসেনের লাইন লেন্থের বিপরীতে জবাব হারিয়ে ফেলেছিল ব্যাটাররা।

উপরের পাঁচজন ব্যাটার যখন প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তখন দলীয় সংগ্রহ ছিল মাত্র ৩২ রান। পরের দিকে ব্যাটাররা প্রতিরোধ গড়বে, সেটা তো না-ই; উল্টো দশ রানের ব্যবধানে বাকিরাও একে একে ফিরে গেলেন।

পাথুম নিশাঙ্কা, দীনেশ চান্দিমাল, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা – এদের ব্যাটে ভর করেই গত সিরিজে দারুণ সব স্মৃতি তৈরি করেছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু এবার আর সেটার পুনরাবৃত্তি ঘটেনি, ঘটতে দেননি ইয়ানসেন। সবমিলিয়ে তাঁর বোলিং ফিগার ছিল ৬.৫-১-১৩-৭!

এর মধ্য দিয়ে এক গাদা রেকর্ডও তৈরি হয়েছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কোন প্রোটিয়া বোলারের এটি দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগার। তবে লজ্জার রেকর্ডে ডুবতে কমতি রাখেনি লঙ্কানরা; এদিন মাত্র ৮৩ বল খেলেই গুটিয়ে গিয়েছে দলটি, টেস্ট ইতিহাসে এর চেয়ে দ্রুত অলআউট হওয়ার ঘটনা আছে কেবল একটি।

Share via
Copy link