পঞ্চান্ন বছরের ওয়ানডে ইতিহাস, প্রায় সাড়ে চার হাজার ক্রিকেটারের পদচারণা। কিন্তু ৮,০০০ রানের মাইলফলক ছুঁতে পেরেছেন মাত্র ৩৩ জন। আর বিরাট কোহলি একাই তাড়া করতে নেমে করেছেন আট হাজারের বেশি রান। চাপ, পরিস্থিতি, প্রতিপক্ষ, প্রতিপক্ষের ধুন্ধুমার বোলিং ইউনিট — সবকিছুকে উপেক্ষা করেছেন! কিংবদন্তি মানে তো এটাই।
যখন স্কোরবোর্ডের চাপ পাহাড়সম, যখন প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে লড়তে হয়, যখন এক মুহূর্তের ভুলে ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে — সেই কঠিন মুহূর্তগুলোতে তিনিই ভারতের জন্য দাঁড়িয়ে থেকেছেন। এটাই তো কিংবদন্তি হওয়ার সত্যিকারের সংজ্ঞা! এই মুহূর্তগুলো, এই সময়গুলো – এই একেকটা ইনিংসগুলো বিরাট কোহলিকে বাকিদের চেয়ে আলাদা করে তুলেছে।
এটা কোহলির পৃথিবী। সেখানে আমি, আপনি বা প্রতিপক্ষ — সবাই নীরব দর্শক। কোহলির বিশ্বসেরা, কোহলি সর্বকালের সেরা — এই কথাগুলো এখন অবলীলায় বলে ফেলা যায়। ৯৮ বল খেলেছেন, ৮৪ রান করেছেন। ম্যাচ যখন ভারতের হাতের মুঠোয় চলে গেছে — তখন বীরের বেশে ফিরে গেলেন সাজঘরে।
২৬৫ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল ভারত? না, বিরাট কোহলির জন্য সেটা যথেষ্ট ছিল না। তিনি শুধু রান তাড়া করেন না, প্রতিপক্ষের বুকের মধ্যে ঝড় তুলে দেন। আবারও সেই চেনা গল্প, আবারও সেই পরিচিত দৃশ্যপট—জয়ের অঙ্কটা লিখলেন তিনি, যেন ভাগ্যও অপেক্ষায় ছিল এই মহাকাব্যের জন্য। চাপ যখন বাড়ছিল, তিনি তখন দাঁড়িয়ে বললেন — ‘আমিই ইতিহাস!’ আরেকবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দুয়ারে ভারত, সেই রাস্তাটা দেখানো কিং কোহলির।
অনেকগুলো নতুন পালক যুক্ত হল বিরাট রাজার মুকুটে। আইসিসি ইভেন্টে আড়াই হাজার রান পূর্ণ করলেন, নক-আউট ম্যাচে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ১০ টি পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেললেন। আর এত সব ইতিহাসের দিনে ভারত তো জিতবেই, ভারত তো ফাইনালের মঞ্চে উঠবেই। শেষটা রাঙিয়ে দিলে কোহলির ইনিংসটা পূর্ণতা পারত। কিন্তু, রাজা একা সব করবেন কেন, তাঁর সেনাপতিরাও কি কম নাকি!