বুনো উল্লাসে শন উইলিয়ামস ক্যারিয়ারের ছয় নম্বর সেঞ্চুরি উদযাপন করলেন। এটা শুধুই সেঞ্চুরি ছিল না, একটা লড়াই ছিল, বিপর্যস্ত দলকে একা হাতে টেনে তোলার চেষ্টা ছিল।
২০ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার, আরেকটু ছোট করে বললে ১২ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে খেলতে নেমেছেন নিজের ২১তম ম্যাচ। পরিসংখ্যানে তাকালে এই ম্যাচের আগে ২০ ম্যাচে করেছিলেন ১৬১৮ রান, গড় প্রায় ৪৫। জিম্বাবুয়ের টেস্ট ইতিহাসে গড়ের হিসেবে তাঁর আগে কেবল অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। যত বড় অর্জন ওই হিসেবে, ক্রিকেট টেবিলে আলোচনায় খুব কমই এসেছেন।
ব্যাট হাতে যখন ক্রিজে আসলেন, দলের উপর যেন চাপের পাহাড়। দুই উইকেট পড়ে গেছে মাত্র ২৩ রানের ব্যবধানে। তবে সবকিছু নিজের ভেতরে রাখলেন, ব্যাট দিয়ে নিজের কাজটা করে গেলেন।
একপ্রান্ত আগলে রাখলেন, তবে রানার চাকাটা ঠিকই গড়াতে থাকলো। নিজের সবটুকু অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ইনিংস গড়তে থাকেন। ব্যক্তিগত খাতায় ফিফটি হলো, তবুও অবিচল রইলো তাঁর ব্যাট। ১২১ বলে তুলে নিলেন নিজের ষষ্ঠ টেস্ট শতক। দলের ৬০ শতাংশ রানই তখন তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে।
উইলিয়ামস বিশ্বের নানা প্রান্তে খেলেছেন ৮টি ভিন্ন দলের বিপক্ষে—অস্ট্রেলিয়া, ভারত কিংবা পাকিস্তানের মতো দলের বিপক্ষে সুযোগটা হয়নি। তবে যাদের বিপক্ষে খেলেছেন, নিজের সেরাটা উজাড় করেই খেলেছেন।
ছোট ক্যারিয়ারের পরিসংখ্যান তাই তো শুধু সংখ্যা নয়, জিম্বাবুয়ের টেস্ট ইতিহাসের এক সংগ্রামী অধ্যায়—দারিদ্র্যতা, সংকট কিংবা সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে যে সংগ্রামটা ছিল নিজেকে মেলে ধরার।
যখনই দল বিপদে, তখনই ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে গেছেন। দাতে দাঁত চেপে চেষ্টা করেছেন যতটুকু সক্ষমতা আছে। আজকের এই সেঞ্চুরিটা হয়তো আর পাঁচটা সাধারণ সেঞ্চুরির মতো। তবে এটি যে একটা লড়াই ছিল, একজন ৩৮ পেরোনো এক ক্রিকেটারের শেষ না হওয়া গল্প ছিল।