পর পর দুই ম্যাচে হার, সেটাও আবার নিশ্চিত জয় হাতছানি উপেক্ষা করেই। ভাগ্য কিংবা ক্রিকেটারদের ছোট ভুলে টুর্নামেন্ট থেকেই বাদ পড়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল রংপুর রাইডার্স। প্রথমবারের মত কোন বিদেশী লিগে খেলতে এসে খাদের কিনারায় চলে এসেছিল তাঁদের পা।
বাকি ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতা, গ্রুপ পর্বের বাকি দুই ম্যাচের একটাতে হারলেই দেশের বিমান ধরতে হবে রংপুর রাইডার্সকে। এমন সমীকরণ সামনে আসতেই বদলে যায়, রীতিমতো ভিন্ন একটা দল হয়ে উঠে তাঁরা। পরের দুই ম্যাচ তো বটেই, ফাইনালেও আধিপত্য দেখিয়ে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশী এই ফ্রাঞ্চাইজি – এ যেন ধ্বংসস্তুপ থেকে বেরিয়ে চ্যাম্পিয়ন বনে যাওয়ার কাব্য।
শুরুটা হয়েছিল গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে; ব্যাটাররা এদিনও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছিলেন, স্রেফ ১১৭ রান করতে পেরেছিল টিম রাইডার্স। তাই তো সমর্থকেরা হ্যাটট্রিক পরাজয়ের ক্ষণ গুণতে শুরু করে।
কিন্তু কামরুল ইসলাম রাব্বি এক ওভারে তিন উইকট নিয়ে একাই ঘুরিয়ে দেন ম্যাচের মোড়। তাঁর সৃষ্ট ধ্বস থেকে গায়ানা আর ফিরতে পারেনি। ফলাফল, ১৫ রানের রোমাঞ্চকর একটা জয় পায় নুরুল হাসান সোহানের দল। সেই সাথে পরের ম্যাচটা হয়ে যায় অঘোষিত সেমিফাইনাল, তবে লাহোর কালান্দার্স চেষ্টা করেও পারেনি তাঁদের সাথে টক্কর দিতে।
ব্যাক টু ব্যাক ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠে আসে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। পুরো দেশ তখন তাকিয়ে ছিল অধীর আগ্রহে, একটা ট্রফির অপেক্ষায় ছিল কোটি দর্শক। সেই প্রতীক্ষা সার্থক হয়েছে; সৌম্য সরকারের তান্ডবের পর শেখ মেহেদী হাসান, হারমিত সিংদের দায়িত্বশীল বোলিংয়ে বিশাল বড় জয় পেয়েছে দলটা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদের কামব্যাক নিয়ে যেমন কাব্য রচিত হয়, তেমনি রংপুর রাইডার্সের এমন রাজসিক প্রত্যাবর্তন নিয়েও কাব্য হবে নিশ্চয়ই। টুর্নামেন্টে এত বাজে শুরুর পর শিরোপা জিতে দেশে ফেরা নিশ্চয়ই ব্যাখ্যাতীত আনন্দ সৃষ্টি করছে পুরো বাংলাদেশে!