ব্যক্তিগত অর্জনের জন্যই এত আয়োজন!

তারা স্বাভাবিকভাবেই আর জয়ের জন্যে খেললেন না। ৩৭ ওভারে ২৯৬ করা তো আর সহজ কথা নয়। পরাজয়ের চাইতে তাই ড্র-ই শ্রেয়। তবে সুযোগ থাকলে জয়ের অন্বেষণে পরাজয় প্রাপ্তি সর্বোত্তম।

দলের সবার মধ্যে কি অদ্ভুত মেলবন্ধন। ম্যাচের ফলাফল নেই কারও ভাবনাতে। সবাই অপেক্ষায় কখন নাজমুল হোসেন শান্ত তুলে নিবেন সেঞ্চুরি। দল হিসেবে ম্যাচ জিতে কি আর এমন হবে! বরং শান্তর সেঞ্চুরি হলেই না কলামের পর কলাম জুড়ে লেখা হবে বীরত্বের স্তুতিগাঁথা।

গল টেস্টের পঞ্চম দিনে এলো বৃষ্টির বাঁধা। বাংলাদেশের সমর্থকরা সকলেই হয়ত অপেক্ষমান, বৃষ্টির পর ইনিংস ঘোষণা করে দেবে বাংলাদেশ দল। কিন্তু না, সবাইকে অবাক করে দিয়ে বাংলাদেশ ফের ব্যাটিংয়ে নামে। তখন শান্তর ব্যক্তিগত রান ৮৯। সেঞ্চুরি করতে প্রয়োজন আরও ১১ রান।

এরপর লিটন দাস নামলেন শান্তর সঙ্গী হয়ে। ফিরে গেলেন লিটন। এরপর এলেন জাকের আলী অনিক, তিনিও টিকলেন না বেশিক্ষণ। বাংলাদেশের পরিকল্পনা হয়ত ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরের কোন লক্ষ্য। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে শান্তদের পরিকল্পনা হয়েছে স্পষ্ট।

কোন তাড়াহুড়ো নেই। এ যেন টেস্টের প্রথম দিন! হেলেদুলে শান্তরা ব্যাট চালালেন। ধীর লয়ে সেঞ্চুরির দিকে এগোলেন শান্ত। একেবারে মাটি কামড়ে ধরে যোগ্য সঙ্গই দিয়ে গেলেন নাঈম হাসান। এই ধারাতে কেটে যায় আরও দশ ওভার।

গলের উইকেটে তখন হয়ে উঠেছে ভয়ংকর। পঞ্চম দিনে বোলারদের জন্যে দারুণ সহায়। বাংলাদেশ দলের কাছে সুযোগ ছিল, জয়ের জন্যে চেষ্টা করার। কিন্তু সেটার চাইতে দলের কাছে মুখ্য হয়ে উঠল শান্তর সেঞ্চুরি! কি অদ্ভুত! যতক্ষণ অবধি সেঞ্চুরি হয়নি শান্তর, ততক্ষণ অবধি স্লথ ছিল রানের গতি।

কিন্তু তিন অংকের সেই ম্যাজিক্যাল ফিগার ছোঁয়ার পর শান্ত হাতখুলে খেললেন বটে। দলীয় লিডকে ৩০০ রানের ঘরে নিয়ে যাওয়ার প্রয়াস অবশেষে চোখে পড়ল। কিন্তু তাতে কি? ততক্ষণে তো সময় গড়িয়ে গেছে অনেকটুকু। তাছাড়া বাংলাদেশের দেওয়া ২৯৬ রানের টার্গেট তাড়া করার জন্যে শ্রীলঙ্কার হাতে তো পর্যাপ্ত সময়ও ছিল না বাকি।

তারা স্বাভাবিকভাবেই আর জয়ের জন্যে খেললেন না। ৩৭ ওভারে ২৯৬ করা তো আর সহজ কথা নয়। পরাজয়ের চাইতে তাই ড্র-ই শ্রেয়। তবে সুযোগ থাকলে জয়ের অন্বেষণে পরাজয় প্রাপ্তি সর্বোত্তম।

Share via
Copy link