সফেদ জার্সির মায়ায় কিলিয়ান এমবাপ্পে পড়েছিলেন শৈশবেই। কিন্তু শৈশব পেরিয়ে, কৈশর গেছে গত হয়ে, মাঝে বিশ্ব জয়ের দারুণ স্মৃতি হয়েছে তার সঙ্গী। তবুও শৈশবের প্রেমকে আর উপেক্ষা করতে পারেননি। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদের প্রতি তার এই মায়ার টান অনুভব করার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন দু’জন। একজন তারই স্বদেশী কিংবদন্তি জিনেদিন জিদান, আরেকজন পর্তুগীজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
আসি আসি করে টালবাহানার খেলাঘরে এমবাপ্পে মাদ্রিদকে রেখেছিলেন অপেক্ষায়। কিন্তু সকল অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ২০২৪ সালের গ্রীষ্মকালীন দলবদলে ফ্রান্স থেকে স্পেনে পাড়ি জমান। শুরুটা তার হয়েছিল বিষাদ লেপ্টে। কিন্তু ধূসর সেই চাদর সরিয়ে তিনি ক্রমশ হয়ে উঠছেন লস ব্ল্যাঙ্কোসদের ‘মেইন ম্যান’।
শত প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার দীক্ষাটা নিশ্চয়ই তিনি ক্রিশ্চিয়ানোর কাছ থেকেই পেয়েছেন। তবে ফুটবল পায়ে সবুজ অরণ্যে হারিয়ে যাওয়ার প্রথম রসদ তাকে জুগিয়েছিলেন জিনেদিন জিদান। অকপটে সে কথা স্বীকারও করেছেন কিলিয়ান।
তিনি বলেন, ‘জিদান ছিলেন আমার আইডল, আমি খেলা শুরু করেছি তাকে দেখেই।’ জিনেদিন জিদান ফ্রান্সের সর্বকালের সেরাদের কাতারে উপরের দিকেই থাকবেন। এমনকি গোটা বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের সংক্ষিপ্ত তালিকাতেও স্থান পাবেন তিনি। ফরাসি কিংবদন্তির গায়ে উঠেছিল সফেদ জার্সিও। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে তিনিও ছড়িয়েছিলেন জ্যোতি।
তবে রিয়ালের প্রতি এমবাপ্পের টান প্রবল হয় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর আগমনের পর। এরপর প্রতিটি ম্যাচই তিনি দেখেছেন পাগলাটে ভক্ত হিসেবে। তখন থেকেই রিয়ালের জার্সিটা গায়ে জড়ানোর ইচ্ছে তার বেড়েছে কয়েকগুণ। যদিও ১৩ বছর বয়সেই তিনি রিয়ালে যোগ দেওয়ার দ্বারপ্রান্তে ছিলেন। সেই সময় এমবাপ্পে ভালদেবেবাসে ছিলেনও কয়েকদিন।
কিন্তু পরিবারের অনীহাতে স্রেফ কালক্ষেপণই হয়েছে। ২০২২ সালে তো প্রায় চলেই এসেছিলেন তিনি মাদ্রিদের ডেরায়। কিন্তু ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের আদেশ, অনুরোধ আর নির্দেশ তো ফেলে দেওয়া দায়। সব বাঁধা-বিপত্তি পেরিয়ে, তিনি এখন মাদ্রিদের জার্সিতে প্রতি নিয়ত মাঠে নামছেন। অভিষেক মৌসুমে ৩৩ খানা গোল করে রোনালদোকে ছাপিয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে এমবাপ্পে। ইতিহাস গড়তেই তো এসেছেন তিনি।