প্রতিদিনের মত ঝড় তোলার জন্য ব্যাটে শান দিচ্ছিলেন অভিষেক শর্মা, আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ঈশান কিষাণও ব্যাট-প্যাড নিয়ে প্রস্তুত আরো একবার তান্ডব চালাতে। কিন্তু স্রেফ দুই বলের ব্যবধানে প্যাভিলিয়নে ফেরত গেলেন তাঁরা – ক্ষণিকের জাদুতে ম্যাচের গতিপথ নির্ধারণ করে দেয়া বোলারের নাম শার্দুল ঠাকুর, টুর্নামেন্ট শুরুর দুইদিন আগ পর্যন যার জন্য আইপিএলের দরজা বন্ধ ছিল।
বছর দেড়েক আগেও জাতীয় দলে জায়গা পাকা ছিল এই তারকার, এরপর খানিকটা ছন্দপতন হলেও তাঁর সামর্থ্য নিয়ে সংশয় জাগার কথা নয় কারো। ব্যাটিং, বোলিং দুই বিভাগেই অবদান রাখতে জানেন তিনি। অথচ মেগা নিলামে তাঁকে নিয়ে আগ্রহ দেখায়নি কেউই – এমন অবহেলা নির্ঘাত তাতিয়ে দিয়েছিল এই ডানহাতিকে।
ক্রিকেট বিধাতাও টের পেয়েছিলেন সেই উত্তাপ, তাই ভাগ্যের ছোঁয়ায় সুযোগ পেয়ে যান তিনি। নিয়মিত পেসাররা চোটে থাকায় লখনৌ সুপার জায়ান্টস তড়িঘড়ি করে তাঁকে স্কোয়াডে ভেড়ায় – এরপর যা হওয়ার তাই হলো, ভেতরের সব তেজ বাইশ গজে দেখিয়েছেন তিনি আর তাঁর উত্তাপে পুড়েছে বাঘা বাঘা ব্যাটাররা।
সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে পাওয়ার প্লেতে বোলিং করা যেকোনো বোলারের জন্য আতঙ্কের, কিন্তু শার্দুলের বিশ্বাস ছিল নিজের ওপর। প্রথম স্পেলে দুই ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়েছেন তিনি, সেই সাথে অভিষেক এবং ঈশানের মহাগুরুত্বপূর্ণ উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন।
দ্বিতীয় স্পেলে ফিরেও ঝলমলে পারফরম্যান্স দেখা গিয়েছে তাঁর কাছে, দুই ওভারে দুই উইকেট পাওয়ার বিনিময়ে খরচ করেছেন ১৬ রান। বিশেষ করে উনিশতম ওভারে মাত্র তিন রান দিয়েছেন তিনি, দুর্দান্ত বটে।
এর আগের ম্যাচেও অবশ্য এই অলরাউন্ডার মুগ্ধতা ছড়িয়েছিলেন, নতুন বলে দুই উইকেট এনে দিয়েছিলেন দলকে। যদিও ঋষাভ পান্ত ডেথে ভরসা রাখেনি তাঁর ওপর, সেই সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল তা হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে এসে প্রমাণ করেছেন তিনি।
অবহেলিত শার্দুল ঠাকুর এখন আইপিএলের অন্যতম ইম্প্যাক্টফুল বোলার বনে গিয়েছেন। চোখে আঙুল দিয়ে সবাইকে বুঝিয়ে দিয়েছেন নিজের গুরুত্ব – প্রত্যাবর্তন আসলে এমনই হওয়া উচিত। তাঁর ক্যারিয়ারেও দ্বিতীয় অধ্যায়ের সূচনা হয়ে থাকবে এই ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প।