ছক্কাগুলো যখন একের পর এক গ্যালারির দিকে উড়ছিল, তখন হয়তো কেউ জানত না — এই ইনিংসটা শুধু অভিষেক শর্মার গল্প নয়। গল্পটা রাজকুমার শর্মারও, যিনি ছেলে আউট হয়ে যাবেন ভেবে এতদিন খেলা দেখতে আসতেন না।
তবে, হায়দ্রাবাদের এই রাত পাল্টে দিল সকল কুসংস্কার। বাবা-মার সামনেই সেঞ্চুরি করে ফেললেন অভিষেক শর্মা। ৫৫ বলে ১৪১। সংখ্যাটা চমক জাগায়। প্রতিপক্ষ দলে আর্শদ্বীপ সিং, সেই ১৪ বছর বয়স থেকে তিনি খেলছেন অভিষেক শর্মার সাথে। তিনিও এসে আর্শদ্বীপের বাবা-মার আশীর্বাদ নিয়ে গেলেন। বলে গেলেন, ‘আঙ্কেলজি যে আশীর্বাদ ওকে দাও, সেটা আমারও চাই।’
অভিষেকের বাবা বলছিলেন, ‘ওদের আমি ছোটবেলা থেকে দেখি, বুটের ফিতা বাঁধতেও জানত না তখন।’ সেখান থেকে অভিষেক পৌঁছে গেছেন এমন এক জায়গায়, যেখানে স্টেডিয়ামের আলো শুধু তার নয়, তার পিতামাতার চোখেও ঝিলমিল করে।
অভিষেক যখন ফর্মহীনতায় ভুগছিলেন, তখন নিজেই বলেছিলেন মাকে, ‘এসো, আমার পাশে থাকো। তোমরা এলেই হয়তো কিছু বদলাবে।’
বদলেছে সেই দু:সময়। কেবল একটা ইনিংস নয়, বদলে গেছে বিশ্বাস, ভেঙে গেছে কুসংস্কার। যে সময়টায় অভিষেক একের পর এক ছক্কা মারছেন, ঠিক সেই সময় গ্যালারির এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে তার বাবা হয়তো বুঝেছেন — এই খেলায় কোনো কুসংস্কার খাটে না।
সেঞ্চুরির ঠিক আগে, যখন অভিষেক ৯৮-এ ছিলেন, তখন বাবা রাজকুমার মনে মনে বলছিলেন, ‘একটা সিঙ্গেল নে বাপ আমার!’
ঠিকই সিঙ্গেল নিলেন অভিষেক। সেঞ্চুরিও আসল সিঙ্গেল থেকেই। অথচ, পুরো ইনিংস সাজানো চার-ছক্কায়। গেল জন্মদিনে খোদ মেন্টর যুবরাজ সিংও বলেছিলেন, ‘মহারাজ, সিঙ্গেল নিতে শিখো।’
হ্যাঁ, এবার বলা যায়, সিঙ্গেল নেওয়া শিখে ফেলেছেন অভিষেক! অবাক যুবরাজ বললেন, ‘এত ম্যাচিউর হয়ে গেছে অভিষেক!’