ছয়টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন জাকের আলী অনিক। বাংলাদেশি একজন ব্যাটার ক্যারিবিয়ানদের মাটিতে দাঁড়িয়ে পেশিশক্তির দাপট দেখালেন। এমন দৃশ্য চোখের শান্তি, মনের প্রশান্তি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরটা জাকেরের জন্যে ছিল ‘ব্রেকআউট’ সিরিজ। তিনি যে পরিণত হয়েই এসেছেন জাতীয় দলে সে প্রমাণই রেখেছেন বীরদর্পে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। প্রতিটা ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে ধ্রুব ছিলেন জাকের। না, তিনি বোঝা হয়ে ছিলেন না, তিনি ছিলেন যোগ্য সেনানি হয়ে। তিন ফরম্যাটেই অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন জাকের। দ্বিতীয় টেস্টে তো শতকের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। ৯১ রানে থামতে হয়েছিল তাকে।
কিন্তু তার সেই ৯১ রানের ইনিংসটি বাংলাদেশের টেস্ট জয়ে রেখেছিল গুরুত্বপূর্ণ অবদান। পরস্থিতি বিবেচনায় ইনিংসটি ছিল ভীষণ কার্যকর। এছাড়া এই পুরো সিরিজে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটারও ছিলেন জাকের আলি অনিক। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে মোট ৪০৯ রান করেছেন তিনি। যার মধ্যে টেস্টে দুই হাফ সেঞ্চুরি সহ মোট চারটি হাফসেঞ্চুরি রয়েছে তার নামের পাশে।
এমনকি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে দুই পঞ্চাশোর্ধ ইনিংসে তিনি ছিলেন অপরাজিত। তৃতীয় ওয়ানডেতে তার অপরাজিত ৬২ রান দলের জয়ের দ্বার উন্মোচিত করতে পারেনি। কিন্তু তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৭২ রানে অপরাজিত থেকেছেন তিনি। আর সেই ৭২ রান এবার দলের জয় নিশ্চিত করেছে বটে।
বেশ ভরসা করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল জাকেরকে। বাংলাদেশের মূল দলের হয়ে খেলা প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই যে অর্ধশতক হাঁকিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। তাইতো প্রত্যাশার পারদ ছুঁয়েছিল আকাশ। কিন্তু প্রত্যাশার আশেপাশেও বিশ্বকাপের ছিল না তার বিচরণ। সবাই তাই ভেবে নিয়েছিল তিনি বোধহয় ‘ওভারহাইপড’।
কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের কথা মিথ্যে হতে দেননি জাকের। সালাউদ্দিন জাকেরকে ‘রেডি প্রোডাক্ট’ বলেছিলেন। সেই প্রমাণই রাখলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে জাকের। এখনই অবশ্য পূর্ণতা পেয়ে যায়নি তার ক্যারিয়ার। তিনি বরং প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিলেন আরও।
চাপে নুইয়ে পড়ার সুযোগ নেই তার। তাকে এখন এগিয়ে যেতে হবে সামনের দিকে। যতদিন সম্ভব ধরে রাখতে হবে এই ধারাবাহিকতা। খারপ সময় আসবে নিশ্চয়ই। তখন সমালোচকদেরও যেন দ্বিধা হয় তাকে নিয়ে সমালোচনা করতে। এমন একটা জায়গায় পৌঁছাতে হবে জাকেরকে। তিনি কি পারবেন?