রাচিনের ব্যাটে জাদু আছে

গেল ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের উদীয়মান খেলোয়াড়দের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছিলেন। সেবার তিনি তিনটি সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন।

এলেন, খেললেন, সেঞ্চুরি হাঁকালেন। বিস্ময় জাগানিয়া এক চরিত্রে পরিণত হয়েছেন রাচিন রবীন্দ্র। প্রথম একাদশে তিনি প্রাধান্য পান না। কেউ একজন ইনজুরি হলে কিংবা অসুস্থ হলেই কেবল তার ডাক আসে। সাইড বেঞ্চে বসে তিনি ক্ষণ গুনতে থাকেন। যখনই সুযোগ মেলে, তখনই নিজের দু’হাত প্রসারিত করে আকাশ পানে উঁচিয়ে ধরেন।

গেল ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের উদীয়মান খেলোয়াড়দের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছিলেন। সেবার তিনি তিনটি সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন। দশ ম্যাচের মধ্যে দুইটি ফিফটিও এসেছিল তার ব্যাট থেকে। সেই রাচিনের বদল ঘটেনি এক ফোঁটাও।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নেমেছেন ড্যারিল মিশেলের জায়গায়। খানিকটা অসুস্থ মিশেলের পরিবর্তে রাচিনকে একাদশে সুযোগ দিল নিউজিল্যান্ডের টিম ম্যানেজমেন্ট। আর সেই সুযোগকে সেঞ্চুরিতে রুপান্তরিত করলেন বা-হাতি এই ব্যাটার।

চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে এসেও সেঞ্চুরির দেখা ঠিকই পেয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের ছুড়ে দেয় ২৩৭ রানের স্বল্প লক্ষ্যমাত্রা। সেই টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের মনে কাঁপন ধরিয়ে দেন তাসকিন আহমেদ ও নাহিদ রানা। কিন্তু এরপর আর বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরার সুযোগ দেননি রাচিন রবীন্দ্র।

অবশ্য একটা মৃদু সুযোগ উপহার তিনি দিয়েছিলেন বটে। ২৫ রানের মাথায় রানআউটের একটা সুযোগ তুলে দিয়েছিলেন তিনি বাংলাদেশের হাতে। তানজিদ হাসান তামিম যথেষ্ট সময় পেয়েও রাচিনকে রান আউট করতে পারেননি। এরপর আর রাচিনকে থামায় কে!

একা হাতে বাংলাদেশের বিদায় নিশ্চিত করলেন রাচিন রবীন্দ্র। সাথে স্বাগতিক পাকিস্তানের বিদায় ঘন্টাও বাজিয়ে দিয়েছেন তিনি। ওয়ানডে বিশ্বকাপে হাঁকানো সেই তিন সেঞ্চুরির পর এটি তার চতুর্থ সেঞ্চুরি। আইসিসি ইভেন্ট এলেই রাচিনের ব্যাট হয়ে ওঠে তরবারী। আইসিসি ইভেন্টে ১১ ম্যাচ খেলেই চারটি সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন রাচিন রবীন্দ্র।

তার আগে নিউজিল্যান্ডের কোন ব্যাটার এত স্বল্প সময়ে এতগুলো সেঞ্চুরি কেউ করতে পারেনি। কেন উইলিয়ামসন এখন পর্যন্ত তিনটি সেঞ্চুরি করেছেন। তার প্রয়োজন হয়েছে ৩৪টি ইনিংস। রাচিন যে সবার থেকে আলাদা, সেটা আর নতুন করে না বললেও চলে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ শেষ না করতে পারার আক্ষেপ নিয়ে তিনি প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন। ১০৫ বলে ১১২ রান করে তিনি বিদায় নেওয়ার আগে অবশ্য ম্যাচ ব্ল্যাকক্যাপসদের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছেন। তাইতো ক্রিকেট সমর্থকরা বলতেই পারেন – ‘এই ছেলের ব্যাটে জাদু আছে।’

Share via
Copy link