যেটুকু আছে বাকি তাতেই কি ছড়াবে সৌম্যর দ্যুতি!

উত্থান-পতনের কারণেই একটা মিডিওকার ক্যারিয়ারে থমকে গেছেন সৌম্য। সমস্ত সম্ভাবনা থাকলেও সৌম্য হতে পারেননি গ্রেট ব্যাটার।

লম্বা-চওড়া ঠিক যেন সিনেমার হিরো। ব্যাট হাতেও ভীষণ সাবলীল। ব্যাটে-বলে সংযোগ ঘটলেই উৎপন্ন হয় শ্রুতিমধুর নিনাদ। এমন সব বিশেষণে লেপ্টেই ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন সৌম্য সরকার। এখনও বাইশ গজে গেলে আলাদা আবেদন তৈরি করেন সৌম্য। কিন্তু সেই আবেদনের ডাকে সাড়া দেন স্রেফ কোচেরা।

শরীর থেকে তারুণ্য বিদায় নিয়েছে। বয়স হয়েছে, অভিজ্ঞতা বেড়েছে। তবে সৌম্য যেন রয়ে গেছেন যেখান থেকে শুরু করেছিলেন ঠিক সেখানটায়। উন্নতি আর হচ্ছে না। মাঝে মধ্যে পারফরমেন্সের ঝলক দেখান বটে, তবে সেসব ক্ষণস্থায়ী। এতদিনে তার হওয়ার কথা ছিল কিংবদন্তিদের একজন।

এখনও সময় ফুরিয়ে যায়নি। কিন্তু বাকি থাকা সময়টুকু তিনি কাজে লাগাতে পারবেন- সে নিশ্চয়তাও তো ধোঁয়াশায় ঘেরা। তবুও তার উপর আস্থা রেখেছে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। বদলে ফেলা টি-টোয়েন্টি সেটআপে বেশ গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সৌম্য, সে বিষয়টি তাকে অনুভব করানো হচ্ছে প্রায় প্রতিটা মুহূর্তে।

অনুশীলনে বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনেও অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের তকমা জুটছে। তার মানে দাঁড়ায় তার প্রতি প্রত্যাশা কমেনি বরং বেড়েছে। তবে তিনি ঠিক কতটুকু ডেলিভার করতে পারবেন সে নিয়ে সংশয় কিন্তু রয়েই গেছে।

মূলত সাদা বলের ক্রিকেটের জন্যেই তাকে বিবেচনায় রাখছে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। লাল বলের ভাবনাতে যে তিনি নেই সেই ২০২১ সাল থেকেই। সম্প্রতি শেষ হওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ সৌম্যর কেটেছে অম্ল-মধুর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে।

একটা সেঞ্চুরি ও দুইটি হাফ সেঞ্চুরির পাশাপাশি তিনটি শূন্য রানের ইনিংসও রয়েছে তার নামের পাশে। ১২ ইনিংসে ব্যাট করে ৩৯৯ রান যুক্ত করেছেন নিজের ঝুলিতে। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটের সর্বোচ্চ টুর্নামেন্টে সেরা রান সংগ্রাহকদের সেরা দশে নেই সৌম্যর নাম।

২৫ নম্বর ব্যাটার অন্তত তার হওয়ার কথা নয়। আবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট বিবেচনায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগই তো দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ মানদণ্ড। সেই টুর্নামেন্টে ইনজুরির বাঁধা ডিঙিয়ে তিনি খেলতে নেমেছিলেন। চার ম্যাচে ১০৫ রান করেছিলেন। এর মধ্যে একটি ইনিংসেই সর্বোচ্চ ৭৪ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।

অথচ এর আগেই রংপুর রাইডার্সকে গ্লোবাল সুপার লিগ জিততে সহয়তা করেছিলেন তিনি। ১৮৮ রান করেছিলেন স্রেফ পাঁচ ম্যাচে। এখানেই মূলত সমস্যার উদ্রেক ঘটে। ধারাবাহিক তিনি হতেই পারেননা। স্বল্প সময়ের মধ্যে তার পারফরমেন্সের তীব্রতা হাওয়া হয়ে যায়।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ফিফটি করেছিলেন। সেই ট্যুরে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও একটা ৪৩ রানের ইনিংস খেলেছেন। এরপর আবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মঞ্চে ভারতের বিপক্ষে শূন্য রানে ফিরেছেন। মাঝে অবশ্য ইনজুরির বাগড়া ছিল, বিপিএলও খেলেছেন তিনি।

এই উত্থান-পতনের কারণেই একটা মিডিওকার ক্যারিয়ারে থমকে গেছেন সৌম্য। সমস্ত সম্ভাবনা থাকলেও সৌম্য হতে পারেননি গ্রেট ব্যাটার। ক্যারিয়ারে স্বল্প সময় বাকি। এতটুকুও যদি তিনি ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারেন তবে হয়ত দিনশেষে আক্ষেপের সুর বেজে উঠবে না, তার নামের সাথে।

Share via
Copy link