ধারাবাহিক এই সৌম্যকেই তো সবসময় দরকার

কিন্তু ব্যাটারদের বেহাল দশায় সৌম্যও যে গা ভাসিয়ে দেননি, সেজন্যে প্রশংসা তার প্রাপ্য। এছাড়া চলমান ধারাবাহিকতা ধরে রাখাও তার কর্তব্য।

একটা রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ম্যাচের শুরুতে সৌম্য সরকার জ্বেলেছিলেন জয়ের প্রদীপ। ধারাবাহিকতার ছেদ পড়েনি তার। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে তিনি ব্যাট চালিয়েছেন আপন ছন্দে। কিংসটাউনে তার ইনিংস বাংলাদেশকে ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছিল বটে।

পরপর দুই বলে তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে। ১৫ রানের মাথায় দুই উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপে তখন বাংলাদেশ। ৩০ রানের মাথায় সাজঘরে তৃতীয় ব্যাটার আফিফ হোসেন। অপরপ্রান্ত থেকে টপ অর্ডারের এমন বেহাল দশা দেখে গেছেন সৌম্য সরকার।

আফিফের বিদায়ের সময় সৌম্যর রান ১১ বলে ১৫। ব্যাটিং বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে তখন বাংলাদেশ। তবে সৌম্যকে যেন দমানো দায়। সদ্যই শেষ হওয়া গ্লোবাল সুপার লিগে তিনি হয়েছেন টুর্নামেন্ট সেরা। রংপুর রাইডার্সকে চ্যাম্পিয়নশিপ জিতিয়েছেন ব্যাটে ধারাবাহিক অবদান রেখে।

বরাবরই সৌম্যের উপর বাংলাদেশ ক্রিকেট রেখেছিল ভরসা। কখনোই ধারাবাহিকভাবে দলকে প্রতিদান দিয়ে যেতে পারেননি তিনি। কিন্তু এদফা যেন দলের প্রয়োজন মেটানোর আপ্রাণ চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছেন সৌম্য। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও একটি হাফসেঞ্চুরি এসেছে তার ব্যাট থেকে। ৭৩ রানের ইনিংসটিকে শতকে পরিণত করতে না পারার আক্ষেপ তার নিশ্চয়ই রয়েছে।

আক্ষেপ থেকেই প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দারুণ কিছু করে দেখাতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এদিনও তাকে থামতে হয়েছে ৪৩ রানে। অর্ধশতক না পেলেও, তার ইনিংসকে খাটো করে দেখবার উপায় নেই। ১৩৪ স্ট্রাইকরেটের ইনিংসটিতে তিনি তিনটি ছক্কার পাশাপাশি দুইটি চার হাঁকিয়েছেন।

বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারকে একেবারে মুখ থুবড়ে পড়তে দেননি। পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে তিনি যখন প্যাভিলিয়নে ফেরেন, তখনও অবশ্য স্বস্তিদায়ক অবস্থানে ছিল না দল। ৯৬ রানে পাঁচ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। কিন্তু তার ৪৩ রানের ইনিংসটিই তো দলের সংগ্রহকে অতদূর অবধি নিয়ে গেছে। কেননা শুরুর চার ব্যাটারের মধ্যে তিন জনের মোট রানের যোগফলও সৌম্যের রানের প্রায় অর্ধেক।

প্রকৃত টি-টোয়েন্টি ঘরনার ব্যাটিং তিনি করেছেন, সেটা অবশ্য বলার উপায় নেই। কিন্তু ব্যাটারদের বেহাল দশায় তিনিও যে গা ভাসিয়ে দেননি, সেজন্যে প্রশংসা তার প্রাপ্য। এছাড়া চলমান ধারাবাহিকতা ধরে রাখাও তার কর্তব্য। তার ওই ইনিংসটি বাংলাদেশকে ম্যাচ টিকিয়ে রেখেছিল, দিয়েছিল একটা ভীত। সেই ভীতকে শক্ত করেছেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি।

এরপর তো রোমাঞ্চ ছড়িয়ে, উন্মাদনায় ভাসিয়ে ম্যাচটা নিজেদের করে নিয়েছেন টাইগার পেসাররা। তাতে করে বিজয় দিবসে মলিন বদনে ছাড়তে হয়নি মাঠ। ওয়ানডে সিরিজের হতাশা কাটিয়ে উঠে সিরিজ জয়ের সুবাতাসে গা ভাসিয়েছে লিটন দাসের দল।

Share via
Copy link