গুটি গুটি পায়ে হাটতে হাটতে একদিন ঠিকই পৌঁছে যান মোহাম্মদ রিজওয়ান। তিনি জানেন একটু কঠিন পথ কি করে পাড়ি দিতে হয়। মুলতান সুলতানের হয়ে তেমনই এক পরিস্থিতি ডিঙিয়ে, দলে জন্যের ফিফটি হাঁকালেন রিজওয়ান। একেবারে অধিনায়ক সুলভ একটা ইনিংসের উপহার দিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
লাহোর কালান্দার্সের বিপক্ষে ১৮৫ রানের পুঁজি পেয়েছে মুলতান সুলতান। তাদের এই সংগ্রহ এতদূর অবধি আসতেই পারত না, যদি না রিজওয়ান ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন বাইশ গজে। ইয়াসির খানের কল্যাণে শুরুটা দারুণ হলেও, মাঝপথে দ্রুত সময়ের মধ্যে দুই উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে মুলতান সুলতান।
এরপর রিজওয়ান যে কাজটায় পটু, ঠিক সে কাজটাই করলেন- ইনিংসের হাল ধরলেন। হাল ধরতে গিয়ে একটা পর্যায়ে তার ব্যাটিং প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু একজন সুদক্ষ খেলোয়াড় জানেন, ঠিক কখন তার ব্যাটিং গিয়ার পরিবর্তন করতে হয়। তিনি অপরপ্রান্তে থাকা কামরান গুলহামকে হাতখুলে খেলার সুযোগ দিয়ে, প্রথমে সঙ্গ দিয়ে যান।
কামরান সুযোগ পেয়ে চার খানা ছক্কা হাঁকান। আরও দুই খানা চারের কল্যাণে তিনিও ফিফটির দেখা পান। এই সময়ের মধ্যে সেট ব্যাটার ও অধিনায়ক হিসেবে প্রতিপক্ষ বোলারদের চার্জ করার দায়িত্বটা অবধারিতভাবেই রিজওয়ানের কাঁধে এসে পড়ে। সেই দায়িত্ব নিতে তার বিন্দুমাত্র কষ্ট হয়নি। বরং শাহিন শাহ আফ্রিদিদের প্রায় প্রতিটি বলকেই তিনি বাউন্ডারিতে পাঠিয়েছেন।
৪৮ বলে ৭৬ রানে অপরাজিত থেকে তিনি মাঠ ছেড়েছেন। তার মোকাবেলা করা শেষ দশটি বলের মধ্যে ছয়টি বলে ঠিকানা হয়েছে বাউন্ডারির ওপারে। এর মধ্যে রয়েছে দুইটি ছয় ও চারটি চার। তার ব্যাটিং গিয়ার পরিবর্তনের জন্যেই লড়াই করবার পুঁজি জড়ো হয়েছে।
তবে মাত্র ছয় বলে ৩৬ রান নেওয়া রিজওয়ান ৪৮ বল খেলে কেন ৭৬ রান করলেন- সে প্রশ্ন তোলা যেতেই পারে। কিন্তু তিনি টিকে ছিলেন বলেই শেষ অবধি গিয়ার পরিবর্তনে দ্রুত রান তুলতে পেরেছেন। তাছাড়া পাকিস্তানের সব পর্যায়ের ক্রিকেটেই তো হুড়মুড় করে মিডল অর্ডার গুড়িয়ে যাওয়ার ঘটনাও রয়েছে। তাইতো রিজওয়ানের এই ইনিংসটির মাহাত্ম্য অন্তত বিশ্বব্যাপী চলমান টি-টোয়েন্টি ব্যাটিংয়ের টেমপ্লেটে ফেলে বিচার করা কঠিন।